বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনায় উদ্ধার নবজাতককে দত্তক নিতে ১৫ আবেদন

খুলনায় গর্ভধারিনীর ফেলে দেওয়া নারী ছেঁড়া ধনকে বুকে জড়িয়ে নিতে ১৫ জন দম্পতি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। আবেদন করা যাবে আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত। ফুটফুটে সেই নবজাতক খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে, আজ মঙ্গলবারই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নবজাতকটির অভিভাবক নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে। তবে, অভিভাবক নির্ধারণ সম্ভব না হলে আপাতত ‘ছোটমনি’ নিবাসেই ঠিকানা হবে তার।

এর আগে রবিবার (২৭ জুলাই) খুলনার ফুলতলা উপজেলার একটি সড়কের পাশের ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। জন্মের পরপরই কে বা কারা তাকে ফেলে যায় সেখানে। উপজেলা প্রশাসনের হাত ঘুরে পরে তার স্থান হয় খুলনা মেডিকেলে।

ফেসবুকে ফুটফুটে শিশুটির ছবি ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তারপর থেকে শিশুটিকে এক নজর দেখতে হাসপাতালে ভিড় করেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকেই আসছেন শিশুটিকে দত্তক নিতে।

পরিচয়হীন এই মেয়ে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। আবেদন করার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন আরও কয়েকজন। জটিলতা এড়াতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আগ্রহীদের জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. ফররুখ আহাম্মদ জানান, শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। আজ মঙ্গলবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা ও ফুলতলা উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবিদা আফরিন বলেন, “শিশুটির দায়িত্ব নিতে এখন পর্যন্ত ১৫ জন আবেদন করেছেন। আবেদনগুলো নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে শিশুটি খুলনার মহেশ্বরপাশায় ‘ছোটমনি’ নিবাসে থাকবে।”

ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেল্লাল হোসেন বলেন, “নবজাতক উদ্ধারের পর আশপাশে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত বাবা-মায়ের বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কেউ পরিচয় দাবি করে যোগাযোগও করেনি।”

উল্লেখ্য, রবিবার ভোরে ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নের মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় সড়কের পাশ থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ আসছিল। শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। খবর পেয়ে সেখানে যান ইউএনও তাসনীম জাহানসহ সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। পরে শিশুটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

খুলনায় উদ্ধার নবজাতককে দত্তক নিতে ১৫ আবেদন

প্রকাশিত সময় : ১০:৩২:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

খুলনায় গর্ভধারিনীর ফেলে দেওয়া নারী ছেঁড়া ধনকে বুকে জড়িয়ে নিতে ১৫ জন দম্পতি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। আবেদন করা যাবে আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত। ফুটফুটে সেই নবজাতক খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে, আজ মঙ্গলবারই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নবজাতকটির অভিভাবক নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে। তবে, অভিভাবক নির্ধারণ সম্ভব না হলে আপাতত ‘ছোটমনি’ নিবাসেই ঠিকানা হবে তার।

এর আগে রবিবার (২৭ জুলাই) খুলনার ফুলতলা উপজেলার একটি সড়কের পাশের ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। জন্মের পরপরই কে বা কারা তাকে ফেলে যায় সেখানে। উপজেলা প্রশাসনের হাত ঘুরে পরে তার স্থান হয় খুলনা মেডিকেলে।

ফেসবুকে ফুটফুটে শিশুটির ছবি ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তারপর থেকে শিশুটিকে এক নজর দেখতে হাসপাতালে ভিড় করেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকেই আসছেন শিশুটিকে দত্তক নিতে।

পরিচয়হীন এই মেয়ে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। আবেদন করার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন আরও কয়েকজন। জটিলতা এড়াতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আগ্রহীদের জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. ফররুখ আহাম্মদ জানান, শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। আজ মঙ্গলবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা ও ফুলতলা উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবিদা আফরিন বলেন, “শিশুটির দায়িত্ব নিতে এখন পর্যন্ত ১৫ জন আবেদন করেছেন। আবেদনগুলো নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে শিশুটি খুলনার মহেশ্বরপাশায় ‘ছোটমনি’ নিবাসে থাকবে।”

ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেল্লাল হোসেন বলেন, “নবজাতক উদ্ধারের পর আশপাশে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত বাবা-মায়ের বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কেউ পরিচয় দাবি করে যোগাযোগও করেনি।”

উল্লেখ্য, রবিবার ভোরে ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নের মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় সড়কের পাশ থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ আসছিল। শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। খবর পেয়ে সেখানে যান ইউএনও তাসনীম জাহানসহ সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। পরে শিশুটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।