সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক: ৩৬৭ সংস্কার প্রস্তাবের ৩৭টি বাস্তবায়িত

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৩৬৭টি প্রস্তাবকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। যার মধ্যে ৩৭টি সংস্কার প্রস্তাব এরই মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৩৮তম বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম জানান, এর আগে ১২১টি সংস্কার প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরো ২৪৬টি। সব মিলিয়ে এখন ৩৬৭টি সংস্কার প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

আশু বাস্তবায়নের তালিকায় নতুন যুক্ত হওয়া সংস্কার সুপারিশগুলোর মধ্যে শ্রম কমিশনের ৮২টি, নারী কমিশনের ৭১টি, স্থানীয় সরকার বিষয়ক ৩৭, স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনের ৩৩টি এবং গণমাধ্যম বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ২৩টি সুপারিশ রয়েছে। এছাড়া আরো ৩১৬টি সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য পর্যালোচনাধীন আছে।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের সুপারিশ করতে সরকার মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, সব কয়টি কমিশন তাদের সংস্কার সুপারিশ এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার সদ্যসমাপ্ত মালয়েশিয়া সফর সফল হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা সে দেশের শ্রমিকদের মতো সামাজিক সুরক্ষা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে, একইসঙ্গে বাংলাদেশি শ্রমিকরা বাংলায় তাদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে পারবে।

এটা একটা ল্যান্ডমার্ক ট্যুর ছিল দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তারক্ষী, কেয়ার গিভার ও বাংলাদেশের যারা সে দেশে পড়াশোনা করছে তাদের জন্য যথাযথ মর্যাদার চাকরির সুযোগ তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে। মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এর বাইরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ কাঠামো’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা আগে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)’ হিসেবে পরিচিত ছিল। এছাড়া ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মী পুনঃএকত্রীকরণ নীতি, ২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ, এ নীতির মাধ্যমে বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিবে সরকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক: ৩৬৭ সংস্কার প্রস্তাবের ৩৭টি বাস্তবায়িত

প্রকাশিত সময় : ১১:০৫:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৩৬৭টি প্রস্তাবকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। যার মধ্যে ৩৭টি সংস্কার প্রস্তাব এরই মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৩৮তম বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম জানান, এর আগে ১২১টি সংস্কার প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরো ২৪৬টি। সব মিলিয়ে এখন ৩৬৭টি সংস্কার প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

আশু বাস্তবায়নের তালিকায় নতুন যুক্ত হওয়া সংস্কার সুপারিশগুলোর মধ্যে শ্রম কমিশনের ৮২টি, নারী কমিশনের ৭১টি, স্থানীয় সরকার বিষয়ক ৩৭, স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনের ৩৩টি এবং গণমাধ্যম বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ২৩টি সুপারিশ রয়েছে। এছাড়া আরো ৩১৬টি সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য পর্যালোচনাধীন আছে।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের সুপারিশ করতে সরকার মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, সব কয়টি কমিশন তাদের সংস্কার সুপারিশ এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার সদ্যসমাপ্ত মালয়েশিয়া সফর সফল হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা সে দেশের শ্রমিকদের মতো সামাজিক সুরক্ষা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে, একইসঙ্গে বাংলাদেশি শ্রমিকরা বাংলায় তাদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে পারবে।

এটা একটা ল্যান্ডমার্ক ট্যুর ছিল দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তারক্ষী, কেয়ার গিভার ও বাংলাদেশের যারা সে দেশে পড়াশোনা করছে তাদের জন্য যথাযথ মর্যাদার চাকরির সুযোগ তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে। মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এর বাইরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ কাঠামো’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা আগে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)’ হিসেবে পরিচিত ছিল। এছাড়া ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মী পুনঃএকত্রীকরণ নীতি, ২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ, এ নীতির মাধ্যমে বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিবে সরকার।