বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসপাতালে অসুস্থ বাবার বেডের নিচে বসে পড়তেন, এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ–৫

ইফতেখার আহমেদ যখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, তখন তাঁর অসুস্থ প্রধান শিক্ষক বাবা কামাল উদ্দিনকে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেসময় হাসপাতালে কাটত ইফতেখারের দিন। চিকিৎসাধীন বাবার বেডের নিচে বসে পড়তেন। ৫ মাস ৬ দিন চেতনাহীন থেকে বাবা যখন মারা যান, তাঁর চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারটি ততোদিনে প্রায় নিঃস্ব।
তবু পড়ালেখা ছাড়েননি ইফতেখার। শিক্ষক-শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পেয়েছেন জিপিএ-৫। মোট নম্বর ১ হাজার ২৫৮। রাজশাহী কলেজরে ভর্তির পর সব বই কিনে দিতে পারেননি তার মা। বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়তে হয়েছে। রাজশাহী শহরে থেকে থাকা–খাওয়ার খরচ দিয়েছেন তার দুলাভাই। এরপরও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ–৫ পেয়েছেন তিনি।
মোট নম্বর ১ হাজার ২১১।
কলেজে নিজের পড়ালেখার খরচের দায়িত্ব ইফতেখার নিজেই নিয়েছেন। নানা রকম বৃত্তি, প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবে পাওয়া ‘প্রাইজ মানি’ই ছিলো তাঁর সম্বল। এক সময় মেধাবী এই শিক্ষার্থীর খোঁজ পেয়ে মাসে দুই হাজার টাকা করে পাঠানো শুরু করেন ঢাকার এক স্কুল শিক্ষক।
সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা থেকে ৩৬ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। এ ছাড়া আরও কিছু বৃত্তির টাকা দিয়ে ছাগল কিনে লালনপালন করেছেন। ছাগল বিক্রি করে কিছুটা লাভ হয়েছে। এভাবেই জোড়াতালি দিয়ে চলেছে তার পড়ালেখা।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

হাসপাতালে অসুস্থ বাবার বেডের নিচে বসে পড়তেন, এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ–৫

প্রকাশিত সময় : ০৫:৪১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
ইফতেখার আহমেদ যখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, তখন তাঁর অসুস্থ প্রধান শিক্ষক বাবা কামাল উদ্দিনকে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেসময় হাসপাতালে কাটত ইফতেখারের দিন। চিকিৎসাধীন বাবার বেডের নিচে বসে পড়তেন। ৫ মাস ৬ দিন চেতনাহীন থেকে বাবা যখন মারা যান, তাঁর চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারটি ততোদিনে প্রায় নিঃস্ব।
তবু পড়ালেখা ছাড়েননি ইফতেখার। শিক্ষক-শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পেয়েছেন জিপিএ-৫। মোট নম্বর ১ হাজার ২৫৮। রাজশাহী কলেজরে ভর্তির পর সব বই কিনে দিতে পারেননি তার মা। বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়তে হয়েছে। রাজশাহী শহরে থেকে থাকা–খাওয়ার খরচ দিয়েছেন তার দুলাভাই। এরপরও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ–৫ পেয়েছেন তিনি।
মোট নম্বর ১ হাজার ২১১।
কলেজে নিজের পড়ালেখার খরচের দায়িত্ব ইফতেখার নিজেই নিয়েছেন। নানা রকম বৃত্তি, প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবে পাওয়া ‘প্রাইজ মানি’ই ছিলো তাঁর সম্বল। এক সময় মেধাবী এই শিক্ষার্থীর খোঁজ পেয়ে মাসে দুই হাজার টাকা করে পাঠানো শুরু করেন ঢাকার এক স্কুল শিক্ষক।
সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা থেকে ৩৬ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। এ ছাড়া আরও কিছু বৃত্তির টাকা দিয়ে ছাগল কিনে লালনপালন করেছেন। ছাগল বিক্রি করে কিছুটা লাভ হয়েছে। এভাবেই জোড়াতালি দিয়ে চলেছে তার পড়ালেখা।