শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল দেশ, বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

জুলাই অভ্যূত্থানের নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভে উত্তাল হয়েছে সারা দেশ। পাহাড় থেকে সমতল হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে পড়েন সবাই।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতেই রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রজনতা। পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধারা। ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান তারা। ছাত্রজনতার সঙ্গে এক কাতারে মাঠে নেমেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মাহফুজ আলমরাও। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তারা। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ সড়কে নেমেছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও ডাকসু নেতারাও। হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী লড়াই বন্ধ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি ও শনিরআখড়া ছাত্র-জনতা ব্লকেড কর্মসূচি করে। এতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক,ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-ডেমরা সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত রোগী ও যাত্রীরা।

রাতে রাজধানীর উত্তরা, মিরপুরেও চলে বিক্ষোভ। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক। এক পর্যায়ে আগুন দেওয়া হয় প্রথম আলো কার্যালয়ে। এর কিছু সময় আগুন দেয়া হয় ইংরেজি পক্রিাক দ্য ডেইলি স্টারে কার্যালয়ে। আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে আটকা পড়েন বেশ কয়েকজন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এমন পরিস্থিতি চলার পর এক পর্যায়ে দমকলবাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয় সেখানে আটকে পরা গণমাধ্যমকর্মীদের। ধানমণ্ডি ৩২, ছায়ানটেও চলে অগ্নিসংযোগ।

শুধু রাজধানীতেই নয়, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে রাতেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধরা; আগুন দেয় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বাড়িতেও। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগ অফিস। বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় সিলেট ও বরিশালেও। নেত্রকোনায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিচার দাবি জানান, আন্দোলনকারীরা। হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে জামালপুরে। ওসমান হাদির নিজ জেলা ঝালকাঠিতেও বিক্ষোভে নামেন অনেকে। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল দেশ, বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

প্রকাশিত সময় : ১১:১৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

জুলাই অভ্যূত্থানের নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভে উত্তাল হয়েছে সারা দেশ। পাহাড় থেকে সমতল হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে পড়েন সবাই।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতেই রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রজনতা। পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধারা। ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান তারা। ছাত্রজনতার সঙ্গে এক কাতারে মাঠে নেমেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মাহফুজ আলমরাও। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তারা। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ সড়কে নেমেছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও ডাকসু নেতারাও। হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী লড়াই বন্ধ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি ও শনিরআখড়া ছাত্র-জনতা ব্লকেড কর্মসূচি করে। এতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক,ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-ডেমরা সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত রোগী ও যাত্রীরা।

রাতে রাজধানীর উত্তরা, মিরপুরেও চলে বিক্ষোভ। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক। এক পর্যায়ে আগুন দেওয়া হয় প্রথম আলো কার্যালয়ে। এর কিছু সময় আগুন দেয়া হয় ইংরেজি পক্রিাক দ্য ডেইলি স্টারে কার্যালয়ে। আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে আটকা পড়েন বেশ কয়েকজন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এমন পরিস্থিতি চলার পর এক পর্যায়ে দমকলবাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয় সেখানে আটকে পরা গণমাধ্যমকর্মীদের। ধানমণ্ডি ৩২, ছায়ানটেও চলে অগ্নিসংযোগ।

শুধু রাজধানীতেই নয়, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে রাতেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধরা; আগুন দেয় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বাড়িতেও। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগ অফিস। বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় সিলেট ও বরিশালেও। নেত্রকোনায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিচার দাবি জানান, আন্দোলনকারীরা। হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে জামালপুরে। ওসমান হাদির নিজ জেলা ঝালকাঠিতেও বিক্ষোভে নামেন অনেকে। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল।