বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় চার হত্যা মামলায় আসামি ৫৪০০

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাত ৫ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

সংঘর্ষ ও সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন: শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (২৭), টুঙ্গিপাড়ার সোহেল রানা মোল্লা (৩০), বিসিক এলাকার রমজান কাজী (১৭), সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার বেপারীপাড়ার ইমন তালুকদার (১৭), শহরের থানা পাড়ার রমজান মুন্সি (৩৫)।

এর মধ্যে গত ১৮ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল শনিবার রাতে এসব মামলা করা হয়েছে। বাকি একজনের হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে মামলার কপি চাওয়া হলে এখনই দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ সদর থানা সূত্রে যানা যায়, দীপ্ত সাহা নিহতের ঘটনায় সদর থানার উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেন, সোহেল রানার নিহতের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ, রমজান কাজী নিহতের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক আইয়ুব আলী ও ইমন তালুকদার নিহতের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক শেখ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ চারটি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় প্রত্যেকটিতে অজ্ঞাত ১৪০০-১৫০০ জন এবং আরেকটি মামলায় অজ্ঞাত ৮০০-৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। চারটি হত্যা মামলায় মোট আসামির সংখ্যা পাঁচ হাজার ৪০০ জন।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘মামলার তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন হলে নিহতদের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ছাড়া শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলায় গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ৯ জন ও কোটালীপাড়া থানা ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত জেলায় মোট গ্রেফতারের সংখ্যা ৩২১ জন।’

গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই আইয়ুব হোসেন বাদী হয়ে কিশোর রমজান কাজী হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন।

এ ছাড়া দীপ্ত সাহার (২৭) মৃত্যুর ঘটনায় সদর থানার এসআই শামীম হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত এক হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

সদর থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে সোহেল রানা মোল্লা (৩০) হত্যার ঘটনায় মামলা করেন।

একইদিন লঞ্চ ঘাট এলাকার পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগসহ দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে ইমন তালুকদার (১৭) নিহত হ্ওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা করেছেন এসআই শেখ মিজানুর রহমান। এই দুটি মামলাতে তিন হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, গাছ ফেলে সড়ক অবরোধের ঘটনায় এ পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট আসামি তিন হাজার আটজন। এরমধ্যে এজাহারনামীয় আসামি ৩৫৮ জন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় চার হত্যা মামলায় আসামি ৫৪০০

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাত ৫ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

সংঘর্ষ ও সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন: শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (২৭), টুঙ্গিপাড়ার সোহেল রানা মোল্লা (৩০), বিসিক এলাকার রমজান কাজী (১৭), সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার বেপারীপাড়ার ইমন তালুকদার (১৭), শহরের থানা পাড়ার রমজান মুন্সি (৩৫)।

এর মধ্যে গত ১৮ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল শনিবার রাতে এসব মামলা করা হয়েছে। বাকি একজনের হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে মামলার কপি চাওয়া হলে এখনই দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ সদর থানা সূত্রে যানা যায়, দীপ্ত সাহা নিহতের ঘটনায় সদর থানার উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেন, সোহেল রানার নিহতের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ, রমজান কাজী নিহতের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক আইয়ুব আলী ও ইমন তালুকদার নিহতের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক শেখ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ চারটি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় প্রত্যেকটিতে অজ্ঞাত ১৪০০-১৫০০ জন এবং আরেকটি মামলায় অজ্ঞাত ৮০০-৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। চারটি হত্যা মামলায় মোট আসামির সংখ্যা পাঁচ হাজার ৪০০ জন।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘মামলার তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন হলে নিহতদের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ছাড়া শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলায় গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ৯ জন ও কোটালীপাড়া থানা ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত জেলায় মোট গ্রেফতারের সংখ্যা ৩২১ জন।’

গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই আইয়ুব হোসেন বাদী হয়ে কিশোর রমজান কাজী হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন।

এ ছাড়া দীপ্ত সাহার (২৭) মৃত্যুর ঘটনায় সদর থানার এসআই শামীম হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত এক হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

সদর থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে সোহেল রানা মোল্লা (৩০) হত্যার ঘটনায় মামলা করেন।

একইদিন লঞ্চ ঘাট এলাকার পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগসহ দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে ইমন তালুকদার (১৭) নিহত হ্ওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা করেছেন এসআই শেখ মিজানুর রহমান। এই দুটি মামলাতে তিন হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, গাছ ফেলে সড়ক অবরোধের ঘটনায় এ পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট আসামি তিন হাজার আটজন। এরমধ্যে এজাহারনামীয় আসামি ৩৫৮ জন।