শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনেরস সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি স্ক্রিনশট বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

হান্নান মাসউদের চাচা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া উপজেলার সমন্বয় কমিটি প্রধান সমন্বয়কারী হেডমাস্টার শামছল তিব্রিজ এই সাধারণ ডায়েরিটা করেন।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪ মিনিটে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে আবদুল হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।এছাড়া একই দিন বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ‘Israt Raihan Ome’ নামের আরেকটি ফেসবুক আইডি থেকে এনসিপির এক কর্মীর মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জিডিতে মোট সাতজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তারা বিভিন্ন সময় নানা কৌশলে আবদুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। এতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, বিবাদীরা যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে।

অভিযুক্তরা হলেন, হাতিয়া উপজেলার কান্তি লালের ছেলে রুপক নন্দী (২৫), চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ (৪৬), তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমি (২৭), সংকর চন্দ্রের ছেলে প্রেম নাল (২৫), তোফায়েল সেরাংয়ের ছেলে নুর হোসেন রহিম (২৬), সংকর চন্দ্র দাসের ছেলে বাবুলাল (৩২) ও বেলায়েত হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (৩২)।

ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলো হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি ও তার অনুসারী রুপক নন্দীর ফেইসবুক থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্ক্রিনশটে দেখা যায় মেসেঞ্জারে ইসরাত রায়হান অমি লিখেছেন, ‘আবদুল হালিম আজাদকে নাকি গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে কতিপয় নেতা। হান্নান বল আর তানভির বল যেই নেতাই হোক, খোদার কসম করে বললাম, উত্তর অঞ্চলে চলাচল হারাম হয়ে যাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা ডাইরেক গিলে খেয়ে ফেলবে। এখনো ধৈর্য ধরে আছি। তোর নেতাকে এটা কপি করে পাঠাইছ।’

অন্যদিকে, রুপক নন্দী তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘হান্নান আগুন নিয়ে খেলা করো না, পরে পস্তাতে হবে। যারা আবদুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যানকে ভালো জানে, তারা কখনো তোমাকে আস্ত রাখবে না। ভোট করা ঢুকাই দেবে ভেতর দিয়ে। এখনো শান্ত আছি। আমার নেতাকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে উত্তরাঞ্চলে তোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করব।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ ও তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমির মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে, অভিযুক্ত রুপক নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এ ধরনের হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক। বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্ক্রিনশটগুলো দেখা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি

প্রকাশিত সময় : ১১:২৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনেরস সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি স্ক্রিনশট বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

হান্নান মাসউদের চাচা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া উপজেলার সমন্বয় কমিটি প্রধান সমন্বয়কারী হেডমাস্টার শামছল তিব্রিজ এই সাধারণ ডায়েরিটা করেন।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪ মিনিটে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে আবদুল হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।এছাড়া একই দিন বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ‘Israt Raihan Ome’ নামের আরেকটি ফেসবুক আইডি থেকে এনসিপির এক কর্মীর মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জিডিতে মোট সাতজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তারা বিভিন্ন সময় নানা কৌশলে আবদুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। এতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, বিবাদীরা যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে।

অভিযুক্তরা হলেন, হাতিয়া উপজেলার কান্তি লালের ছেলে রুপক নন্দী (২৫), চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ (৪৬), তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমি (২৭), সংকর চন্দ্রের ছেলে প্রেম নাল (২৫), তোফায়েল সেরাংয়ের ছেলে নুর হোসেন রহিম (২৬), সংকর চন্দ্র দাসের ছেলে বাবুলাল (৩২) ও বেলায়েত হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (৩২)।

ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলো হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি ও তার অনুসারী রুপক নন্দীর ফেইসবুক থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্ক্রিনশটে দেখা যায় মেসেঞ্জারে ইসরাত রায়হান অমি লিখেছেন, ‘আবদুল হালিম আজাদকে নাকি গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে কতিপয় নেতা। হান্নান বল আর তানভির বল যেই নেতাই হোক, খোদার কসম করে বললাম, উত্তর অঞ্চলে চলাচল হারাম হয়ে যাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা ডাইরেক গিলে খেয়ে ফেলবে। এখনো ধৈর্য ধরে আছি। তোর নেতাকে এটা কপি করে পাঠাইছ।’

অন্যদিকে, রুপক নন্দী তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘হান্নান আগুন নিয়ে খেলা করো না, পরে পস্তাতে হবে। যারা আবদুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যানকে ভালো জানে, তারা কখনো তোমাকে আস্ত রাখবে না। ভোট করা ঢুকাই দেবে ভেতর দিয়ে। এখনো শান্ত আছি। আমার নেতাকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে উত্তরাঞ্চলে তোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করব।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ ও তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমির মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে, অভিযুক্ত রুপক নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এ ধরনের হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক। বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্ক্রিনশটগুলো দেখা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’