সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমার-থাইল্যান্ডে নিহত ১৫০

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। শুক্রবারের এই ভয়াবহ ভূ-কম্পনে কেবল মিয়ানমারেই ১৪৪ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

অন্যদিকে এই ভূমিকম্পের কারণে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। যেখানে উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের সন্ধান করছে। এ ঘটনায় ১১৭ জন নিখোঁজ ও ৫ জন নিহত হয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (টঝএঝ) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৭ এবং এটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় সংঘটিত হয়েছে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্দালয়ের ১৭ কিলোমিটার দূরে।

মান্দালয় শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এটি মিয়ানমারের প্রাচীন রাজকীয় রাজধানী এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির কেন্দ্র।

স্থানীয় বাসিন্দারা ও সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে এদিন দেশটির বহু ভবন, সেতু ও রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি তাদের অফিশিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, মিয়ানমারে কমপক্ষে ১৪৪ জন নিহত ও ৭৩২ জন আহত হয়েছেন।

মান্দালয়ের একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে আমরা সবাই দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। আমার সামনেই পাঁচতলা একটি ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। পুরো শহরের মানুষ রাস্তায় এসে অবস্থান নিয়েছে, কেউ আর ভবনে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছে না’।

একটি উদ্ধারকারী সংস্থার সদস্য জানিয়েছেন, ‘আমরা কেবল পাইনমানার শহরে ৬০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন’।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার ইতোমধ্যে বিদ্রোহীদের দমন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে। যা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

তবে জান্তা সরকার ইতোমধ্যেই দেশটির ৬টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। অঞ্চলগুলো হলো- সাগাইং, মান্দালাই, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেইপিদো।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির তদন্ত করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ সমন্বয় শুরু করবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমার-থাইল্যান্ডে নিহত ১৫০

প্রকাশিত সময় : ১২:৩৩:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। শুক্রবারের এই ভয়াবহ ভূ-কম্পনে কেবল মিয়ানমারেই ১৪৪ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

অন্যদিকে এই ভূমিকম্পের কারণে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। যেখানে উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের সন্ধান করছে। এ ঘটনায় ১১৭ জন নিখোঁজ ও ৫ জন নিহত হয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (টঝএঝ) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৭ এবং এটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় সংঘটিত হয়েছে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্দালয়ের ১৭ কিলোমিটার দূরে।

মান্দালয় শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এটি মিয়ানমারের প্রাচীন রাজকীয় রাজধানী এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির কেন্দ্র।

স্থানীয় বাসিন্দারা ও সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে এদিন দেশটির বহু ভবন, সেতু ও রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি তাদের অফিশিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, মিয়ানমারে কমপক্ষে ১৪৪ জন নিহত ও ৭৩২ জন আহত হয়েছেন।

মান্দালয়ের একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে আমরা সবাই দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। আমার সামনেই পাঁচতলা একটি ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। পুরো শহরের মানুষ রাস্তায় এসে অবস্থান নিয়েছে, কেউ আর ভবনে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছে না’।

একটি উদ্ধারকারী সংস্থার সদস্য জানিয়েছেন, ‘আমরা কেবল পাইনমানার শহরে ৬০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন’।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার ইতোমধ্যে বিদ্রোহীদের দমন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে। যা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

তবে জান্তা সরকার ইতোমধ্যেই দেশটির ৬টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। অঞ্চলগুলো হলো- সাগাইং, মান্দালাই, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেইপিদো।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির তদন্ত করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ সমন্বয় শুরু করবেন।