সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রেমিট্যান্স ছাড়াল ২৯ বিলিয়ন ডলার

ঈদুল আজহার পরও প্রবাসী আয় স্বাভাবিক গতিতেই রয়েছে। জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রবাসীরা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার (২০০ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা এক অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অর্থ পাচার কমে আসা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের উচ্চমূল্য পাওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ প্রেরণে আগ্রহী হয়েছেন। এ কারণেই ভিন্ন পথে ঝুঁকি নিয়ে অর্থ প্রেরণের প্রবণতা কমে গিয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে। আর রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে।

তথ্য অনুসারে, ঈদুল আজহার আগে মে মাসে প্রায় ২৯৭ কোটি ডলার (২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স এসেছে, যা একক মাস হিসেবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার (৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রবাসী আয়ের এ ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্যণীয়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথম মাস আগস্টে ২২২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা পরবর্তী প্রতিটি মাসে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার ও মেতে ২৯৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে।

পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস ২১ দিনে (১ জুলাই-২১ জুন) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৯৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার (২৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন), যা আগের যেকোনো অর্থবছরের তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে, ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। এর পরের দুই অর্থবছরে ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে রেমিট্যান্স আসে। আর গত অর্থবছরে আসে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

এদিকে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে, যা ১৫ জুন ছিল ২০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে, যা ১৫ জুন ছিল ২৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রেমিট্যান্স ছাড়াল ২৯ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত সময় : ১০:৪৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

ঈদুল আজহার পরও প্রবাসী আয় স্বাভাবিক গতিতেই রয়েছে। জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রবাসীরা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার (২০০ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা এক অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অর্থ পাচার কমে আসা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের উচ্চমূল্য পাওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ প্রেরণে আগ্রহী হয়েছেন। এ কারণেই ভিন্ন পথে ঝুঁকি নিয়ে অর্থ প্রেরণের প্রবণতা কমে গিয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে। আর রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে।

তথ্য অনুসারে, ঈদুল আজহার আগে মে মাসে প্রায় ২৯৭ কোটি ডলার (২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স এসেছে, যা একক মাস হিসেবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার (৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রবাসী আয়ের এ ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্যণীয়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথম মাস আগস্টে ২২২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা পরবর্তী প্রতিটি মাসে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার ও মেতে ২৯৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে।

পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস ২১ দিনে (১ জুলাই-২১ জুন) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৯৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার (২৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন), যা আগের যেকোনো অর্থবছরের তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে, ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। এর পরের দুই অর্থবছরে ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে রেমিট্যান্স আসে। আর গত অর্থবছরে আসে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

এদিকে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে, যা ১৫ জুন ছিল ২০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে, যা ১৫ জুন ছিল ২৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার।