সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে ছিল যে দুই অভিযোগ

চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় খালাস পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। এতে করে ১৭ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকা এই রাজনীতিবিদের মুক্তিতে আর বাধা থাকল না। আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য জানান বাবরের আইনজীবী শিশির মনির।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘আপনারা জানেন, উনার (লুৎফুজ্জামান বাবর) বিরুদ্ধে দুইটা অভিযোগ এনেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষ। একটা অভিযোগে বলেছেন যে, উনার কথায় পাঁচজন ব্যক্তিকে অ্যারেস্ট করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। উনি ইনফ্লুয়েন্স করে ছেড়েছেন। দ্বিতীয় অভিযোগ উনার বিরুদ্ধে আনা হয়েছেছিল যে, তিনি এই মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছিলেন। একটা ডিপার্টমেন্টাল তদন্ত হয়েছিল, তৎকালীন সচিবের নেতৃত্বে। ওই তদন্তকে তিনি বাধাগ্রস্ত করেছেন।’

অভিযোগের সতত্য না পাওয়ায় বাবরকে আদালত খালাস দিয়েছেন জানিয়ে শিশির মনির আরও বলেন, ‘উনাকে (লুৎফুজ্জামান বাবর) যে গ্রাউন্ডে আদালত খালাস দিয়েছেন….। এই দুটোর (অভিযোগ) ব্যাপারে আদালতের ফাইন্ডিং হলো, যে পাঁচজনকে উনার ইনফ্লুয়েন্সে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেছিল, আমরা রেকর্ড থেকে দেখিয়েছি, পাঁচজনই আসলে জেলে ছিল। কাউকে আসলে ছাড়া হয় নাই। আর উনার ইনফ্লুয়েন্সে তদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন করা হয়েছিল, এই মর্মে অভিযোগ আনা হয়েছে, সাক্ষীরা এসে পরস্পর বিপরীতধর্মী বক্তব্য দিয়ে বলেছেন যে, তদন্ত যে রিপোর্ট সাবমিট করেছেন, একজন জানেন, আরেকজন জানেনি না—যারা নাকি ওই কমিটির মেম্বার ছিলেন। ফলে এই কনট্রাডিকটরি রিপোর্টগুলো তিনি (আদালত) আমলে নিয়েছেন। পাঁচজনকে ছেড়ে দিয়েছেন, এই কথারও কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় নাই।’

জেলে থেকে বাবর কী জানিয়েছেন, তা উল্লেখ করে শিশির মনির বলেন, ‘তিনি (বাবর) জেল থেকে বলেছেন যে, তাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করার প্রধান কারণ ছিল, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিশ্বস্ত একজন মন্ত্রী ছিলেন। তিনি আমাকে জেল থেকে বলেছেন, সবকিছুর কেন্দ্র বিন্দু ছিল, তিনি খুব অ্যাকটিভ মিনিস্টার ছিলেন, সব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাকে অনেক বেশি কাজ করার ক্ষেত্রে রিলাই করতেন এবং নির্ভর করতেন। এই নির্ভরতার কারণেই তার জীবনে এই দুর্যোগ নেমে এসেছিল।’

মামলা থেকে খালাসের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছার পরই লুৎফুজ্জামান বাবর অতি দ্রুত মুক্তি পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তার আইনজীবী শিশির মনির।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে ছিল যে দুই অভিযোগ

প্রকাশিত সময় : ১০:০১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় খালাস পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। এতে করে ১৭ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকা এই রাজনীতিবিদের মুক্তিতে আর বাধা থাকল না। আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য জানান বাবরের আইনজীবী শিশির মনির।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘আপনারা জানেন, উনার (লুৎফুজ্জামান বাবর) বিরুদ্ধে দুইটা অভিযোগ এনেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষ। একটা অভিযোগে বলেছেন যে, উনার কথায় পাঁচজন ব্যক্তিকে অ্যারেস্ট করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। উনি ইনফ্লুয়েন্স করে ছেড়েছেন। দ্বিতীয় অভিযোগ উনার বিরুদ্ধে আনা হয়েছেছিল যে, তিনি এই মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছিলেন। একটা ডিপার্টমেন্টাল তদন্ত হয়েছিল, তৎকালীন সচিবের নেতৃত্বে। ওই তদন্তকে তিনি বাধাগ্রস্ত করেছেন।’

অভিযোগের সতত্য না পাওয়ায় বাবরকে আদালত খালাস দিয়েছেন জানিয়ে শিশির মনির আরও বলেন, ‘উনাকে (লুৎফুজ্জামান বাবর) যে গ্রাউন্ডে আদালত খালাস দিয়েছেন….। এই দুটোর (অভিযোগ) ব্যাপারে আদালতের ফাইন্ডিং হলো, যে পাঁচজনকে উনার ইনফ্লুয়েন্সে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেছিল, আমরা রেকর্ড থেকে দেখিয়েছি, পাঁচজনই আসলে জেলে ছিল। কাউকে আসলে ছাড়া হয় নাই। আর উনার ইনফ্লুয়েন্সে তদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন করা হয়েছিল, এই মর্মে অভিযোগ আনা হয়েছে, সাক্ষীরা এসে পরস্পর বিপরীতধর্মী বক্তব্য দিয়ে বলেছেন যে, তদন্ত যে রিপোর্ট সাবমিট করেছেন, একজন জানেন, আরেকজন জানেনি না—যারা নাকি ওই কমিটির মেম্বার ছিলেন। ফলে এই কনট্রাডিকটরি রিপোর্টগুলো তিনি (আদালত) আমলে নিয়েছেন। পাঁচজনকে ছেড়ে দিয়েছেন, এই কথারও কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় নাই।’

জেলে থেকে বাবর কী জানিয়েছেন, তা উল্লেখ করে শিশির মনির বলেন, ‘তিনি (বাবর) জেল থেকে বলেছেন যে, তাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করার প্রধান কারণ ছিল, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিশ্বস্ত একজন মন্ত্রী ছিলেন। তিনি আমাকে জেল থেকে বলেছেন, সবকিছুর কেন্দ্র বিন্দু ছিল, তিনি খুব অ্যাকটিভ মিনিস্টার ছিলেন, সব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাকে অনেক বেশি কাজ করার ক্ষেত্রে রিলাই করতেন এবং নির্ভর করতেন। এই নির্ভরতার কারণেই তার জীবনে এই দুর্যোগ নেমে এসেছিল।’

মামলা থেকে খালাসের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছার পরই লুৎফুজ্জামান বাবর অতি দ্রুত মুক্তি পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তার আইনজীবী শিশির মনির।