সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে উত্তাল তুরস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে চলছে তুমুল বিক্ষোভ প্রতিবাদ।

আজ রবিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তুমুল সংঘাত-সহিংসতায় উত্তাল তুরস্কের রাজপথ। দেশটির বিরোধী দল এই গ্রেপ্তারের ঘটনাকে তুর্কি গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন।

এদিকে তুর্কি সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিন ইস্তাম্বুলে সিটি হলের সামনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান, টিয়ার শেল ছোঁড়ে পুলিশ। এরপর উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় শনিবার দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আদালতে ইমামোগলুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় আদালতের বাইরেও তার সমর্থকদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায় বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে ।

এর আগে গত বুধবার স্থানীয় সময় সকালে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্য একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। এই গ্রেপ্তারের পর থেকেই ইস্তাম্বুলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় হাজার হাজার মানুষ পুলিশ সদর দফতরের কাছে জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

জানা গেছে, ৫৪ বছর বয়সী ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলু গত কয়েক মাসে এরদোয়ান ও তার সরকারের তীব্র সমালোচনা চালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বুধবার গ্রেপ্তারের আগেও তিনি বলেছিলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাল ছাড়বেন না এবং চাপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকবেন।

তবে, তুরস্ক জুড়ে এই বিক্ষোভ দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে বলে ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে সমালোচকরা বলছেন, সহিংসতামূলক এই পদক্ষেপগুলো অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, যা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিরোধী পক্ষের মতামত দমন এবং ক্ষমতা সংহত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইমামোগলু বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) একজন জনপ্রিয় নেতা। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের একজন কট্টর সমালোচক তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে উত্তাল তুরস্ক

প্রকাশিত সময় : ১০:৫২:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে চলছে তুমুল বিক্ষোভ প্রতিবাদ।

আজ রবিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তুমুল সংঘাত-সহিংসতায় উত্তাল তুরস্কের রাজপথ। দেশটির বিরোধী দল এই গ্রেপ্তারের ঘটনাকে তুর্কি গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন।

এদিকে তুর্কি সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিন ইস্তাম্বুলে সিটি হলের সামনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান, টিয়ার শেল ছোঁড়ে পুলিশ। এরপর উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় শনিবার দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আদালতে ইমামোগলুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় আদালতের বাইরেও তার সমর্থকদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায় বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে ।

এর আগে গত বুধবার স্থানীয় সময় সকালে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্য একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। এই গ্রেপ্তারের পর থেকেই ইস্তাম্বুলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় হাজার হাজার মানুষ পুলিশ সদর দফতরের কাছে জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

জানা গেছে, ৫৪ বছর বয়সী ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলু গত কয়েক মাসে এরদোয়ান ও তার সরকারের তীব্র সমালোচনা চালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বুধবার গ্রেপ্তারের আগেও তিনি বলেছিলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাল ছাড়বেন না এবং চাপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকবেন।

তবে, তুরস্ক জুড়ে এই বিক্ষোভ দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে বলে ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে সমালোচকরা বলছেন, সহিংসতামূলক এই পদক্ষেপগুলো অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, যা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিরোধী পক্ষের মতামত দমন এবং ক্ষমতা সংহত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইমামোগলু বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) একজন জনপ্রিয় নেতা। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের একজন কট্টর সমালোচক তিনি।