বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক শওকত মাহমুদ পাঁচ দিনের রিমান্ডে

‎সরকার উৎখাতেষড়যন্ত্রের সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শওকত মাহমুদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

‎বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিনা খন্দকার আন্না এই আদেশ দিয়েছেন।

‎গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন গত ৮ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির রমনা বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ। ‎তবে সেদিন মামলার মূল নথি না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানি দিন ধার্য করা হয়।

‎রিমান্ড আবেদনে যা বলা হয়, শওকত মাহমুদসহ আরও অজ্ঞাতনামা আসামিরা এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাংলাদেশের অখন্ডতা, সংহতি, জন-নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এবং উচ্চ পদস্থ লোকজন ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ, পরামর্শ করে বিভিন্ন স্থানে গণবিক্ষোভের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে যড়যন্ত্র, সহায়তা ও প্ররোচিত করার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে মর্মে তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে কোন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী বা অন্য কোন অনিবন্ধিত অথবা নিবন্ধিত কিন্তু রাজনৈতিক কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত এবং নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে গোপনে সলাপরামর্শ করছে সেই সকল তথ্য উদঘাটন করার জন্য নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। তার জব্দকৃত মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন ডিভাইস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে শওকত মাহমুদের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

‎এদিন রিমান্ড শুনানিকালে সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানিকালে রিমান্ড বাতিলপূর্বক তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মো. শফিউজ্জামান ভূঁইয়া।

‎রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর কাইয়ূম হোসাইন নয়ন জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

‎মামলার বিবরণীতে বলা হয়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী। তিনি ১৯৮৮ সালে আমেরিকায় যান ও ২০০৪ সালে আমেরিকান পাসপোর্ট পান। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈধ অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্যদেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন।

‎মামলায় বলা হয়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিন্টো রোড এলাকায় প্রাডো গাড়িতে করে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ঘুরতে থাকেন। তাকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তার গাড়ি থামায়। কেন এখানে ঘোরাঘুরি করছেন, জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এজন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় এবং তার কাছে থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়। এরপর মামলায় জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশীদসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‎উল্লেখ্য, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ দীর্ঘ সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সাংবাদিক শওকত মাহমুদ পাঁচ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত সময় : ০৫:০২:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

‎সরকার উৎখাতেষড়যন্ত্রের সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শওকত মাহমুদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

‎বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিনা খন্দকার আন্না এই আদেশ দিয়েছেন।

‎গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন গত ৮ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির রমনা বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ। ‎তবে সেদিন মামলার মূল নথি না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানি দিন ধার্য করা হয়।

‎রিমান্ড আবেদনে যা বলা হয়, শওকত মাহমুদসহ আরও অজ্ঞাতনামা আসামিরা এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাংলাদেশের অখন্ডতা, সংহতি, জন-নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এবং উচ্চ পদস্থ লোকজন ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ, পরামর্শ করে বিভিন্ন স্থানে গণবিক্ষোভের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে যড়যন্ত্র, সহায়তা ও প্ররোচিত করার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে মর্মে তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে কোন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী বা অন্য কোন অনিবন্ধিত অথবা নিবন্ধিত কিন্তু রাজনৈতিক কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত এবং নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে গোপনে সলাপরামর্শ করছে সেই সকল তথ্য উদঘাটন করার জন্য নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। তার জব্দকৃত মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন ডিভাইস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে শওকত মাহমুদের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

‎এদিন রিমান্ড শুনানিকালে সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানিকালে রিমান্ড বাতিলপূর্বক তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মো. শফিউজ্জামান ভূঁইয়া।

‎রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর কাইয়ূম হোসাইন নয়ন জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

‎মামলার বিবরণীতে বলা হয়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী। তিনি ১৯৮৮ সালে আমেরিকায় যান ও ২০০৪ সালে আমেরিকান পাসপোর্ট পান। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈধ অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্যদেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন।

‎মামলায় বলা হয়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিন্টো রোড এলাকায় প্রাডো গাড়িতে করে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ঘুরতে থাকেন। তাকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তার গাড়ি থামায়। কেন এখানে ঘোরাঘুরি করছেন, জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এজন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় এবং তার কাছে থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়। এরপর মামলায় জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশীদসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‎উল্লেখ্য, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ দীর্ঘ সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন