চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া গৃহবধূ শাহনাজ বেগম (৩৮) মারা গেছেন। বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে তিনি রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় অভিযুক্ত নাসিমা বেগমের বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন উত্তেজিত জনতা। উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের উপাদিক গ্রামে ঘটনাটি ঘটে
এলাকাবাসী জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাতে গৃহবধূ শাহনাজ বেগমের শরীরে আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা। তাদের ধারণা, সুদের টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে নাসিমা বেগম ও তার সহযোগীরা ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারেন। এরপর নাছিমা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকার পাঁচদিন পর বুধবার শাহনাজ মারা যান।
এ ঘটনায় উত্তেজিত লোকজন সন্ধ্যায় নাছিমার বাড়িতে হামলা চালান। তারা লুটপাট শেষে বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
মারা যাওয়া শাহনাজ বেগমের স্বামী আমিনুল খান বলেন, “নাছিমা বেগম একজন সুদ ব্যবসায়ী। গত কয়েক মাস ধরেই সুদের টাকা পরিশোধ ও স্ট্যাম্প দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি আগেও আমার স্ত্রীকে কয়েক দফা মেরেছিলেন। সবশেষ গত শুক্রবার রাতে আমার স্ত্রীকে পেছন দিক থেকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় নাছিমা বেগমসহ আরো কয়েকজন লোক জড়িত ছিলেন। আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, নাছিমা বেগম বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে তথ্য যাচাই বাছাইও করছে পুলিশ। এরমধ্যে মব সৃষ্টি করে লুটপাট শেষে তার বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার যে ঘটনা ঘটানো হলো তা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ কাজ। এটা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।”
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নাছিমা বেগমের স্বামী হাফিজ মিয়াসহ তাদের স্বজনরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শাহনাজ বেগমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম। তিনি বলেন, “বাড়িতে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নাছিমা বেগমকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”