বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার, ৭০ ট্রাক জব্দ

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটন এলাকা সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। অভিযানকালে প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০টি ট্রাকে থাকা প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে নদীতে পুনরায় ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে, বিএনপিপন্থি স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, যারা এই অবৈধ কাজে জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধার করা পাথরের অধিকাংশ ধলাই নদীতে পুনরায় ফেলে দেওয়ার কাজ চলছে, যাতে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ও পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। পাথর লুটের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সাদাপাথর এলাকায় প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচার করে আসছে। সম্প্রতি এই লুটপাটের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, ধলাই নদীর তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধভাবে উত্তোলিত সব পাথর উদ্ধার ও জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত অভিযান চলবে।

অভিযান প্রসঙ্গে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেছেন, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, মজুত বা পাচারে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চেকপোস্টে গতরাত থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। এ সময় প্রায় ৭০টি গাড়িতে সাদাপাথর এলাকার পাথর শনাক্ত হলে সেগুলো পুনরায় প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাকগুলো জব্দ করা হয়েছে।

পাথর লুটের ঘটনায় পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থেকে পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাথর প্রতিস্থাপনের বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেছেন, বুধবার রাতে ছয় সদস্যের একটি দল যৌথ বাহিনীর সহায়তায় বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে ফের পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথরসহ ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সিলেটে ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার, ৭০ ট্রাক জব্দ

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটন এলাকা সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। অভিযানকালে প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০টি ট্রাকে থাকা প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে নদীতে পুনরায় ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে, বিএনপিপন্থি স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, যারা এই অবৈধ কাজে জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধার করা পাথরের অধিকাংশ ধলাই নদীতে পুনরায় ফেলে দেওয়ার কাজ চলছে, যাতে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ও পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। পাথর লুটের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সাদাপাথর এলাকায় প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচার করে আসছে। সম্প্রতি এই লুটপাটের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, ধলাই নদীর তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধভাবে উত্তোলিত সব পাথর উদ্ধার ও জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত অভিযান চলবে।

অভিযান প্রসঙ্গে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেছেন, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, মজুত বা পাচারে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চেকপোস্টে গতরাত থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। এ সময় প্রায় ৭০টি গাড়িতে সাদাপাথর এলাকার পাথর শনাক্ত হলে সেগুলো পুনরায় প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাকগুলো জব্দ করা হয়েছে।

পাথর লুটের ঘটনায় পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থেকে পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাথর প্রতিস্থাপনের বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেছেন, বুধবার রাতে ছয় সদস্যের একটি দল যৌথ বাহিনীর সহায়তায় বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে ফের পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথরসহ ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।