মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নওয়াজউদ্দিনের সঙ্গে সেই দৃশ্যে কেন না করেছিলেন এলনাজ, জানালেন

এলনাজ নরৌজি। বলিউডে নিজের মতের ওপর ভর করে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া এক অভিনেত্রীর নাম। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি জানতেন, চমক নয়, চিত্রনাট্যই শেষ কথা। তাই পর্দায় অন্তরঙ্গ দৃশ্য নিয়েও তাঁর অবস্থান পরিষ্কার, ‘শুধু দেখানোর জন্য করব না, করব চিত্রনাট্যের সত্যিকারের প্রয়োজনে।

’ আজও এই বিশ্বাস নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে বলিপাড়ায়।
এক সাক্ষাৎকারে এলনাজ জানিয়েছেন, পর্দায় ঘনিষ্ঠ বা অন্তরঙ্গ দৃশ্য করার সিদ্ধান্ত কখনওই তাঁর কাছে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এর সহজ বিষয় নয়। বরং তিনি দেখেন, দৃশ্যটি কতটা প্রয়োজনীয়। তাঁর ভাষায়, “চুমুর দৃশ্য হোক অথবা চূড়ান্ত ঘনিষ্ঠ দৃশ্য -দেখি এই বিষয়টা গল্পের জন্য কতটা জরুরি? চরিত্র বা পরিস্থিতি বদলায়? এই বিষয়টি এরপর গল্পটাকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে? যদি এগোয়, তবে এসব দৃশ্য থাকা উচিত।

না হলে কেন থাকবে?” এখানেই বোঝা যায়, চটকদারতা নয়, বিবেচনাকেই প্রাধান্য দেন অভিনেত্রী।
এলনাজ আরও বলেন, সুসংগঠিত টিম, সংবেদনশীল পরিচালক আর শক্তিশালী চিত্রনাট্য থাকলে অনেক জিনিসই স্পষ্ট হয়ে যায়। তবু কোথাও প্রশ্ন থাকলে তিনি প্রশ্ন করতে, মুখ খুলতে পিছপা নন। “এটা তো যৌথ কাজ, তাই প্রশ্ন থাকলে পরিচালককে বলতেই পারি,” স্পষ্ট মত তাঁর।

সবচেয়ে আলোচিত তাঁর ‘স্যাক্রেড গেমস ২’-এর অভিজ্ঞতা। সেখানে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য ছিল চিত্রনাট্যে। সেই দৃশ্য করতে রাজি না হয়ে প্রজেক্টটাই ছেড়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যায় পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের সংবেদনশীল আচরণে। তিনি এলনাজ ও তাঁর টিমকে বাড়িতে আমন্ত্রণ করেন, খোলামেলা আলোচনা করেন দৃশ্যটি নিয়ে।

কীভাবে শুট হবে, কতটা নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখা হবে তখন, সব ব্যাখ্যা করেন। সেখানে এলনাজ বোঝেন, দৃশ্যটি অকারণ নয়, গল্পের প্রয়োজনেই রয়েছে, এবং তাঁর স্বস্তিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

তবে শেষ পর্যন্ত দৃশ্যটি রাখা হয়, কিন্তু তার পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয় অভিনেত্রীর মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য ও সম্মান। আর এখানেই এলনাজের বক্তব্য আরও শক্তিশালী হয় বোল্ড কন্টেন্ট মানেই চটক নয়; প্রাসঙ্গিকতা, সংবেদনশীলতা ও সম্মানের জায়গা থাকলেই তা অর্থবহ।

বলা যায়, এলনাজ নরৌজি দেখিয়ে দিলেন ‘না’ বলার সাহস, নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকা এবং যুক্তির উপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সত্যিকারের পেশাদারিত্ব। তাই বলতেই হয়, এটাই তাঁর নীরব অথচ আত্মবিশ্বাসের মূল শক্তি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

