সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আত্মীয়ের জানাজা থেকে ফেরার পথে প্রাণ গেল ৩ ভাইয়ের

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসচাপায় মোটরসাইকেলে আরোহী তিন ভাই নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চলছে শোকের মাতম।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বরিশাল মহাসড়কের হামিরদী ইউনিয়নের মাধবপুর কবরস্থানের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতেরা হলেন- কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার করিম মন্ডলের ছেলে সুমন (২৫) ও রিমন (১৪) এবং শাহিন মোল্লার ছেলে মো. আশিক মোল্লা (২২)। নিহত সুমন ও রিমন আপন ভাই, আশিক তাদের চাচাতো ভাই। তারা সবাই উপজেলার সদকি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে নিহতদের মরদেহ এলাকায় পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। সন্তান হারিয়ে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানান, সুমন ও রিমন বোনের শাশুড়ির জানাজা থেকে ফেরার পথে মাধবপুর কবরস্থানের সামনে দুর্ঘটনায় নিহত হন। তাদের সঙ্গে থাকা আশিকও এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। নিহত সুমন ও রিমন পেশায় ফার্নিচার মিস্ত্রী ও আশিক ঢাকায় চাকরির পাশাপাশি উবার চালাতেন।

দুই ছেলেকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ করিম মন্ডল। তিনি বলেন, আমার মেয়ের শাশুড়ি গতকাল মারা গেছে। তার জানাজা শেষে দুই ছেলে বাড়িতে আসছিল। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে আসছিল। বড় ছেলেকে সুমনের খোঁজ নেওয়ার জন্য বলি, পরে সে সুমনকে ফোন দিলে পুলিশ ফোন ধরে জানায় এক্সিডেন্টের কথা। বড় ছেলে যেয়ে দেখে আমার দুই ছেলের লাশ হাসপাতালে পড়ে আছে। এখন এ শোক আমি সইবো কি করে।

নিহত আশিক মোল্লার মা শিউলী খাতুন কান্নারত অবস্থায় বলেন, ১৫ দিন আগেই বাড়িতে এসে ছেলে ঘুরে গেছে। ছেলে যে আজকে বাড়িতে আসছিল জানতাম না। রাতে পুলিশ ফোন করে জানায় আশিকের এক্সিডেন্ট হয়েছে। পরে খবর পাই হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার ছেলে মারা গেছে। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচব? আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলেকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল মধ্যরাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের একই এলাকার আপন দুই ভাইসহ তিনজন নিহত হয়েছে। তাদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। খুব কষ্টদায়ক একটি বিষয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আত্মীয়ের জানাজা থেকে ফেরার পথে প্রাণ গেল ৩ ভাইয়ের

প্রকাশিত সময় : ০৯:৩২:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসচাপায় মোটরসাইকেলে আরোহী তিন ভাই নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চলছে শোকের মাতম।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বরিশাল মহাসড়কের হামিরদী ইউনিয়নের মাধবপুর কবরস্থানের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতেরা হলেন- কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার করিম মন্ডলের ছেলে সুমন (২৫) ও রিমন (১৪) এবং শাহিন মোল্লার ছেলে মো. আশিক মোল্লা (২২)। নিহত সুমন ও রিমন আপন ভাই, আশিক তাদের চাচাতো ভাই। তারা সবাই উপজেলার সদকি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে নিহতদের মরদেহ এলাকায় পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। সন্তান হারিয়ে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানান, সুমন ও রিমন বোনের শাশুড়ির জানাজা থেকে ফেরার পথে মাধবপুর কবরস্থানের সামনে দুর্ঘটনায় নিহত হন। তাদের সঙ্গে থাকা আশিকও এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। নিহত সুমন ও রিমন পেশায় ফার্নিচার মিস্ত্রী ও আশিক ঢাকায় চাকরির পাশাপাশি উবার চালাতেন।

দুই ছেলেকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ করিম মন্ডল। তিনি বলেন, আমার মেয়ের শাশুড়ি গতকাল মারা গেছে। তার জানাজা শেষে দুই ছেলে বাড়িতে আসছিল। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে আসছিল। বড় ছেলেকে সুমনের খোঁজ নেওয়ার জন্য বলি, পরে সে সুমনকে ফোন দিলে পুলিশ ফোন ধরে জানায় এক্সিডেন্টের কথা। বড় ছেলে যেয়ে দেখে আমার দুই ছেলের লাশ হাসপাতালে পড়ে আছে। এখন এ শোক আমি সইবো কি করে।

নিহত আশিক মোল্লার মা শিউলী খাতুন কান্নারত অবস্থায় বলেন, ১৫ দিন আগেই বাড়িতে এসে ছেলে ঘুরে গেছে। ছেলে যে আজকে বাড়িতে আসছিল জানতাম না। রাতে পুলিশ ফোন করে জানায় আশিকের এক্সিডেন্ট হয়েছে। পরে খবর পাই হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার ছেলে মারা গেছে। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচব? আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলেকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল মধ্যরাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের একই এলাকার আপন দুই ভাইসহ তিনজন নিহত হয়েছে। তাদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। খুব কষ্টদায়ক একটি বিষয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।