মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে নতুন ভাসমান চৌকি বসিয়েছে ভারত

 

বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে দিল্লি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে এই নিরাপত্তা জোরদার করেছে বলে শনিবার (৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম হচ্ছে, ‘ইন্ডিয়া স্টেপস আপ সিকিউরিটি আফটার এনেক্সসেশন থ্রেট ফ্রম বাংলাদেশ’।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার ভারতের উত্তর-পূর্বাংশকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার হুমকি দেওয়ার পর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত।

যদিও গত ডিসেম্বরের মাঝের দিকের এই মন্তব্যের বিষয়ে ‘কড়া প্রতিবাদ’ জানিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকার কাছে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে গত ২০ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান।

দিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেশী বাংলাদেশের নেতাদের দায়িত্বশীল মন্তব্যের গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সেদিন রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, ‘দিল্লি সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রকাশ্য মন্তব্য করার সময় দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিতে চায়।’

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত অতিক্রমকারী নদীগুলোতে নতুন ভাসমান সীমান্ত চৌকি তৈরি করেছে।

বিএসএফের একটি সূত্র বলেছে, ‘পানিপথ সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সীমান্ত এলাকায় ২৪ ঘণ্টা টহল চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে অতিরিক্ত ভাসমান ফাঁড়ি অবশ্যই আমাদের সহায়তা করবে। এগুলো সময়ের প্রয়োজন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। পরে বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগ করে আসছে ভারত। এ নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।

দ্য টেলিগ্রাফের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ বলে জানিয়েছেন।

উপমহাদেশীয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কিভাবে পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে, জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, “ভারতের পুতুল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভুলে যাওয়া, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের রায়কে সম্মান জানানো, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং সমান মর্যাদা ও অধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সীমান্তে নতুন ভাসমান চৌকি বসিয়েছে ভারত

প্রকাশিত সময় : ১০:৪৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

 

বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে দিল্লি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে এই নিরাপত্তা জোরদার করেছে বলে শনিবার (৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম হচ্ছে, ‘ইন্ডিয়া স্টেপস আপ সিকিউরিটি আফটার এনেক্সসেশন থ্রেট ফ্রম বাংলাদেশ’।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার ভারতের উত্তর-পূর্বাংশকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার হুমকি দেওয়ার পর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত।

যদিও গত ডিসেম্বরের মাঝের দিকের এই মন্তব্যের বিষয়ে ‘কড়া প্রতিবাদ’ জানিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকার কাছে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে গত ২০ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান।

দিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেশী বাংলাদেশের নেতাদের দায়িত্বশীল মন্তব্যের গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সেদিন রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, ‘দিল্লি সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রকাশ্য মন্তব্য করার সময় দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিতে চায়।’

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত অতিক্রমকারী নদীগুলোতে নতুন ভাসমান সীমান্ত চৌকি তৈরি করেছে।

বিএসএফের একটি সূত্র বলেছে, ‘পানিপথ সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সীমান্ত এলাকায় ২৪ ঘণ্টা টহল চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে অতিরিক্ত ভাসমান ফাঁড়ি অবশ্যই আমাদের সহায়তা করবে। এগুলো সময়ের প্রয়োজন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। পরে বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগ করে আসছে ভারত। এ নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।

দ্য টেলিগ্রাফের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ বলে জানিয়েছেন।

উপমহাদেশীয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কিভাবে পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে, জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, “ভারতের পুতুল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভুলে যাওয়া, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের রায়কে সম্মান জানানো, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং সমান মর্যাদা ও অধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।”