মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের ডাক প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থাৎ ইনক্লুসিভ সমাজ গঠনের ডাক দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দোষীদের শাস্তি দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ভুল করা মানুষদের শুধরে নিয়ে সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান রেখেছেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “আমরা অন্যায় করব না। যারা আইন ভঙ্গ করেছে, তারা শাস্তি পাবে। কিন্তু যারা করেনি, তাদের আমরা বলব যে তুমি আমাকে কষ্ট দিয়েছ, কিন্তু আমি তোমাকে দেব না। এই দেশ তোমারও, এই দেশ আমাদের সবার। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান।”

মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে এক বৈঠকে দেশবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানান। এসময় তিনি ঘোষণা দেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

জুলাই বিপ্লবের ২১টি শহীদের পরিবার এবং সাতজন আহত ব্যক্তির হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ইনক্লুসিভ সমাজ গঠনের বিষয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “যারা ভুল করেছে তাদের সঠিক পথে আনতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে যে, তারা যা করেছে তা ভুল ছিল।”

“তাদের বোঝাতে হবে যে তাদের পথ ভুল এবং তারা যা করেছে তার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। এভাবেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। স্থায়ী সংঘাত আমাদের কেবল পিছিয়ে দেবে।”

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসন ও হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটানো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিরোধ মীমাংসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সংঘাত কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতার ওপর। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে এ (অবস্থা) থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশাপাশি দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, “সব হত্যাকাণ্ড ও গুমের তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।”

“বিচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তা যেন ন্যায়সঙ্গত হয়, যেন অন্যায় না হয়। আমরা এই সংগ্রাম করেছি, এই ত্যাগ স্বীকার করেছি; কারণ আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। যদি আমরা নিজেরাই অন্যায়ে জড়িয়ে পড়ি, তবে আমাদের ও তাদের মধ্যে তফাত কোথায়,” প্রশ্ন রেখে বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের ডাক প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত সময় : ১১:৪০:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থাৎ ইনক্লুসিভ সমাজ গঠনের ডাক দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দোষীদের শাস্তি দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ভুল করা মানুষদের শুধরে নিয়ে সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান রেখেছেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “আমরা অন্যায় করব না। যারা আইন ভঙ্গ করেছে, তারা শাস্তি পাবে। কিন্তু যারা করেনি, তাদের আমরা বলব যে তুমি আমাকে কষ্ট দিয়েছ, কিন্তু আমি তোমাকে দেব না। এই দেশ তোমারও, এই দেশ আমাদের সবার। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান।”

মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে এক বৈঠকে দেশবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানান। এসময় তিনি ঘোষণা দেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

জুলাই বিপ্লবের ২১টি শহীদের পরিবার এবং সাতজন আহত ব্যক্তির হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ইনক্লুসিভ সমাজ গঠনের বিষয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “যারা ভুল করেছে তাদের সঠিক পথে আনতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে যে, তারা যা করেছে তা ভুল ছিল।”

“তাদের বোঝাতে হবে যে তাদের পথ ভুল এবং তারা যা করেছে তার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। এভাবেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। স্থায়ী সংঘাত আমাদের কেবল পিছিয়ে দেবে।”

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসন ও হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটানো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিরোধ মীমাংসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সংঘাত কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতার ওপর। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে এ (অবস্থা) থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশাপাশি দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, “সব হত্যাকাণ্ড ও গুমের তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।”

“বিচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তা যেন ন্যায়সঙ্গত হয়, যেন অন্যায় না হয়। আমরা এই সংগ্রাম করেছি, এই ত্যাগ স্বীকার করেছি; কারণ আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। যদি আমরা নিজেরাই অন্যায়ে জড়িয়ে পড়ি, তবে আমাদের ও তাদের মধ্যে তফাত কোথায়,” প্রশ্ন রেখে বলেন প্রধান উপদেষ্টা।