সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: শিশুসহ নিহত ৮, আহত ৩৫

ভারতের হামলায় পাকিস্তানে শিশুসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। হামলায় আহতের সংখ্যাও ১২ জন থেকে বেড়ে ৩৫ জনে পৌঁছেছে। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

পাকিস্তান আইএসপিআরের মহাপরিচালক ও সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ তাদের দেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলায় নিহতের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে।

ভারতের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন ও জিও নিউজের খবরে এসব হতাহতের এই সংখ্যার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

৭ মে পাকিস্তানের ভেতরে ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারতের সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে ভারত বলছে, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পহেলাগামে হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। কোনো বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি।

আইএসপিআর কর্মকর্তা শরিফ বলেছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানা স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি মসজিদ রয়েছে।

তিনি বলেন, “এটি আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন।”

বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও হামলা পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন, যার মধ্যে ২৫ জনই পর্যটক; একজন ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা। এই হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয় ইসলামাবাদ। এর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে পাকিস্তান বরাবরই বলে আসছে, পহেলগাম হামলার সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই। উপরন্তু, ভারতের কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে তা দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় তারা।

সেই থেকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যেই ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা করল ভারত। এখন পাকিস্তান কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় বা জবাব দেয়, তারপর ওপর নির্ভর করছে বাকিটা।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক বলে বর্ণনা করে শিগগির তা বন্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভারত-পাকিস্তানের উভয়ের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: শিশুসহ নিহত ৮, আহত ৩৫

প্রকাশিত সময় : ০৮:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

ভারতের হামলায় পাকিস্তানে শিশুসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। হামলায় আহতের সংখ্যাও ১২ জন থেকে বেড়ে ৩৫ জনে পৌঁছেছে। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

পাকিস্তান আইএসপিআরের মহাপরিচালক ও সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ তাদের দেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলায় নিহতের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে।

ভারতের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন ও জিও নিউজের খবরে এসব হতাহতের এই সংখ্যার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

৭ মে পাকিস্তানের ভেতরে ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারতের সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে ভারত বলছে, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পহেলাগামে হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। কোনো বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি।

আইএসপিআর কর্মকর্তা শরিফ বলেছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানা স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি মসজিদ রয়েছে।

তিনি বলেন, “এটি আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন।”

বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও হামলা পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন, যার মধ্যে ২৫ জনই পর্যটক; একজন ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা। এই হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয় ইসলামাবাদ। এর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে পাকিস্তান বরাবরই বলে আসছে, পহেলগাম হামলার সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই। উপরন্তু, ভারতের কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে তা দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় তারা।

সেই থেকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যেই ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা করল ভারত। এখন পাকিস্তান কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় বা জবাব দেয়, তারপর ওপর নির্ভর করছে বাকিটা।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক বলে বর্ণনা করে শিগগির তা বন্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভারত-পাকিস্তানের উভয়ের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।