শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্তানের প্রতি বাবার আবেগঘন উপদেশ

হে আমার সন্তান! জীবন কোনো খেলনা নয়, যেখানে অকারণে হাসি-ঠাট্টা করে সময় নষ্ট করা যায়। অন্তর যদি সচেতন না থাকে, তবে বাহ্যিক হাসিও অনেক সময় হৃদয়ের কঠোরতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই কারণ ছাড়া হাসি নয়, বরং হাসি হোক এমন— যা আল্লাহর স্মরণ ভুলিয়ে না দেয়।

হে আমার সন্তান! শিষ্টাচারহীন চলাফেরা মানুষকে ছোট করে দেয়। একজন মুমিনের চলন-বলনেই তার ইমানের পরিচয় ফুটে ওঠে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, উত্তম চরিত্রই মুমিনের প্রকৃত অলংকার। তাই প্রতিটি পদক্ষেপে হোক সংযম, প্রতিটি আচরণে হোক লজ্জাবোধ।

হে আমার সন্তান! যে বিষয়ে তোমার কোনো প্রয়োজন নেই— সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। অপ্রয়োজনীয় কথা অন্তরকে অশান্ত করে এবং সময়ের বরকত নষ্ট করে। যে কম কথা বলে, সে কম ভুল করে; আর যে নীরব থাকতে জানে, সে অনেক বিপদ থেকে নিরাপদ থাকে।

মনে রেখো!

হে আমার সন্তান! যে যেমন বপন করে, তেমনই ফসল কাটে। ভালো কাজের বীজ বপন করলে শান্তি ফলবে, আর মন্দ কাজের বীজ বপন করলে অনুতাপ ছাড়া কিছুই জুটবে না। যে ভালো কথা বলে, সে লাভবান হয়—মানুষের কাছেও, আল্লাহর কাছেও। আর যে মিথ্যা কথা বলে, সে নিজেই নিজের পাপের বোঝা বাড়ায়।

হে আমার সন্তান! জিহ্বা ছোট হলেও তার ক্ষতি ভয়ংকর। যে নিজের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সে শেষ পর্যন্ত লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়। এজন্যই সালাফে সালেহিনরা বলতেন— কথা বলার আগে ভাবো, নীরব থাকলে ক্ষতি না হলে চুপ থাকাই নিরাপদ।

আর সবশেষে ধৈর্য—

ধৈর্য এমন এক আলো, যা অন্ধকার পথেও দিশা দেখায়। যে ধৈর্য ধারণ করে, সে তাড়াহুড়া করে না, হতাশ হয় না। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য—ধৈর্যশীল ব্যক্তি একদিন অবশ্যই তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছায়।

তাই হে প্রিয় সন্তান! নিজেকে সংযত করো, জিহ্বাকে পাহারা দাও, চরিত্রকে সুন্দর করো আর ধৈর্যকে সঙ্গী করো—ইনশাআল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টাই হবে তোমার জন্য শান্তিময়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সন্তানের প্রতি বাবার আবেগঘন উপদেশ

প্রকাশিত সময় : ১১:৫৩:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

হে আমার সন্তান! জীবন কোনো খেলনা নয়, যেখানে অকারণে হাসি-ঠাট্টা করে সময় নষ্ট করা যায়। অন্তর যদি সচেতন না থাকে, তবে বাহ্যিক হাসিও অনেক সময় হৃদয়ের কঠোরতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই কারণ ছাড়া হাসি নয়, বরং হাসি হোক এমন— যা আল্লাহর স্মরণ ভুলিয়ে না দেয়।

হে আমার সন্তান! শিষ্টাচারহীন চলাফেরা মানুষকে ছোট করে দেয়। একজন মুমিনের চলন-বলনেই তার ইমানের পরিচয় ফুটে ওঠে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, উত্তম চরিত্রই মুমিনের প্রকৃত অলংকার। তাই প্রতিটি পদক্ষেপে হোক সংযম, প্রতিটি আচরণে হোক লজ্জাবোধ।

হে আমার সন্তান! যে বিষয়ে তোমার কোনো প্রয়োজন নেই— সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। অপ্রয়োজনীয় কথা অন্তরকে অশান্ত করে এবং সময়ের বরকত নষ্ট করে। যে কম কথা বলে, সে কম ভুল করে; আর যে নীরব থাকতে জানে, সে অনেক বিপদ থেকে নিরাপদ থাকে।

মনে রেখো!

হে আমার সন্তান! যে যেমন বপন করে, তেমনই ফসল কাটে। ভালো কাজের বীজ বপন করলে শান্তি ফলবে, আর মন্দ কাজের বীজ বপন করলে অনুতাপ ছাড়া কিছুই জুটবে না। যে ভালো কথা বলে, সে লাভবান হয়—মানুষের কাছেও, আল্লাহর কাছেও। আর যে মিথ্যা কথা বলে, সে নিজেই নিজের পাপের বোঝা বাড়ায়।

হে আমার সন্তান! জিহ্বা ছোট হলেও তার ক্ষতি ভয়ংকর। যে নিজের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সে শেষ পর্যন্ত লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়। এজন্যই সালাফে সালেহিনরা বলতেন— কথা বলার আগে ভাবো, নীরব থাকলে ক্ষতি না হলে চুপ থাকাই নিরাপদ।

আর সবশেষে ধৈর্য—

ধৈর্য এমন এক আলো, যা অন্ধকার পথেও দিশা দেখায়। যে ধৈর্য ধারণ করে, সে তাড়াহুড়া করে না, হতাশ হয় না। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য—ধৈর্যশীল ব্যক্তি একদিন অবশ্যই তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছায়।

তাই হে প্রিয় সন্তান! নিজেকে সংযত করো, জিহ্বাকে পাহারা দাও, চরিত্রকে সুন্দর করো আর ধৈর্যকে সঙ্গী করো—ইনশাআল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টাই হবে তোমার জন্য শান্তিময়।