মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনাকে খুঁজতে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় হারানো বিজ্ঞপ্তির মাইকিং

রাজধানীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে অস্বাভাবিক এক মাইকিং শোনা যায়। কোথাও কোনো মানুষ বা শিশু হারিয়ে গেলে যেভাবে মাইকিং করতে শোনা যায়, তারই অনুকরণে আদালত চত্বরে এ মাইকিং করা হয়।

এতে বলতে শোনা যায়, ‘একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি… আমাদের হাসিনা খালা (শেখ হাসিনা) গত ৫ আগস্ট সপরিবারে হারিয়ে গেছেন। যদি কোনো সৎ-হৃদয়বান ব্যক্তি তার সন্ধান পান, তবে তাকে হাইকোর্টের ফাঁসির মঞ্চে পৌঁছে দেবেন। একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি। একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি…’

সোমবার শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিন হওয়ায় আদালত চত্বর সকাল থেকেই জনসমাগমে জমে ওঠে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছিলেন রায়ের ফলাফলের জন্য।

এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নগরজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে সকাল থেকে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা যায়। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহনও চলাচল করেছে। এদিন রায়কে কেন্দ্র করে পতিত আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন কর্মসূচি’র কোনো প্রভাব সকাল থেকে রাজধানীতে দেখা যায়নি।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ধার্য‍ ছিল। ওই দিনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স‍্যোশাল মিডিয়ার মাধ‍্যমে লকডাউন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়। এরই ধারাবহিকতায় গত কয়েক দিনে সারাদেশে অর্ধশত গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

অপরদিকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি প্রতিরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রায়কে কেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি এবং প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে মারাত্মক আহত করার অভিযোগে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে এই মামলা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আলোচিত এই মামলার রায়ের দিন ধার্য‍ করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

তিনজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়। বিচার চলাকালে মোট ৫৪ সাক্ষীর সাক্ষ‍্যগ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি গণমাধ‍্যমে জুলাই-আগস্ট হত‍্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত অডিও, ভিডিও ও অন‍্যান‍্য প্রমাণ আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়। তবে মামলার আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী (অ‍্যাপ্রুভার) হয়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করে অন‍্য আসামিদের সব অপরাধের বর্ণনা দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

হাসিনাকে খুঁজতে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় হারানো বিজ্ঞপ্তির মাইকিং

প্রকাশিত সময় : ০৩:২৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে অস্বাভাবিক এক মাইকিং শোনা যায়। কোথাও কোনো মানুষ বা শিশু হারিয়ে গেলে যেভাবে মাইকিং করতে শোনা যায়, তারই অনুকরণে আদালত চত্বরে এ মাইকিং করা হয়।

এতে বলতে শোনা যায়, ‘একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি… আমাদের হাসিনা খালা (শেখ হাসিনা) গত ৫ আগস্ট সপরিবারে হারিয়ে গেছেন। যদি কোনো সৎ-হৃদয়বান ব্যক্তি তার সন্ধান পান, তবে তাকে হাইকোর্টের ফাঁসির মঞ্চে পৌঁছে দেবেন। একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি। একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি…’

সোমবার শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিন হওয়ায় আদালত চত্বর সকাল থেকেই জনসমাগমে জমে ওঠে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছিলেন রায়ের ফলাফলের জন্য।

এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নগরজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে সকাল থেকে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা যায়। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহনও চলাচল করেছে। এদিন রায়কে কেন্দ্র করে পতিত আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন কর্মসূচি’র কোনো প্রভাব সকাল থেকে রাজধানীতে দেখা যায়নি।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ধার্য‍ ছিল। ওই দিনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স‍্যোশাল মিডিয়ার মাধ‍্যমে লকডাউন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়। এরই ধারাবহিকতায় গত কয়েক দিনে সারাদেশে অর্ধশত গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

অপরদিকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি প্রতিরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রায়কে কেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি এবং প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে মারাত্মক আহত করার অভিযোগে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে এই মামলা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আলোচিত এই মামলার রায়ের দিন ধার্য‍ করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

তিনজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়। বিচার চলাকালে মোট ৫৪ সাক্ষীর সাক্ষ‍্যগ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি গণমাধ‍্যমে জুলাই-আগস্ট হত‍্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত অডিও, ভিডিও ও অন‍্যান‍্য প্রমাণ আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়। তবে মামলার আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী (অ‍্যাপ্রুভার) হয়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করে অন‍্য আসামিদের সব অপরাধের বর্ণনা দেন।