সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে। ওই বিচারকের বিরুদ্ধে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ও অবিচারিক আচরণ, অযাচিত ও অশ্লীল মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি জানা গেছে।

প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনে বলা হয়েছে, “সম্প্রতি যোগদান করা ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম প্রতিনিয়ত জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অসৌজন্যমূলক, অবিচারিক, অযাচিত বক্তব্য প্রদান এবং বিচারপ্রার্থীদেরকে প্রকাশ্য আদালতে গাল-মন্দ, অশ্লীল বক্তব্য ও অবিচারিক আচরণ করেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র ও সাধারণ আইনজীবীদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বার অ্যাসোসিয়েশন ও বেঞ্চের মধ্যে আলোচনার অনুরোধ করা হয়। বিচারক নুরে আলম সাক্ষাত বা আলোচনার পদক্ষেপ না নিয়ে পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি এডিসি নাসির আহমেদ হাওলাদার ও এসি (প্রসিকিউশন) হাসান রাশেদ পরাগের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আদালতের এজলাস শুরু করেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি ওই আদালতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কোনো কর্মকর্তা বা কার্যকরী সদস্য কোনো মামলা বা জামিন শুনানি করেননি।”

“এমন আচরণের সংবাদ পেয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে বিচারক নুরে আলমের কাছে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চান। বিচারক নুরে আলম প্রথমেই বলেন, ‘আমি কি ঢাকা আইনজীবী সমিতির চাকরি করি? কেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাথে আমার কথা বলতে হবে। আমি চাকরি না করলেও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাকের সঙ্গে কথা বলব না।’ এসব বলে পুলিশকে আদেশ দেন, ওদেরকে বের করে দাও।”

“বিচারক নুরে আলম বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমূলক অশ্রাব্য ভাষা ও আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে উপস্থিত আইনজীবীদের উত্তেজিত করেন। তিনি মারমুখী হয়ে এসে গুলি করতে বললে কোর্টে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।”

আবেদনে আরো বলা হয়, “বিচারক নুরে আলম বিভিন্ন অসত্য তথ্য ও এজলাসের আংশিক ভিডিও বেআইনিভাবে যমুনা টিভির মাধ্যমে অপপ্রচার করে আইনজীবীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও বাংলাদেশের মানুষসহ সারা বিশ্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রয়াস চালাচ্ছে। তা বিচার বিভাগের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। বিচারক নুরে আলম বুধবার থেকে ছুটিতে আছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন

প্রকাশিত সময় : ০৫:০৬:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে। ওই বিচারকের বিরুদ্ধে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ও অবিচারিক আচরণ, অযাচিত ও অশ্লীল মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি জানা গেছে।

প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনে বলা হয়েছে, “সম্প্রতি যোগদান করা ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম প্রতিনিয়ত জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অসৌজন্যমূলক, অবিচারিক, অযাচিত বক্তব্য প্রদান এবং বিচারপ্রার্থীদেরকে প্রকাশ্য আদালতে গাল-মন্দ, অশ্লীল বক্তব্য ও অবিচারিক আচরণ করেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র ও সাধারণ আইনজীবীদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বার অ্যাসোসিয়েশন ও বেঞ্চের মধ্যে আলোচনার অনুরোধ করা হয়। বিচারক নুরে আলম সাক্ষাত বা আলোচনার পদক্ষেপ না নিয়ে পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি এডিসি নাসির আহমেদ হাওলাদার ও এসি (প্রসিকিউশন) হাসান রাশেদ পরাগের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আদালতের এজলাস শুরু করেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি ওই আদালতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কোনো কর্মকর্তা বা কার্যকরী সদস্য কোনো মামলা বা জামিন শুনানি করেননি।”

“এমন আচরণের সংবাদ পেয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে বিচারক নুরে আলমের কাছে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চান। বিচারক নুরে আলম প্রথমেই বলেন, ‘আমি কি ঢাকা আইনজীবী সমিতির চাকরি করি? কেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাথে আমার কথা বলতে হবে। আমি চাকরি না করলেও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাকের সঙ্গে কথা বলব না।’ এসব বলে পুলিশকে আদেশ দেন, ওদেরকে বের করে দাও।”

“বিচারক নুরে আলম বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমূলক অশ্রাব্য ভাষা ও আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে উপস্থিত আইনজীবীদের উত্তেজিত করেন। তিনি মারমুখী হয়ে এসে গুলি করতে বললে কোর্টে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।”

আবেদনে আরো বলা হয়, “বিচারক নুরে আলম বিভিন্ন অসত্য তথ্য ও এজলাসের আংশিক ভিডিও বেআইনিভাবে যমুনা টিভির মাধ্যমে অপপ্রচার করে আইনজীবীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও বাংলাদেশের মানুষসহ সারা বিশ্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রয়াস চালাচ্ছে। তা বিচার বিভাগের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। বিচারক নুরে আলম বুধবার থেকে ছুটিতে আছেন।