শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলেছে জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘের একটি অনুসন্ধানী কমিশন। এ ঘোষণাকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলা হলেও ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটি ‘ভিত্তিহীন ও বিকৃত’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

আজ মঙ্গলবার আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন দ্য অকুপাইড প্যালেস্টাইন টেরিটরির চেয়ার নাভি পিল্লাই এ তথ্য জানান।

নাভি পিল্লাই বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে চিহ্নিত করেছি তাদের দেওয়া বক্তব্য ও নির্দেশনার ভিত্তিতে। এরা সবাই রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইনে রাষ্ট্রকেই দায়ী করা হয়। সুতরাং আমরা বলছি, ইসরায়েল রাষ্ট্র গণহত্যা করেছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া বক্তব্যের পাশাপাশি বেশ কিছু পরোক্ষ প্রমাণ কমিশনের কাছে গণহত্যার অভিপ্রায় প্রমাণ করেছে।

কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনী গাজায় ফিলিস্তিনিদের সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে কাজ করেছে।

তবে জেনেভায় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এ প্রতিবেদনের ফলাফলকে কেলেঙ্কারিপূর্ণ, ভুয়া ও মানহানিকর অভিযোগ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত পাঁচটি গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে চারটি সংঘটিত হয়েছে ২০২৩ সালে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে। এর মধ্যে রয়েছে- একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা, গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করা, ইচ্ছাকৃতভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাতে ওই গোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যায় এবং জন্মদানের পথ রোধ করা।

প্রতিবেদনটি ইসরায়েলি নেতাদের প্রকাশ্য বক্তব্য ও সেনাদের আচরণের ধরণকে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ প্রমাণের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটি “ভিত্তিহীন ও বিকৃত” আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগ করেছে, কমিশনের তিন বিশেষজ্ঞ আসলে হামাসের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন এবং হামাসের মিথ্যা প্রচারণার ওপর নির্ভর করছেন, যা আগেই খণ্ডিত হয়েছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীতে, হামাসই ইসরায়েলে গণহত্যার চেষ্টা করেছে। তারা ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, পরিবারকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে এবং প্রকাশ্যে প্রতিটি ইহুদিকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলেছে জাতিসংঘ

প্রকাশিত সময় : ০৫:২১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘের একটি অনুসন্ধানী কমিশন। এ ঘোষণাকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলা হলেও ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটি ‘ভিত্তিহীন ও বিকৃত’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

আজ মঙ্গলবার আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন দ্য অকুপাইড প্যালেস্টাইন টেরিটরির চেয়ার নাভি পিল্লাই এ তথ্য জানান।

নাভি পিল্লাই বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে চিহ্নিত করেছি তাদের দেওয়া বক্তব্য ও নির্দেশনার ভিত্তিতে। এরা সবাই রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইনে রাষ্ট্রকেই দায়ী করা হয়। সুতরাং আমরা বলছি, ইসরায়েল রাষ্ট্র গণহত্যা করেছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া বক্তব্যের পাশাপাশি বেশ কিছু পরোক্ষ প্রমাণ কমিশনের কাছে গণহত্যার অভিপ্রায় প্রমাণ করেছে।

কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনী গাজায় ফিলিস্তিনিদের সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে কাজ করেছে।

তবে জেনেভায় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এ প্রতিবেদনের ফলাফলকে কেলেঙ্কারিপূর্ণ, ভুয়া ও মানহানিকর অভিযোগ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত পাঁচটি গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে চারটি সংঘটিত হয়েছে ২০২৩ সালে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে। এর মধ্যে রয়েছে- একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা, গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করা, ইচ্ছাকৃতভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাতে ওই গোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যায় এবং জন্মদানের পথ রোধ করা।

প্রতিবেদনটি ইসরায়েলি নেতাদের প্রকাশ্য বক্তব্য ও সেনাদের আচরণের ধরণকে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ প্রমাণের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটি “ভিত্তিহীন ও বিকৃত” আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগ করেছে, কমিশনের তিন বিশেষজ্ঞ আসলে হামাসের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন এবং হামাসের মিথ্যা প্রচারণার ওপর নির্ভর করছেন, যা আগেই খণ্ডিত হয়েছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীতে, হামাসই ইসরায়েলে গণহত্যার চেষ্টা করেছে। তারা ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, পরিবারকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে এবং প্রকাশ্যে প্রতিটি ইহুদিকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছে।