তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছে বিমান দুর্ঘটনায় লিবিয়ার সেনাপ্রধান মোহাম্মেদ আলি আহমেদ আল-হাদ্দাদ নিহত হয়েছেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা উচ্চপদস্থ চার লিবিয়ান কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে আঙ্কারার এসেনবোগা বিমানবন্দর থেকে ত্রিপোলির উদ্দেশে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনাপ্রধান বহনকারী প্রাইভেট জেটটি বিধ্বস্ত হয়।
দুর্ঘটনায় নিহত অন্যরা হলেন- গ্রাউন্ড ফোর্সেস চিফ অব স্টাফ আল-ফিতৌরি ঘারিবিল, মিলিটারি ম্যানুফ্যাকচারিং অথরিটির পরিচালক মাহমুদ আল-কাতাউই, আল-হাদ্দাদের উপদেষ্টা মুহাম্মদ আল-আসাউই দিয়াব এবং মিলিটারি ফটোগ্রাফার মুহাম্মদ ওমর আহমেদ মাহজুব।
এটিকে ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ ডেবেইবা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা জাতির, সামরিক প্রতিষ্ঠানের এবং সাধারণ মানুষের জন্য একটি বড় ক্ষতি। আমরা এমন ব্যক্তিদের হারালাম যারা আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধ এবং দেশপ্রেমের সঙ্গে তাদের দেশকে সেবা করেছেন।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কমিউনিকেশনস ডিরেক্টরেটের প্রধান বুরহানেত্তিন দুরান জানান, দাসো ফ্যালকন-৫০ মডেলের জেটটি বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণের অনুরোধ করেছিল। বিমানটি আঙ্কারায় ফেরার প্রস্তুতির সময় অবতরণ পর্যায়ে রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া জানান, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ১০ মিনিটে উড্ডয়নের পর রাত ৮টা ৫২ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে আঙ্কারার হায়মানা জেলার কেসিককাভাক গ্রামের প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়, যা রাজধানী থেকে প্রায় ৭৪ কিলোমিটার দূরে।
তবে প্রাথমিক তদন্তে বিমান দুর্ঘটনায় নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা। তাদের ভাষায়, দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ প্রযুক্তিগত ত্রুটি। এ ঘটনায় আঙ্কারার প্রধান প্রসিকিউটর কার্যালয় আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে লিবিয়ার সরকারও তদন্তে সহযোগিতার জন্য একটি প্রতিনিধিদল আঙ্কারায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুর্ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন এর একদিন আগে লিবিয়ায় নিজেদের সেনা মোতায়েনের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তুরস্কের পার্লামেন্ট।
আল জাজিরা জানিয়েছে, তুর্কি সমকক্ষ ও অন্যান্য সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করতে আঙ্কারায় সফরে এসেছিলেন আল-হাদ্দাদ ও তার সঙ্গীরা। তারা যে প্রাইভেট জেটে করে তুরস্ক সফরে আসেন, সেটি লিবিয়া সরকারের ভাড়া করা বিমান।
এদিকে আল-হাদ্দাদের আকস্মিক মৃত্যুতে লিবিয়াজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে; সব সরকারি ভবনে অর্ধনমিত রাখা হয়েছে জাতীয় পতাকা এবং স্থগিত করা হয়েছে সব ধরনের আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান।

ডেইলি দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 























