রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুশইন করা ৭৫ বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে তুলে এনে সীমান্ত পথে বাংলাদেশে পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি তিনজন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সংবাদ সম্মেলনে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য জানান।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গত ৯ মে ভোরের দিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ জন বাংলাদেশি এবং তিনজন ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করে। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাস করছিলেন। তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, গত ২৬ এপ্রিল গভীর রাতে ভারতীয় প্রশাসন তাদের বাসা থেকে আটক করে এবং গত ৯ মে ভোরের দিকে গোপনে সুন্দরবনের মান্দারাড়ি চরে রেখে যায়। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিরা মান্দারবাড়িয়া চর থেকে মান্দারবাড়ি ফরেস্ট অফিসে গিয়ে আশ্রয় নেন। ফরেস্ট অফিস কোস্ট গার্ডকে অবহিত করে। গত ১০ মে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন পুশইন করা ৭৮ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করে।

পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, ভারতীয় পুলিশ তাদের বস্তিগুলোতে হানা দেয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে নির্যাতন করে। তাদের চোখ বেঁধে একটি সামরিক বিমানে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের অপর একটি সামরিক বিমানে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে। এখনো তারা তাদের স্ত্রী-সন্তানদের অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পরবর্তীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশের সুন্দরবনের একটি জায়গায় রেখে যায়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১১ মে সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তিন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলন শেষে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশি ৭৫ জনকে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ মে) ভোর ৪টার দিকে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৮ জনকে রেখে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সকাল ৯টার দিকে বন বিভাগের মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পের সদস্যরা রেখে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। রবিবার (১১ মে) রাত ১১টার দিকে ৭৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ৭৮ জনকে শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পুশইন করা ৭৫ বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

প্রকাশিত সময় : ০৬:১৬:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে তুলে এনে সীমান্ত পথে বাংলাদেশে পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি তিনজন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সংবাদ সম্মেলনে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য জানান।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গত ৯ মে ভোরের দিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ জন বাংলাদেশি এবং তিনজন ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করে। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাস করছিলেন। তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, গত ২৬ এপ্রিল গভীর রাতে ভারতীয় প্রশাসন তাদের বাসা থেকে আটক করে এবং গত ৯ মে ভোরের দিকে গোপনে সুন্দরবনের মান্দারাড়ি চরে রেখে যায়। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিরা মান্দারবাড়িয়া চর থেকে মান্দারবাড়ি ফরেস্ট অফিসে গিয়ে আশ্রয় নেন। ফরেস্ট অফিস কোস্ট গার্ডকে অবহিত করে। গত ১০ মে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন পুশইন করা ৭৮ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করে।

পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, ভারতীয় পুলিশ তাদের বস্তিগুলোতে হানা দেয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে নির্যাতন করে। তাদের চোখ বেঁধে একটি সামরিক বিমানে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের অপর একটি সামরিক বিমানে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে। এখনো তারা তাদের স্ত্রী-সন্তানদের অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পরবর্তীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশের সুন্দরবনের একটি জায়গায় রেখে যায়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১১ মে সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তিন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলন শেষে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশি ৭৫ জনকে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ মে) ভোর ৪টার দিকে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৮ জনকে রেখে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সকাল ৯টার দিকে বন বিভাগের মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পের সদস্যরা রেখে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। রবিবার (১১ মে) রাত ১১টার দিকে ৭৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ৭৮ জনকে শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।