শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জান্নাতে নবী-রাসুলদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন যারা

জান্নাতে মুমিনরা নবী ও রাসুলদের দেখতে পাবে। তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে নবী-রাসুলদের মর্যাদা ও অবস্থানে পৌঁছানো সম্ভব নয়। কোরআনের আয়াত, বিভিন্ন তাফসিরের উদ্ধৃতি সাপেক্ষে এমন মতামত দিয়েছেন আলেম ও মুফাসসিরগণ।

ইসলামী ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে, ফরজ পালন ও সুন্নত অনুসরণে অটল থাকে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সম্মানের স্থানে রাখবেন। সেখানে সে নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎ লোকদের সান্নিধ্য লাভ করবে।

ছওবান (রা.)-এর ঘটনা

তাফসিরগ্রন্থসমূহ থেকে জানা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘনিষ্ঠ সাহাবি ছওবান (রা.) নবীজীজির অনুপস্থিতিতে গভীর বেদনাবোধ করতেন। আখিরাতে নবীজি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তার এই দুশ্চিন্তাকে কেন্দ্র করে নাজিল হয় সুরা আন-নিসার আয়াত:

আর যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে তারা তাদের সাথে থাকবে, আল্লাহ যাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে। আর সাথী হিসেবে তারা হবে উত্তম। (সুরা নিসা, আয়াত :৬৯)

আলেমরা বলেন, আয়াতটির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুমিনরা জান্নাতে নবী-রাসুলদের সাক্ষাত পাবে, তাদের মজলিসে বসার সুযোগ পাবে; তবে মর্যাদায় তাদের সমতুল্য হবে না।

মর্যাদার পার্থক্য, তবু সান্নিধ্যের সুযোগ

তাফসির কুরতুবীতে উল্লেখ করা হয়েছে, জান্নাতে মর্যাদায় পার্থক্য থাকলেও মুমিনরা নবীদের সান্নিধ্য উপভোগ করবে। জান্নাতের নেয়ার ওপর ভিত্তি করে তারা একে অপরকে দেখতে পারবে, পরস্পর সাক্ষাত ও আলোচনা করতে পারবে।

মুমিনের দায়িত্ব আনুগত্য ও নেক আমলে মনোযোগী হওয়া

আলেমদের মতে, জান্নাতে নবী-রাসুলদের সান্নিধ্য পেতে হলে প্রয়োজন—

আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য।
নবীজির সুন্নতের অনুসরণ।
পাপ থেকে দূরে থাকা।
এবং নেক আমলের ধারাবাহিকতা।
অর্থাৎ, জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা শুধু নেক আমল এবং আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

জান্নাতে নবী-রাসুলদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন যারা

প্রকাশিত সময় : ১১:৫৪:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

জান্নাতে মুমিনরা নবী ও রাসুলদের দেখতে পাবে। তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে নবী-রাসুলদের মর্যাদা ও অবস্থানে পৌঁছানো সম্ভব নয়। কোরআনের আয়াত, বিভিন্ন তাফসিরের উদ্ধৃতি সাপেক্ষে এমন মতামত দিয়েছেন আলেম ও মুফাসসিরগণ।

ইসলামী ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে, ফরজ পালন ও সুন্নত অনুসরণে অটল থাকে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সম্মানের স্থানে রাখবেন। সেখানে সে নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎ লোকদের সান্নিধ্য লাভ করবে।

ছওবান (রা.)-এর ঘটনা

তাফসিরগ্রন্থসমূহ থেকে জানা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘনিষ্ঠ সাহাবি ছওবান (রা.) নবীজীজির অনুপস্থিতিতে গভীর বেদনাবোধ করতেন। আখিরাতে নবীজি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তার এই দুশ্চিন্তাকে কেন্দ্র করে নাজিল হয় সুরা আন-নিসার আয়াত:

আর যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে তারা তাদের সাথে থাকবে, আল্লাহ যাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে। আর সাথী হিসেবে তারা হবে উত্তম। (সুরা নিসা, আয়াত :৬৯)

আলেমরা বলেন, আয়াতটির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুমিনরা জান্নাতে নবী-রাসুলদের সাক্ষাত পাবে, তাদের মজলিসে বসার সুযোগ পাবে; তবে মর্যাদায় তাদের সমতুল্য হবে না।

মর্যাদার পার্থক্য, তবু সান্নিধ্যের সুযোগ

তাফসির কুরতুবীতে উল্লেখ করা হয়েছে, জান্নাতে মর্যাদায় পার্থক্য থাকলেও মুমিনরা নবীদের সান্নিধ্য উপভোগ করবে। জান্নাতের নেয়ার ওপর ভিত্তি করে তারা একে অপরকে দেখতে পারবে, পরস্পর সাক্ষাত ও আলোচনা করতে পারবে।

মুমিনের দায়িত্ব আনুগত্য ও নেক আমলে মনোযোগী হওয়া

আলেমদের মতে, জান্নাতে নবী-রাসুলদের সান্নিধ্য পেতে হলে প্রয়োজন—

আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য।
নবীজির সুন্নতের অনুসরণ।
পাপ থেকে দূরে থাকা।
এবং নেক আমলের ধারাবাহিকতা।
অর্থাৎ, জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা শুধু নেক আমল এবং আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।