শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

ফরিদপুরের মধুখালীতে শাহ মো. রাজন (২৮) নামের এক যুবককে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও মামলার প্রমাণ লোপাটের দায়ে পাঁচজনকে আরও সাত বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত।

রায় ঘোষণার সময় আসামি ফরিদপুর চিনিকল শ্রমজীবী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মির্জা মাজাহারুল ইসলাম মিলন, মো. আরমান হোসেন, মো. মামুন শেখ ও ইলিয়াছ মৃধা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আরেক আসামি আছাদ শেখ পলাতক। পরে চার আসামিকে পুলিশ পাহারায় আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। সবার বাড়ি মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিকেলে মধুখালী উপজেলার রফিকুল ইসলামের ছেলে রাজন (২৮) মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। চার দিন পর মোটরসাইকেলটি তারাপুর শ্মশানঘাটসংলগ্ন মধুমতী নদীতে পায় জেলেরা। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন মামুনের বাড়িতে গিয়ে ঘর তল্লাশি করে তার প্যান্টের পকেট থেকে রাজনের মোবাইল ফোন জব্দ করে। পরে ফোনকলের তালিকার সূত্র ধরে আরমানকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরমান হোসেন স্বীকার করে বলেন, ‘রাজনকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মামুনের সহায়তায় কৌশলে কুড়ানিয়ার চর এলাকায় একটি বাগানে ডেকে নেন। সেখানে পাঁচ-ছয়জন মিলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ বাগানের মাটির নিচে চাপা দিয়া রাখেন। পরে পুলিশ মাটি খুঁড়ে রাজনের লাশ উত্তোলন করে।’

এ ঘটনায় রাজনের মা জ্যোৎস্না বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ‘দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালতের বিচারক রাজন হত্যা মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এর মধ্যে একজন পলাতক রয়েছেন। অন্যরা আদালতে হাজির ছিলেন। রাজন হত্যা মামলায় আমরা আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেয়েছি।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ফরিদপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত সময় : ০৮:০০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

ফরিদপুরের মধুখালীতে শাহ মো. রাজন (২৮) নামের এক যুবককে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও মামলার প্রমাণ লোপাটের দায়ে পাঁচজনকে আরও সাত বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত।

রায় ঘোষণার সময় আসামি ফরিদপুর চিনিকল শ্রমজীবী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মির্জা মাজাহারুল ইসলাম মিলন, মো. আরমান হোসেন, মো. মামুন শেখ ও ইলিয়াছ মৃধা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আরেক আসামি আছাদ শেখ পলাতক। পরে চার আসামিকে পুলিশ পাহারায় আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। সবার বাড়ি মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিকেলে মধুখালী উপজেলার রফিকুল ইসলামের ছেলে রাজন (২৮) মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। চার দিন পর মোটরসাইকেলটি তারাপুর শ্মশানঘাটসংলগ্ন মধুমতী নদীতে পায় জেলেরা। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন মামুনের বাড়িতে গিয়ে ঘর তল্লাশি করে তার প্যান্টের পকেট থেকে রাজনের মোবাইল ফোন জব্দ করে। পরে ফোনকলের তালিকার সূত্র ধরে আরমানকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরমান হোসেন স্বীকার করে বলেন, ‘রাজনকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মামুনের সহায়তায় কৌশলে কুড়ানিয়ার চর এলাকায় একটি বাগানে ডেকে নেন। সেখানে পাঁচ-ছয়জন মিলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ বাগানের মাটির নিচে চাপা দিয়া রাখেন। পরে পুলিশ মাটি খুঁড়ে রাজনের লাশ উত্তোলন করে।’

এ ঘটনায় রাজনের মা জ্যোৎস্না বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ‘দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালতের বিচারক রাজন হত্যা মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এর মধ্যে একজন পলাতক রয়েছেন। অন্যরা আদালতে হাজির ছিলেন। রাজন হত্যা মামলায় আমরা আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেয়েছি।’