বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তহবিল সংকটে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী ছাঁটাই করবে জাতিসংঘ

জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী নয়টি শান্তিরক্ষী মিশনে আগামী কয়েক মাসে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রায় এক–চতুর্থাংশ ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের মূল কারণ অর্থের ঘাটতি, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ তহবিলের অনিশ্চয়তা। জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী সৈন্য ও পুলিশকে তাদের সরঞ্জামসহ প্রত্যাহার করা হবে। এসব মিশনে কাজ করা অনেক বেসামরিক কর্মীও এর আওতায় পড়বেন। ফলে ছাঁটাইয়ের আওতায় আসবেন ১৩ থেকে ১৪ হাজার সৈন্য ও পুলিশ এবং উল্লেখযোগ্য বেসামরিক কর্মী।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে যুক্তরাষ্ট্র। মিশনের ২৬ শতাংশের বেশি তহবিলের যোগান তারা দেয়। তাদের পর রয়েছে চীন, দেশটি দেয় তহবিলের প্রায় ২৪ শতাংশ। এই অর্থ প্রদান স্বেচ্ছাসেবী নয় এবং নির্ধারিত। তবে ১ জুলাই নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগেই দেড় বিলিয়ন ডলার বকেয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। নতুন বকেয়া ১.৩ বিলিয়ন ডলার যোগ হওয়ায় বর্তমানে মোট বকেয়ার পরিমাণ ২.৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুতই ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরিকল্পনা করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ মিশন এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।

গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার শান্তি রক্ষা তহবিল বাতিল করেন। এ ছাড়া হোয়াইট হাউজের বাজেট অফিস ২০২৬ সালের জন্যও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের তহবিল বাতিলের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবের পেছনে মালি, লেবানন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অভিযানের ব্যর্থতাকে উল্লেখ করা হয়েছে

জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তের কারণে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, গোলান মালভূমির নিরস্ত্রীকৃত এলাকা (ইসরায়েল-সিরিয়া সীমান্ত) এবং আবিয়াই (দক্ষিণ সুদান-সুদান সীমান্তবর্তী প্রশাসনিক অঞ্চল) এলাকার শান্তিরক্ষী মিশনগুলো প্রভাবিত হবে।

রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও সংস্থার কার্যকারিতা বাড়ানো এবং খরচ কমানোর উপায় খুঁজছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

তহবিল সংকটে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী ছাঁটাই করবে জাতিসংঘ

প্রকাশিত সময় : ০৩:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী নয়টি শান্তিরক্ষী মিশনে আগামী কয়েক মাসে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রায় এক–চতুর্থাংশ ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের মূল কারণ অর্থের ঘাটতি, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ তহবিলের অনিশ্চয়তা। জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী সৈন্য ও পুলিশকে তাদের সরঞ্জামসহ প্রত্যাহার করা হবে। এসব মিশনে কাজ করা অনেক বেসামরিক কর্মীও এর আওতায় পড়বেন। ফলে ছাঁটাইয়ের আওতায় আসবেন ১৩ থেকে ১৪ হাজার সৈন্য ও পুলিশ এবং উল্লেখযোগ্য বেসামরিক কর্মী।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে যুক্তরাষ্ট্র। মিশনের ২৬ শতাংশের বেশি তহবিলের যোগান তারা দেয়। তাদের পর রয়েছে চীন, দেশটি দেয় তহবিলের প্রায় ২৪ শতাংশ। এই অর্থ প্রদান স্বেচ্ছাসেবী নয় এবং নির্ধারিত। তবে ১ জুলাই নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগেই দেড় বিলিয়ন ডলার বকেয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। নতুন বকেয়া ১.৩ বিলিয়ন ডলার যোগ হওয়ায় বর্তমানে মোট বকেয়ার পরিমাণ ২.৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুতই ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরিকল্পনা করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ মিশন এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।

গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার শান্তি রক্ষা তহবিল বাতিল করেন। এ ছাড়া হোয়াইট হাউজের বাজেট অফিস ২০২৬ সালের জন্যও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের তহবিল বাতিলের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবের পেছনে মালি, লেবানন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অভিযানের ব্যর্থতাকে উল্লেখ করা হয়েছে

জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তের কারণে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, গোলান মালভূমির নিরস্ত্রীকৃত এলাকা (ইসরায়েল-সিরিয়া সীমান্ত) এবং আবিয়াই (দক্ষিণ সুদান-সুদান সীমান্তবর্তী প্রশাসনিক অঞ্চল) এলাকার শান্তিরক্ষী মিশনগুলো প্রভাবিত হবে।

রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও সংস্থার কার্যকারিতা বাড়ানো এবং খরচ কমানোর উপায় খুঁজছেন।