গত বছর জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ এবং রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার মনিরুজ্জামানসহ ২৬ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ সোমবার মামলার শুনানিতে আদালতে আবু সাঈদকে গুলিবিদ্ধ করার ভিডিওচিত্র উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রধান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আদালতের সামনে পড়ে শোনান।
আলোচনার পর তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
এ মামলার চার আসামি এরই মধ্যে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তাঁরা হলেন—পুলিশ সদস্য আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইমরান চৌধুরী।
২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। সেদিন নিরস্ত্র অবস্থায় দু’হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা এই তরুণকে গুলি করা হয়, যার ভিডিও ফুটেজ দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশের মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়।
সেই ঘটনা দেশব্যাপী তীব্র গণবিক্ষোভের জন্ম দেয়। শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও সাধারণ নাগরিকেরা রাস্তায় নেমে আসেন। এই বিক্ষোভ ক্রমেই রূপ নেয় এক সর্বাত্মক গণ-আন্দোলনে, যার ফলশ্রুতিতে পতন ঘটে দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন সরকারের।
অবশেষে গণচাপের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম ১৬ বছরের একচ্ছত্র শাসনের সমাপ্তি ঘটে ওইদিন।
শহীদ আবু সাঈদ হয়ে ওঠেন সেই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম প্রতীক। তাঁর আত্মত্যাগ আজও স্মরণীয় হয়ে আছে লাখো মানুষের কাছে—গণতন্ত্র, সাহস ও ন্যায়ের এক অবিচল প্রতিচ্ছবি হয়ে।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 

























