মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জরুরি সম্মেলনে বসছেন ইউরোপীয় নেতারা

ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনার পরিপেক্ষিতে জরুরি সম্মেলন ডেকেছেন ইউরোপীয় নেতারা। আগামী সপ্তাহে এই সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে বাদ দেওয়া হতে পারে, বিষয়টি নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, “ইউরোপকে অবশ্যই ন্যাটোতে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলোগ জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনায় ইউরোপীয় নেতাদের পরামর্শ নেওয়া হবে, তবে তারা সরাসরি এতে অংশ নিতে পারবেন না।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ হোয়াইট হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সৌদি আরবে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনকেও বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশ এই ধরনের কোনো আমন্ত্রণ পায়নি।

ইউরোপ মিনস্ক চুক্তিবদ্ধ, যা ২০১৫ সালে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ব্যর্থ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছিল। ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধ বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াতে পারে কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত মন্তব্য করেছেন যে, পূর্ববর্তী আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে কারণ অনেক পক্ষ জড়িত ছিল

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনে শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একত্রিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এই মাসের শেষে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ইউরোপীয় নেতাদের মতামত নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে।

স্যার কিয়ার স্টারমার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এলে ইউরোপীয় নেতাদের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত থাকবেন।

কিয়ার স্টারমার বলেছেন, যুক্তরাজ্য ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একসঙ্গে রাখার জন্য কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, উভয়ই বহিরাগত শত্রুদের থেকে জোটের কোনো বিভাজনকে বিভ্রান্ত করতে দেবে না।

তিনি বলেন, “আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি এমন এক মুহূর্ত যেখানে আমরা আজকের বিশ্বের বাস্তবতা এবং রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা যে হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি তার সঙ্গে জড়িত।”

“এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে এবং রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা যে হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি তা মোকাবেলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করার সময় ইউরোপকে ন্যাটোতে আরো বৃহত্তর ভূমিকা নিতে হবে।”

পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্লা সিকোরস্কি বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তৃতাকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনের সময় এসেছে”। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো সম্পর্ক বদলে যাচ্ছে এবং ইউরোপকে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।”

জেলেনস্কি আরো বলেন, “আমাদের অগোচরে কোনো চুক্তি হলে তা আমরা কখনোই মেনে নেব না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জরুরি সম্মেলনে বসছেন ইউরোপীয় নেতারা

প্রকাশিত সময় : ০৪:৫২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনার পরিপেক্ষিতে জরুরি সম্মেলন ডেকেছেন ইউরোপীয় নেতারা। আগামী সপ্তাহে এই সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে বাদ দেওয়া হতে পারে, বিষয়টি নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, “ইউরোপকে অবশ্যই ন্যাটোতে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলোগ জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনায় ইউরোপীয় নেতাদের পরামর্শ নেওয়া হবে, তবে তারা সরাসরি এতে অংশ নিতে পারবেন না।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ হোয়াইট হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সৌদি আরবে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনকেও বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশ এই ধরনের কোনো আমন্ত্রণ পায়নি।

ইউরোপ মিনস্ক চুক্তিবদ্ধ, যা ২০১৫ সালে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ব্যর্থ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছিল। ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধ বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াতে পারে কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত মন্তব্য করেছেন যে, পূর্ববর্তী আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে কারণ অনেক পক্ষ জড়িত ছিল

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনে শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একত্রিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এই মাসের শেষে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ইউরোপীয় নেতাদের মতামত নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে।

স্যার কিয়ার স্টারমার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এলে ইউরোপীয় নেতাদের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত থাকবেন।

কিয়ার স্টারমার বলেছেন, যুক্তরাজ্য ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একসঙ্গে রাখার জন্য কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, উভয়ই বহিরাগত শত্রুদের থেকে জোটের কোনো বিভাজনকে বিভ্রান্ত করতে দেবে না।

তিনি বলেন, “আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি এমন এক মুহূর্ত যেখানে আমরা আজকের বিশ্বের বাস্তবতা এবং রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা যে হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি তার সঙ্গে জড়িত।”

“এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে এবং রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা যে হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি তা মোকাবেলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করার সময় ইউরোপকে ন্যাটোতে আরো বৃহত্তর ভূমিকা নিতে হবে।”

পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্লা সিকোরস্কি বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তৃতাকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনের সময় এসেছে”। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো সম্পর্ক বদলে যাচ্ছে এবং ইউরোপকে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।”

জেলেনস্কি আরো বলেন, “আমাদের অগোচরে কোনো চুক্তি হলে তা আমরা কখনোই মেনে নেব না।