সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা, জামায়াতের পদ থেকে অব্যাহতি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা মডেল কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ফাইলে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও শামীম মিঞার স্বাক্ষর ‘স্ক্যান করে সংযুক্ত’ করার অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীর বিরুদ্ধে।

অভিযোগে রয়েছে, ইউএনও শামীম মিঞার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করে তিনি ১৩টি নিয়োগ ফাইল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। ঘটনার পরপরই তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হওয়া হাতীবান্ধা মডেল কলেজে অধ্যক্ষের পদ নিয়ে চার জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। গত ১৩ মে হাছেন আলী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর তিনি কলেজের পক্ষ থেকে ১৩ জন নতুন নিয়োগ দেখিয়ে বেতন-ভাতার ফাইল শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠান। অভিযোগ রয়েছে, এসব ফাইলে ইউএনওর অনুমোদন দেখাতে তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে যুক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা বলেন, “আমি ওই নিয়োগ ফাইলগুলোতে স্বাক্ষর করিনি। আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহৃত হয়েছে।”

তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে এবং জবাব পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াত কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় হাছেন আলীকে উপজেলা আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার স্থলে সংগঠনের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবু তাহের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও অব্যাহতির কারণ জানাতে রাজি হননি। তবে দলের অন্য নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, হাছেন আলী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে হাছেন আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা, জামায়াতের পদ থেকে অব্যাহতি

প্রকাশিত সময় : ১১:০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা মডেল কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ফাইলে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও শামীম মিঞার স্বাক্ষর ‘স্ক্যান করে সংযুক্ত’ করার অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীর বিরুদ্ধে।

অভিযোগে রয়েছে, ইউএনও শামীম মিঞার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করে তিনি ১৩টি নিয়োগ ফাইল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। ঘটনার পরপরই তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হওয়া হাতীবান্ধা মডেল কলেজে অধ্যক্ষের পদ নিয়ে চার জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। গত ১৩ মে হাছেন আলী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর তিনি কলেজের পক্ষ থেকে ১৩ জন নতুন নিয়োগ দেখিয়ে বেতন-ভাতার ফাইল শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠান। অভিযোগ রয়েছে, এসব ফাইলে ইউএনওর অনুমোদন দেখাতে তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে যুক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা বলেন, “আমি ওই নিয়োগ ফাইলগুলোতে স্বাক্ষর করিনি। আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহৃত হয়েছে।”

তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে এবং জবাব পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াত কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় হাছেন আলীকে উপজেলা আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার স্থলে সংগঠনের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবু তাহের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও অব্যাহতির কারণ জানাতে রাজি হননি। তবে দলের অন্য নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, হাছেন আলী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে হাছেন আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।