বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীতে স্বাগত মিছিল করেছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস্য ভবন ও শাহবাগ এলাকায় দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতাদের উদ্যোগে এই মিছিল হয়। এ ছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করেছেন।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিজি হাসপাতাল) বটতলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে মৎস্য ভবনে গিয়ে বিএনপির মিছিল শেষ হয়। ছাত্রদল সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়ালের সভাপতিত্বে মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এ সময় আরও ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির আইটি সেলের সদস্য মাহফুজ কবির মুক্তাসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, চিকিৎসক ও ছাত্রদল নেতারা।
সমাবেশে রিজভী বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজ দেশ বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তাঁর আগমন উপলক্ষে সারা দেশে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে এবং লাখ লাখ মানুষ তাঁকে এক নজর দেখার জন্য ঢাকায় আসছেন। তিনি বলেন, ২০০৭ সালের মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার ছিল শেখ হাসিনারই সমর্থিত সরকার। সেই সরকারের সময় বিনা কারণে তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং নির্মম শারীরিক নির্যাতন করা হয়। ওই নির্যাতনের পর তাঁকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। রিজভী বলেন, তারেক রহমান চিকিৎসার
জন্য বিদেশে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে দেশে ফিরতে বাধা দেয়। ১৭ বছর ধরে তাঁকে তাঁর পরিবার, দেশ ও মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। এমনকি ছোট ভাইয়ের লাশ ও জানাজাতেও অংশ নিতে পারেননি। এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা দায়ী।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জিয়া পরিবার বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবার। এই পরিবারই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন নির্ভীক সৈনিকের মতো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন। এই পরিবারকে ধ্বংস করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা কোনো চক্রান্ত বাদ দেয়নি।
তারেক রহমানের আগমন প্রসঙ্গে তিনি জানান, ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে পৌঁছে বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাওয়ার পথে ৩০০ ফুট এলাকায় উপস্থিত জনসমাগমের উদ্দেশে একটি সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। এরপর তিনি তাঁর মাকে দেখে বাসায় ফিরবেন।
নিরাপত্তা বিষয়ে রিজভী বলেন, আমরা সরকারের কাছে তাঁর পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছি। সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছেÑ তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। দলীয়ভাবেও নেতাকর্মীরা তাঁর নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করবেন, ইনশা আল্লাহ। তিনি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনসমাগম যত বড়ই হোক, সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে হবে। রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্রিয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাবেন। কোনো বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতা করা যাবে না। তিনি তাঁর মাকে দেখে বাসায় পৌঁছানো পর্যন্ত সবাইকে শৃঙ্খলার সঙ্গে অবস্থান করতে হবে।

ডেইলি দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 






















