বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনের সঙ্গে ঢাকার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ দরকার: তৌহিদ

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে মিয়ানমার হয়ে সংযোগ বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে উভয় দেশের পারস্পরিক লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব।’’

তিনি মিয়ানমারের স্থিতিশীলতা ও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টেকসই প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সরাসরি সংযোগ আমাদের জন্য অপরিহার্য, আর মিয়ানমার এই সংযোগের জন্য সবচেয়ে কার্যকর পথ হতে পারে।’’

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘চীন-দক্ষিণ এশিয়া সভ্যতা ও সংযোগ: ইতিহাস ও সমসাময়িক ইস্যু’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারসহ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমরা শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার আশা করি, যা আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে।’’

তিনি বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করেন। কানেক্টিভিটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে এই সংযোগ আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’

তৌহিদ আঞ্চলিক সংযোগকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যেমন জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এ যুগে কৌশলগত অংশীদারত্বের পাশাপাশি বন্ধুত্বের ভিত্তিতে চীনের সঙ্গে কাজ করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।’’

তিনি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘‘বিআরআই অভিন্ন সমৃদ্ধির প্রতীক, যা অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য করিডোর এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের বিনিময় নিশ্চিত করে আঞ্চলিক সংহতি ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’

উপদেষ্টা বাংলাদেশ-চীন অংশীদারিত্বের নতুন মাত্রা তুলে ধরে বলেন, ‘‘দুই দেশের সম্পর্ক ‘ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বে’ পরিণত হয়েছে, যা বিশ্বাস, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ওপর প্রতিষ্ঠিত।’’

তৌহিদ ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবিলায় সম্মিলিত পদক্ষেপের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘‘শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা অপরিহার্য।’’

তিনি ‘নতুন বাংলাদেশের’ চেতনার কথা উল্লেখ করে তরুণদের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘এই নতুন চেতনা অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও উদ্ভাবনী সমাজ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভূমিকা নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে।’

সম্মেলনটি চীন-সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর সোসিওকালচারাল স্টাডিজ (সিএসসিএসএস) এবং চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে আয়োজন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর আবদুল হান্নান চৌধুরী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

চীনের সঙ্গে ঢাকার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ দরকার: তৌহিদ

প্রকাশিত সময় : ১১:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে মিয়ানমার হয়ে সংযোগ বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে উভয় দেশের পারস্পরিক লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব।’’

তিনি মিয়ানমারের স্থিতিশীলতা ও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টেকসই প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সরাসরি সংযোগ আমাদের জন্য অপরিহার্য, আর মিয়ানমার এই সংযোগের জন্য সবচেয়ে কার্যকর পথ হতে পারে।’’

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘চীন-দক্ষিণ এশিয়া সভ্যতা ও সংযোগ: ইতিহাস ও সমসাময়িক ইস্যু’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারসহ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমরা শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার আশা করি, যা আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে।’’

তিনি বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করেন। কানেক্টিভিটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে এই সংযোগ আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’

তৌহিদ আঞ্চলিক সংযোগকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যেমন জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এ যুগে কৌশলগত অংশীদারত্বের পাশাপাশি বন্ধুত্বের ভিত্তিতে চীনের সঙ্গে কাজ করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।’’

তিনি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘‘বিআরআই অভিন্ন সমৃদ্ধির প্রতীক, যা অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য করিডোর এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের বিনিময় নিশ্চিত করে আঞ্চলিক সংহতি ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’

উপদেষ্টা বাংলাদেশ-চীন অংশীদারিত্বের নতুন মাত্রা তুলে ধরে বলেন, ‘‘দুই দেশের সম্পর্ক ‘ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বে’ পরিণত হয়েছে, যা বিশ্বাস, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ওপর প্রতিষ্ঠিত।’’

তৌহিদ ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবিলায় সম্মিলিত পদক্ষেপের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘‘শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা অপরিহার্য।’’

তিনি ‘নতুন বাংলাদেশের’ চেতনার কথা উল্লেখ করে তরুণদের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘এই নতুন চেতনা অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও উদ্ভাবনী সমাজ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভূমিকা নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে।’

সম্মেলনটি চীন-সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর সোসিওকালচারাল স্টাডিজ (সিএসসিএসএস) এবং চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে আয়োজন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর আবদুল হান্নান চৌধুরী।