বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে  পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ২

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে পৈতৃক সম্পদ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার (৫জানুয়ারী) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কুমড়াকাপন (কুমারপাড়া) গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত দুই ভাই কুমারপাড়া গ্রামে মৃত প্রদেশ চন্দ্র পালের ছেলে রাধা গোবিন্দ পাল (৪৫) ও পান গোবিন্দ পাল (৪৯)। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন রাধা গোবিন্দ পাল ও প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে আসেন পান গোবিন্দ পাল ।
 জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে কুমারপাড়া এলাকায় পৈতিক সম্পদ নিয়ে মৃত প্রদেশ চন্দ্র পালের ছেলে পান গোবিন্দ পাল ও রাধা গোবিন্দ পাল এর মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমস্যা হয়ে আসছে। রোববার দুপুরে রাধা গোবিন্দ পাল এর জায়গায় গাছ রোপন করতে গেলে হামলা ও বাধা প্রদান করেন রাধার বড় ভাই পান গোবিন্দ পাল ও তার স্ত্রী। এসময় দু’পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হলে এলাকায় আতংক বিরাজ করে।
সংঘর্ষে দুই ভাই গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত পান গোবিন্দ পাল স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়ি চলে গেলেও গুরুতর অবস্থা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন রাধা গোবিন্দ পাল। তার আগে গত বছরে জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সামাজিক ভাবে বিষয়টি সমাধান করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মৃত প্রদেশ চন্দ্র পালের ছেলে আহত রাধা গোবিন্দ জানান, ‘বাড়িতে আমার অংশের রাস্তায় পাশে কাজ করছিলাম। এমতাবস্থায় আমার বড় ভাই পান গোবিন্দ পাল ও তার স্ত্রী শিউলি রানী পাল এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি কিছু বললে আমার ভাই ও তার স্ত্রী আমাকে মারধর করেন। এসময় আমার ভাই আমাকে দেশীয় অস্র দা দিয়ে কুপ দিলে আমি মাটিতে পড়ে যাই তখন তার স্ত্রী শিউলি পাল এসে আমাকে লাটি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে দা ও লাটির আঘাত দৃশ্যমান রয়েছে। আমার শালা-চিৎকারে শুনু স্থানীয় এলাকার আশপাশের লোকজন এসে আমাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। আমি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমি সুষ্ট বিচার চাই। তবে এনিয়ে আমি কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে।’
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আমার বড়ভাই পান গোবিন্দ পাল আমাকে আমার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ দিতে চাচ্ছে না তখন আমি এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হলে তারা সালিশ বিচারের মাধ্যমে আমার পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করে দেন। সালিশ বিচারের পরেও সে আমার জায়গা ভোগ দখল করতে দেয়না। আজ অল্পের জন্যে বেঁচে গেছি নয়তো সে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলা হত।
এ বিষয়ে পান গোবিন্দ পাল ও তার স্ত্রী শিউলি পাল  বলেন, ‘আমার ভাই রাধা গোবিন্দ পাল আমাকে প্রাণে মারার জন্য দা ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে মারামারির বিষয়টি শুনেছি। রাধা গোবিন্দ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন, তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মৌলভীবাজারে  পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ২

প্রকাশিত সময় : ১০:৪৮:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে পৈতৃক সম্পদ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার (৫জানুয়ারী) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কুমড়াকাপন (কুমারপাড়া) গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত দুই ভাই কুমারপাড়া গ্রামে মৃত প্রদেশ চন্দ্র পালের ছেলে রাধা গোবিন্দ পাল (৪৫) ও পান গোবিন্দ পাল (৪৯)। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন রাধা গোবিন্দ পাল ও প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে আসেন পান গোবিন্দ পাল ।
 জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে কুমারপাড়া এলাকায় পৈতিক সম্পদ নিয়ে মৃত প্রদেশ চন্দ্র পালের ছেলে পান গোবিন্দ পাল ও রাধা গোবিন্দ পাল এর মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমস্যা হয়ে আসছে। রোববার দুপুরে রাধা গোবিন্দ পাল এর জায়গায় গাছ রোপন করতে গেলে হামলা ও বাধা প্রদান করেন রাধার বড় ভাই পান গোবিন্দ পাল ও তার স্ত্রী। এসময় দু’পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হলে এলাকায় আতংক বিরাজ করে।
সংঘর্ষে দুই ভাই গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত পান গোবিন্দ পাল স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়ি চলে গেলেও গুরুতর অবস্থা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন রাধা গোবিন্দ পাল। তার আগে গত বছরে জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সামাজিক ভাবে বিষয়টি সমাধান করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মৃত প্রদেশ চন্দ্র পালের ছেলে আহত রাধা গোবিন্দ জানান, ‘বাড়িতে আমার অংশের রাস্তায় পাশে কাজ করছিলাম। এমতাবস্থায় আমার বড় ভাই পান গোবিন্দ পাল ও তার স্ত্রী শিউলি রানী পাল এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি কিছু বললে আমার ভাই ও তার স্ত্রী আমাকে মারধর করেন। এসময় আমার ভাই আমাকে দেশীয় অস্র দা দিয়ে কুপ দিলে আমি মাটিতে পড়ে যাই তখন তার স্ত্রী শিউলি পাল এসে আমাকে লাটি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে দা ও লাটির আঘাত দৃশ্যমান রয়েছে। আমার শালা-চিৎকারে শুনু স্থানীয় এলাকার আশপাশের লোকজন এসে আমাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। আমি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমি সুষ্ট বিচার চাই। তবে এনিয়ে আমি কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে।’
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আমার বড়ভাই পান গোবিন্দ পাল আমাকে আমার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ দিতে চাচ্ছে না তখন আমি এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হলে তারা সালিশ বিচারের মাধ্যমে আমার পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করে দেন। সালিশ বিচারের পরেও সে আমার জায়গা ভোগ দখল করতে দেয়না। আজ অল্পের জন্যে বেঁচে গেছি নয়তো সে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলা হত।
এ বিষয়ে পান গোবিন্দ পাল ও তার স্ত্রী শিউলি পাল  বলেন, ‘আমার ভাই রাধা গোবিন্দ পাল আমাকে প্রাণে মারার জন্য দা ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে মারামারির বিষয়টি শুনেছি। রাধা গোবিন্দ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন, তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’