পূজায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হলে কিংবা গুজব সৃষ্টি করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য সারা দেশে সেনাবাহিনীর এক লাখ সদস্য নিয়োজিত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গাতেই গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
পূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি জানান, এবার সারা দেশে
পূজামণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি। গতবারের চেয়ে প্রায় এক হাজার বেশি। সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ অন্যবাহিনীর সদস্যরা প্রতিবছরের মতো এবারও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, “দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন আনসার সদস্যরা পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। ২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট নয় দিন তারা থাকবেন।”
নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে সারা দেশে এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশ সদস্য কাজ করছে প্রায় ৭০ হাজার। সারা দেশে পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ৪৩০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে সাত জন সদস্য পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের ২ হাজার ৮৫৭টি পূজামণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৪টি বেইজ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
তাছাড়া, প্রতিটি পূজামণ্ডপের কার্যক্রম মনিটরিং জন্য আলাদা কমিটি কাজ করছে। স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ, ছাত্রজনতাকে নিয়ে আলাদা মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় এই কমিটি রয়েছে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, পূজা উপলক্ষে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনেক স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হয়েছে। এই সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। তাছাড়া, পূজা উপলক্ষে পুলিশের নিয়মিত টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের সংখ্যাও প্রায় ৭০ হাজারের মত। ঝুঁকিপূর্ণ পূজামণ্ডপে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, “আজকের সভায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি ও পূজা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাকসু ও চাকসু নিয়ে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।” মিয়ানমার সীমান্ত বিশেষ করে মাদক নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে, এই বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে গিয়েও বলেছেন। আমরা এটাকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।”