বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পদ্মার চরে গুলিতে ২ জন নিহত, গুলিবিদ্ধ ২

পদ্মার চরে জন্মানো খড় কাটাকে কেন্দ্র করে গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো দুইজন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী, নাটোর ও কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীর চরের নীচ খানপুর এলাকায় তাদের গুলি করা হয়। এলাকাটি কোন থানা এলাকায় পড়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।

নিহতরা হলেন, চরখানপুর গ্রামের মিনহাজ মণ্ডলে ছেলে আমান মণ্ডল (৩৬) ও একই গ্রামের শুকুর মণ্ডলের ছেলে নাজমুল হোসেন (৩৩)। আহতরা হলেন, আশরাফ মণ্ডলের ছেলে রাকিব হোসেন (১৮) ও চান মন্ডলের ছেলে মুনতাজ মণ্ডল (৩২)। এরমধ্যে নাজমুলের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। রাকিব ও মুনতাজ এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে পদ্মায় জেগে উঠা চরে খড় কাটতে যান খানপুর চরের আমান মণ্ডল, রাকিব হোসেন ও মুনতাজ মণ্ডল। এ সময় পদ্মার চরে কাকন বাহিনীর লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এতে আমান মণ্ডল, রাকিব হোসেন, মুনতাজ মণ্ডল, নাজমুল হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।

আহত অবস্থায় তাদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে আমান মণ্ডল মারা যান। পরে নাজমুল হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসাপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মন্ডল বলেন, ‘‘চরে পতিত জমিতে খড় কাটতে যায় আমার ছেলেসহ কয়েকজন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কাকন বাহিনীর লোকজন এসে অর্তকিতভাবে গুলি ছোড়ে। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন।’’

নীচ খানপুর গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, ‘‘খানপুর চরের কয়েকজন চর এলাকায় খড় কাটছিলেন। কাকন বাহিনীর লোকজন প্রভাব বিস্তার করে খড় কাটা জমির দখল নিতে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়েছে। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে কাকন বাহিনীর লোকজন পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।’’

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নিহার চন্দ্র মণ্ডল জানান, নিহত এবং আহতদের শরীরে অসংখ্যা গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছাদুজ্জামান বলেন, ‘‘এই ঘটনা দৌলতপুর চরে। বাঘা থানা এলাকায় নয়।’’ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমি যতটুকু নিশ্চিত হয়েছি, এটা রাজশাহী বাঘা ও নাটোরের লালপুর থানা এলাকায়।’’

নাটোরের লালপুর থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘‘লালপুরের হরিরচরের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ঘটনাস্থল লালপুর হরিরচর থেকে তিন-চার কিলোমিটার দক্ষিণে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের দিকে। আহত ও নিহতের মধ্যে লালপুরের কেউ নেই।’’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

পদ্মার চরে গুলিতে ২ জন নিহত, গুলিবিদ্ধ ২

প্রকাশিত সময় : ১০:০২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

পদ্মার চরে জন্মানো খড় কাটাকে কেন্দ্র করে গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো দুইজন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী, নাটোর ও কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীর চরের নীচ খানপুর এলাকায় তাদের গুলি করা হয়। এলাকাটি কোন থানা এলাকায় পড়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।

নিহতরা হলেন, চরখানপুর গ্রামের মিনহাজ মণ্ডলে ছেলে আমান মণ্ডল (৩৬) ও একই গ্রামের শুকুর মণ্ডলের ছেলে নাজমুল হোসেন (৩৩)। আহতরা হলেন, আশরাফ মণ্ডলের ছেলে রাকিব হোসেন (১৮) ও চান মন্ডলের ছেলে মুনতাজ মণ্ডল (৩২)। এরমধ্যে নাজমুলের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। রাকিব ও মুনতাজ এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে পদ্মায় জেগে উঠা চরে খড় কাটতে যান খানপুর চরের আমান মণ্ডল, রাকিব হোসেন ও মুনতাজ মণ্ডল। এ সময় পদ্মার চরে কাকন বাহিনীর লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এতে আমান মণ্ডল, রাকিব হোসেন, মুনতাজ মণ্ডল, নাজমুল হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।

আহত অবস্থায় তাদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে আমান মণ্ডল মারা যান। পরে নাজমুল হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসাপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মন্ডল বলেন, ‘‘চরে পতিত জমিতে খড় কাটতে যায় আমার ছেলেসহ কয়েকজন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কাকন বাহিনীর লোকজন এসে অর্তকিতভাবে গুলি ছোড়ে। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন।’’

নীচ খানপুর গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, ‘‘খানপুর চরের কয়েকজন চর এলাকায় খড় কাটছিলেন। কাকন বাহিনীর লোকজন প্রভাব বিস্তার করে খড় কাটা জমির দখল নিতে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়েছে। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে কাকন বাহিনীর লোকজন পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।’’

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নিহার চন্দ্র মণ্ডল জানান, নিহত এবং আহতদের শরীরে অসংখ্যা গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছাদুজ্জামান বলেন, ‘‘এই ঘটনা দৌলতপুর চরে। বাঘা থানা এলাকায় নয়।’’ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমি যতটুকু নিশ্চিত হয়েছি, এটা রাজশাহী বাঘা ও নাটোরের লালপুর থানা এলাকায়।’’

নাটোরের লালপুর থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘‘লালপুরের হরিরচরের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ঘটনাস্থল লালপুর হরিরচর থেকে তিন-চার কিলোমিটার দক্ষিণে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের দিকে। আহত ও নিহতের মধ্যে লালপুরের কেউ নেই।’’