বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনশনরত রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৫ শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এনামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন পাঁচ শিক্ষার্থী।

টানা ২১ ঘণ্টা ধরে অনশন থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারা। এর মধ্যে, গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, টানা চারদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্যালাইন দেওয়া হয়। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এসে তাদের খোঁজ নেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তাদের।

এদিকে, শিক্ষার্থীরা বলছেন প্রশাসন শুধু আমাদের আশ্বাসই দিচ্ছে, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. সুমন আলী, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইকরা, হুমাইরা, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইমন ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাদিক।

এ সময় শিক্ষার্থী রাইসুল আহমেদ বলেন, “আমাদের এক দফা দাবি ছিল, বহিরাগত সভাপতির অপসারণ। আমরা চাই, বিভাগ থেকেই বিভাগের সভাপতি করতে হবে। গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু তারা বহিরাগত চেয়ারম্যানকে বহাল রাখতে চায়। এজন্য গতকাল থেকে আমরা অনশনে বসেছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের কয়েকজন অনশনরত অবস্থা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত তাকে অপসারণ করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।”

২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাত জামান বলেন, “আমরা গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো আশ্বাস দেয়নি, আরো সময় চেয়েছেন। তারা আমাদের বলেছে বর্তমান সভাপতি সঙ্গে নিগোশিয়েট করে তাকে মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা তাকে চাই না। যেহেতু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না, তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “একটা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্ব সব বিভাগ যেন ভালোভাবে চলে, সেটা দেখা। সেটার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা সমাধান বের করার চেষ্টা করছি। একটা সমাধান বের হবে দ্রুতই। এখন এই কাজগুলো করতে গেলে যে সময়টুকু লাগে, সেটা তো আমাদের দিতে হবে।”

রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে এক আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো রকম আশ্বাস না পাওয়ায় তারা আমরণ অনশনে বসেছেন বলে জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের রাইসুল মাহমুদ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনশনরত রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৫ শিক্ষার্থী

প্রকাশিত সময় : ১০:২১:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এনামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন পাঁচ শিক্ষার্থী।

টানা ২১ ঘণ্টা ধরে অনশন থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারা। এর মধ্যে, গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, টানা চারদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্যালাইন দেওয়া হয়। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এসে তাদের খোঁজ নেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তাদের।

এদিকে, শিক্ষার্থীরা বলছেন প্রশাসন শুধু আমাদের আশ্বাসই দিচ্ছে, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. সুমন আলী, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইকরা, হুমাইরা, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইমন ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাদিক।

এ সময় শিক্ষার্থী রাইসুল আহমেদ বলেন, “আমাদের এক দফা দাবি ছিল, বহিরাগত সভাপতির অপসারণ। আমরা চাই, বিভাগ থেকেই বিভাগের সভাপতি করতে হবে। গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু তারা বহিরাগত চেয়ারম্যানকে বহাল রাখতে চায়। এজন্য গতকাল থেকে আমরা অনশনে বসেছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের কয়েকজন অনশনরত অবস্থা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত তাকে অপসারণ করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।”

২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাত জামান বলেন, “আমরা গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো আশ্বাস দেয়নি, আরো সময় চেয়েছেন। তারা আমাদের বলেছে বর্তমান সভাপতি সঙ্গে নিগোশিয়েট করে তাকে মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা তাকে চাই না। যেহেতু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না, তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “একটা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্ব সব বিভাগ যেন ভালোভাবে চলে, সেটা দেখা। সেটার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা সমাধান বের করার চেষ্টা করছি। একটা সমাধান বের হবে দ্রুতই। এখন এই কাজগুলো করতে গেলে যে সময়টুকু লাগে, সেটা তো আমাদের দিতে হবে।”

রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে এক আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো রকম আশ্বাস না পাওয়ায় তারা আমরণ অনশনে বসেছেন বলে জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের রাইসুল মাহমুদ।