এনসিপির মুখপাত্র হলেন আসিফ মাহমুদ, করবেন না নির্বাচন

নওয়াজউদ্দিনের সঙ্গে সেই দৃশ্যে কেন না করেছিলেন এলনাজ, জানালেন

প্রকাশিত সময় : ১০:১২:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

এলনাজ নরৌজি। বলিউডে নিজের মতের ওপর ভর করে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া এক অভিনেত্রীর নাম। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি জানতেন, চমক নয়, চিত্রনাট্যই শেষ কথা। তাই পর্দায় অন্তরঙ্গ দৃশ্য নিয়েও তাঁর অবস্থান পরিষ্কার, ‘শুধু দেখানোর জন্য করব না, করব চিত্রনাট্যের সত্যিকারের প্রয়োজনে।

’ আজও এই বিশ্বাস নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে বলিপাড়ায়।
এক সাক্ষাৎকারে এলনাজ জানিয়েছেন, পর্দায় ঘনিষ্ঠ বা অন্তরঙ্গ দৃশ্য করার সিদ্ধান্ত কখনওই তাঁর কাছে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এর সহজ বিষয় নয়। বরং তিনি দেখেন, দৃশ্যটি কতটা প্রয়োজনীয়। তাঁর ভাষায়, “চুমুর দৃশ্য হোক অথবা চূড়ান্ত ঘনিষ্ঠ দৃশ্য -দেখি এই বিষয়টা গল্পের জন্য কতটা জরুরি? চরিত্র বা পরিস্থিতি বদলায়? এই বিষয়টি এরপর গল্পটাকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে? যদি এগোয়, তবে এসব দৃশ্য থাকা উচিত।

না হলে কেন থাকবে?” এখানেই বোঝা যায়, চটকদারতা নয়, বিবেচনাকেই প্রাধান্য দেন অভিনেত্রী।
এলনাজ আরও বলেন, সুসংগঠিত টিম, সংবেদনশীল পরিচালক আর শক্তিশালী চিত্রনাট্য থাকলে অনেক জিনিসই স্পষ্ট হয়ে যায়। তবু কোথাও প্রশ্ন থাকলে তিনি প্রশ্ন করতে, মুখ খুলতে পিছপা নন। “এটা তো যৌথ কাজ, তাই প্রশ্ন থাকলে পরিচালককে বলতেই পারি,” স্পষ্ট মত তাঁর।

সবচেয়ে আলোচিত তাঁর ‘স্যাক্রেড গেমস ২’-এর অভিজ্ঞতা। সেখানে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য ছিল চিত্রনাট্যে। সেই দৃশ্য করতে রাজি না হয়ে প্রজেক্টটাই ছেড়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যায় পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের সংবেদনশীল আচরণে। তিনি এলনাজ ও তাঁর টিমকে বাড়িতে আমন্ত্রণ করেন, খোলামেলা আলোচনা করেন দৃশ্যটি নিয়ে।

কীভাবে শুট হবে, কতটা নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখা হবে তখন, সব ব্যাখ্যা করেন। সেখানে এলনাজ বোঝেন, দৃশ্যটি অকারণ নয়, গল্পের প্রয়োজনেই রয়েছে, এবং তাঁর স্বস্তিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

তবে শেষ পর্যন্ত দৃশ্যটি রাখা হয়, কিন্তু তার পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয় অভিনেত্রীর মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য ও সম্মান। আর এখানেই এলনাজের বক্তব্য আরও শক্তিশালী হয় বোল্ড কন্টেন্ট মানেই চটক নয়; প্রাসঙ্গিকতা, সংবেদনশীলতা ও সম্মানের জায়গা থাকলেই তা অর্থবহ।

বলা যায়, এলনাজ নরৌজি দেখিয়ে দিলেন ‘না’ বলার সাহস, নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকা এবং যুক্তির উপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সত্যিকারের পেশাদারিত্ব। তাই বলতেই হয়, এটাই তাঁর নীরব অথচ আত্মবিশ্বাসের মূল শক্তি।