সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে পাল্টা হামলার অনুমতি পেল পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়ায় নিজস্ব পছন্দ মতো সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে হামলা চালাতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)। পাকিস্তানের নিরাপত্তাবিষয়ক এই সর্বোচ্চ কমিটি বলেছে, ভারতের হামলার জবাবে নিজস্ব সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার তাদের আছে।

বুধবার এনএসসির জরুরি বৈঠকের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সভাপতিত্বে এনএসসির বৈঠকে সিজেসিএসসি জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, আইএসআই ডিজি জেনারেল আসিম মালিক এবং সশস্ত্রবাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বৈঠকে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি, পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল, আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মুসাদিক মালিক, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ, এজিপি মনসুর উসমান আওয়ান এবং প্রধানমন্ত্রীর সহকারী তারেক ফাতেমি উপস্থিত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুসারে, নিরীহ পাকিস্তানিদের প্রাণহানি এবং তাদের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘনের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যেকোনো সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে আত্মরক্ষায় প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

বিবৃতি অনুসারে, ‘ভারতীয় আগ্রাসনে গভীরভাবে শোকাহত এবং ক্ষুব্ধ পাকিস্তানি জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা এবং মাতৃভূমির প্রতিরক্ষায় তাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য অত্যন্ত প্রশংসা করে। যেকোনো আগ্রাসন মোকাবিলায় পুরো জাতি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

এতে আরও বলা হয়, ‘পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ভারতের অবৈধ কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব স্বীকার করার এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য তাকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তান শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তারা কখনো তার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন বা তার জনগণের কোনো ক্ষতি হতে না দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।’

প্রসঙ্গত, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত। যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

পাকিস্তানের দাবি, ভারতের বিমান হামলা ও সীমান্তে গোলাগুলিতে এখন পর্যন্ত তাদের ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন। তবে ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানে বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই।

অন্যদিকে, কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারত বলছে, ভারত ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ১০ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ভারতে পাল্টা হামলার অনুমতি পেল পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী

প্রকাশিত সময় : ০৬:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়ায় নিজস্ব পছন্দ মতো সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে হামলা চালাতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)। পাকিস্তানের নিরাপত্তাবিষয়ক এই সর্বোচ্চ কমিটি বলেছে, ভারতের হামলার জবাবে নিজস্ব সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার তাদের আছে।

বুধবার এনএসসির জরুরি বৈঠকের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সভাপতিত্বে এনএসসির বৈঠকে সিজেসিএসসি জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, আইএসআই ডিজি জেনারেল আসিম মালিক এবং সশস্ত্রবাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বৈঠকে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি, পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল, আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মুসাদিক মালিক, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ, এজিপি মনসুর উসমান আওয়ান এবং প্রধানমন্ত্রীর সহকারী তারেক ফাতেমি উপস্থিত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুসারে, নিরীহ পাকিস্তানিদের প্রাণহানি এবং তাদের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘনের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যেকোনো সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে আত্মরক্ষায় প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

বিবৃতি অনুসারে, ‘ভারতীয় আগ্রাসনে গভীরভাবে শোকাহত এবং ক্ষুব্ধ পাকিস্তানি জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা এবং মাতৃভূমির প্রতিরক্ষায় তাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য অত্যন্ত প্রশংসা করে। যেকোনো আগ্রাসন মোকাবিলায় পুরো জাতি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

এতে আরও বলা হয়, ‘পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ভারতের অবৈধ কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব স্বীকার করার এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য তাকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তান শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তারা কখনো তার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন বা তার জনগণের কোনো ক্ষতি হতে না দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।’

প্রসঙ্গত, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত। যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

পাকিস্তানের দাবি, ভারতের বিমান হামলা ও সীমান্তে গোলাগুলিতে এখন পর্যন্ত তাদের ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন। তবে ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানে বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই।

অন্যদিকে, কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারত বলছে, ভারত ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ১০ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হয়েছেন।