মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গঙ্গাচড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দী

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গতকাল রবিবারের তুলনায় আজ সোমবার পানি কিছুটা কমেছে। তবে তিস্তাবেষ্টিত সাত ইউনিয়নের ৪ হাজার ২০০ পরিবার এখনও পানিবন্দী রয়েছে। মানুষজন আতঙ্ক ও অসহায় অবস্থায় রাত কাটিয়েছে। তারা আসবাবপত্র ও গবাদিপশু উঁচু জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারতের সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ ও গজলডোবা এলাকায় ৪ অক্টোবর থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানি ও উত্তরের জেলাগুলোর দুই দিনের বৃষ্টিতে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল। ৫ অক্টোবর বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার সমতলে পৌঁছালে রাত ১২টায় তা বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় (৫২.৫১ সেন্টিমিটার)। পরে আজ সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা রবিবার সন্ধ্যায় মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবুও নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের মানুষজন পানিবন্দী হয়েছেন। কেউ আসবাবপত্র ও গবাদিপশু সরিয়ে নিতে পেরেছেন, কেউ পারেননি। ছোট শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদিপশু একসঙ্গে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা করতে গিয়ে মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। অনেকের খাবারেরও অভাব দেখা দিয়েছে। কিছু মানুষ খাবার নিয়ে পারিবারিক ও আত্মীয়দের সাহায্য পাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ কিনে খাচ্ছেন। রাস্তা ও উঁচু জায়গায় পলিথিনের আস্থাপত্রে অবস্থান করছেন কেউ কেউ। কেউ কেউ মাছ জাল দিয়ে মাছ ধরছেন।

উপজেলার নোহালী ইউনিয়নে ৮০০, লক্ষীটারী ১ হাজার ২০০, গঙ্গাচড়া ৬০০, কোলকোন্দ ৮০০, গজঘণ্টা ৭০০, মর্নেয়া ৪০০, আলমবিদিতর ১০০ পরিবার পানিবন্দী হয়েছে।

পানিবন্দী মনোয়ারুল, জয়নাল, মমিন, আলম ও রাজ্জাক জানান, তারা গরু, ছাগল, মুরগি ও কিছু আসবাবপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় উঠে এসেছেন। অনেক জিনিস বাড়িতে রেখে এসেছেন। তাদের বড় সমস্যা হয়েছে খাবার ও থাকার জায়গা। ইউপি চেয়ারম্যানরা পানিবন্দী পরিবারদের সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই অবগত করেছেন।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, পানিবন্দীদের জন্য চাল ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

গঙ্গাচড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দী

প্রকাশিত সময় : ১১:০৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গতকাল রবিবারের তুলনায় আজ সোমবার পানি কিছুটা কমেছে। তবে তিস্তাবেষ্টিত সাত ইউনিয়নের ৪ হাজার ২০০ পরিবার এখনও পানিবন্দী রয়েছে। মানুষজন আতঙ্ক ও অসহায় অবস্থায় রাত কাটিয়েছে। তারা আসবাবপত্র ও গবাদিপশু উঁচু জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারতের সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ ও গজলডোবা এলাকায় ৪ অক্টোবর থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানি ও উত্তরের জেলাগুলোর দুই দিনের বৃষ্টিতে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল। ৫ অক্টোবর বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার সমতলে পৌঁছালে রাত ১২টায় তা বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় (৫২.৫১ সেন্টিমিটার)। পরে আজ সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা রবিবার সন্ধ্যায় মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবুও নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের মানুষজন পানিবন্দী হয়েছেন। কেউ আসবাবপত্র ও গবাদিপশু সরিয়ে নিতে পেরেছেন, কেউ পারেননি। ছোট শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদিপশু একসঙ্গে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা করতে গিয়ে মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। অনেকের খাবারেরও অভাব দেখা দিয়েছে। কিছু মানুষ খাবার নিয়ে পারিবারিক ও আত্মীয়দের সাহায্য পাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ কিনে খাচ্ছেন। রাস্তা ও উঁচু জায়গায় পলিথিনের আস্থাপত্রে অবস্থান করছেন কেউ কেউ। কেউ কেউ মাছ জাল দিয়ে মাছ ধরছেন।

উপজেলার নোহালী ইউনিয়নে ৮০০, লক্ষীটারী ১ হাজার ২০০, গঙ্গাচড়া ৬০০, কোলকোন্দ ৮০০, গজঘণ্টা ৭০০, মর্নেয়া ৪০০, আলমবিদিতর ১০০ পরিবার পানিবন্দী হয়েছে।

পানিবন্দী মনোয়ারুল, জয়নাল, মমিন, আলম ও রাজ্জাক জানান, তারা গরু, ছাগল, মুরগি ও কিছু আসবাবপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় উঠে এসেছেন। অনেক জিনিস বাড়িতে রেখে এসেছেন। তাদের বড় সমস্যা হয়েছে খাবার ও থাকার জায়গা। ইউপি চেয়ারম্যানরা পানিবন্দী পরিবারদের সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই অবগত করেছেন।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, পানিবন্দীদের জন্য চাল ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।