মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ৮৭টি হারানো মোবাইল ফোন ফিরে পেলেন মালিকরা

  • রায়হান রোহানঃ
  • প্রকাশিত সময় : ০৩:২৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫০

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমে উদ্ধার হওয়া হারানো মোবাইল ফোন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ উদ্যোগে নগরীর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া মোট ৮৭টি মোবাইল ফোন শনাক্ত ও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সভাকক্ষে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উদ্যোগে মোবাইল ফোন হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার ড. মো: জিল্‌লুর রহমান। তিনি উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেন।

আরএমপি জানায়, সংশ্লিষ্ট থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তথ্যের ভিত্তিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনগুলো শনাক্ত করে। এসব ফোন শুধু রাজশাহী মহানগরী এলাকা থেকেই নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হারিয়ে গিয়েছিল।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার ড. মো: জিল্‌লুর রহমান বলেন, পুলিশ শুধু দৃশ্যমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজেই সীমাবদ্ধ নয়, এর বাইরেও এমন অনেক দায়িত্ব পালন করে যা সাধারণ মানুষের চোখে সবসময় ধরা পড়ে না। অনেক সময় পুলিশের কিছু কার্যক্রম নাগরিকদের কাছে নেতিবাচক মনে হলেও বাস্তবে সেগুলো নাগরিকের জীবন, নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার স্বার্থেই পরিচালিত হয়। তিনি ট্রাফিক চেকপোস্টে হেলমেট পরিধান নিশ্চিতকরণ ও যানবাহনের কাগজপত্র যাচাইয়ের উদাহরণ টেনে বলেন, এসব কার্যক্রম মূলত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্যই করা হয়।

মাদকবিরোধী কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা বিভাগ থাকলেও পুলিশ নিয়মিতভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে মাদক নির্মূলে শুধু পুলিশের একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়, পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরও জানান, নাগরিকদের কাছ থেকে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে পুলিশ দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে। এ জন্য সরাসরি ফোন করার পাশাপাশি মেসেজ বা অনলাইন মাধ্যমেও তথ্য দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরএমপি’র ফেসবুক পেজ, হটলাইন নম্বর এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগাযোগ নম্বর এ উদ্দেশ্যে চালু রয়েছে। সাম্প্রতিক উদ্ধার ও অভিযানগুলো প্রমাণ করে, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ নিরলসভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। নাগরিকদের সহযোগিতা ও উৎসাহ পেলে এসব কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মোবাইল ফোন ফিরে পাওয়া মালিকরা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাদের মতে, এ জনবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু হারানো সম্পদই ফিরে পাওয়া যায়নি, বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও সুদৃঢ় হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো: ফারুক হোসেন, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ খোরশেদ আলম পিপিএমসহ আরএমপি’র ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজশাহীতে ৮৭টি হারানো মোবাইল ফোন ফিরে পেলেন মালিকরা

প্রকাশিত সময় : ০৩:২৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমে উদ্ধার হওয়া হারানো মোবাইল ফোন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ উদ্যোগে নগরীর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া মোট ৮৭টি মোবাইল ফোন শনাক্ত ও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সভাকক্ষে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উদ্যোগে মোবাইল ফোন হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার ড. মো: জিল্‌লুর রহমান। তিনি উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেন।

আরএমপি জানায়, সংশ্লিষ্ট থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তথ্যের ভিত্তিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনগুলো শনাক্ত করে। এসব ফোন শুধু রাজশাহী মহানগরী এলাকা থেকেই নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হারিয়ে গিয়েছিল।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার ড. মো: জিল্‌লুর রহমান বলেন, পুলিশ শুধু দৃশ্যমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজেই সীমাবদ্ধ নয়, এর বাইরেও এমন অনেক দায়িত্ব পালন করে যা সাধারণ মানুষের চোখে সবসময় ধরা পড়ে না। অনেক সময় পুলিশের কিছু কার্যক্রম নাগরিকদের কাছে নেতিবাচক মনে হলেও বাস্তবে সেগুলো নাগরিকের জীবন, নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার স্বার্থেই পরিচালিত হয়। তিনি ট্রাফিক চেকপোস্টে হেলমেট পরিধান নিশ্চিতকরণ ও যানবাহনের কাগজপত্র যাচাইয়ের উদাহরণ টেনে বলেন, এসব কার্যক্রম মূলত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্যই করা হয়।

মাদকবিরোধী কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা বিভাগ থাকলেও পুলিশ নিয়মিতভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে মাদক নির্মূলে শুধু পুলিশের একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়, পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরও জানান, নাগরিকদের কাছ থেকে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে পুলিশ দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে। এ জন্য সরাসরি ফোন করার পাশাপাশি মেসেজ বা অনলাইন মাধ্যমেও তথ্য দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরএমপি’র ফেসবুক পেজ, হটলাইন নম্বর এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগাযোগ নম্বর এ উদ্দেশ্যে চালু রয়েছে। সাম্প্রতিক উদ্ধার ও অভিযানগুলো প্রমাণ করে, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ নিরলসভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। নাগরিকদের সহযোগিতা ও উৎসাহ পেলে এসব কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মোবাইল ফোন ফিরে পাওয়া মালিকরা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাদের মতে, এ জনবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু হারানো সম্পদই ফিরে পাওয়া যায়নি, বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও সুদৃঢ় হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো: ফারুক হোসেন, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ খোরশেদ আলম পিপিএমসহ আরএমপি’র ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ।