সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিবারসহ নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন খামেনি

ইসরায়েলের হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাভিজান এলাকায় একটি ভূগর্ভস্থ বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন। ইরানের অভ্যন্তরে অবস্থানরত দুটি সুত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।  খবর: ইরান ইন্টারন্যাশনাল।

সূত্রগুলো জানায়, খামেনির পরিবারের সব সদস্য, তার ছেলে মোজতাবাসহ বর্তমানে তার সঙ্গে রয়েছেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগের দুটি অভিযান ‘ট্রু প্রমিস ১’ ও ‘ট্রু প্রমিস ২’ চলাকালেও তাকে এই বাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

২০২৪ সালের ১৩ এপ্রিল ইরান প্রথম সরাসরি ইসরাইলে হামলা চালায়, যার কোডনেম ছিল ‘ট্রু প্রমিস ১’। এই হামলায় ৩০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। দামাস্কাসে দুই ইরানি জেনারেল নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়।

২০২৪ সালের ১ অক্টোবর ‘ট্রু প্রমিস ২’ অভিযানে ইসরাইলের সামরিক স্থাপনার দিকে ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসান নাসরাল্লাহসহ ইরানপন্থী নেতাদের হত্যার জবাবে এই হামলা চালানো হয়।

গত রবিবার ইসরাইল প্রথমবারের মতো ইরানের মাশহাদ শহরে হামলা চালায়, যা ইসরায়েল থেকে ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মধ্যপ্রাচ্যের এক কূটনৈতিক সূত্র ইরান ইন্টারন্যাশনালকে জানিয়েছে, এই হামলা খামেনির জন্য একটি সতর্কবার্তা ছিল যে, তিনি দেশের কোথাও নিরাপদ নন।

সূত্রটি আরও জানায়, ইসরায়েল প্রথম রাতেই খামেনিকে হত্যা করতে পারত, কিন্তু তাকে শেষ একটি সুযোগ দিতে তারা তা করেনি। ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করতে খামেনিকে দুই মাসের সময় দিয়েছিলেন। তবে ইসরায়েল ও মার্কিন সতর্কতা উপেক্ষা করেছেন খামেনি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা মূল্যায়ন করে এখনই সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার জন্যই এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পরিবারসহ নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন খামেনি

প্রকাশিত সময় : ১১:১২:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

ইসরায়েলের হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাভিজান এলাকায় একটি ভূগর্ভস্থ বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন। ইরানের অভ্যন্তরে অবস্থানরত দুটি সুত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।  খবর: ইরান ইন্টারন্যাশনাল।

সূত্রগুলো জানায়, খামেনির পরিবারের সব সদস্য, তার ছেলে মোজতাবাসহ বর্তমানে তার সঙ্গে রয়েছেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগের দুটি অভিযান ‘ট্রু প্রমিস ১’ ও ‘ট্রু প্রমিস ২’ চলাকালেও তাকে এই বাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

২০২৪ সালের ১৩ এপ্রিল ইরান প্রথম সরাসরি ইসরাইলে হামলা চালায়, যার কোডনেম ছিল ‘ট্রু প্রমিস ১’। এই হামলায় ৩০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। দামাস্কাসে দুই ইরানি জেনারেল নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়।

২০২৪ সালের ১ অক্টোবর ‘ট্রু প্রমিস ২’ অভিযানে ইসরাইলের সামরিক স্থাপনার দিকে ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসান নাসরাল্লাহসহ ইরানপন্থী নেতাদের হত্যার জবাবে এই হামলা চালানো হয়।

গত রবিবার ইসরাইল প্রথমবারের মতো ইরানের মাশহাদ শহরে হামলা চালায়, যা ইসরায়েল থেকে ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মধ্যপ্রাচ্যের এক কূটনৈতিক সূত্র ইরান ইন্টারন্যাশনালকে জানিয়েছে, এই হামলা খামেনির জন্য একটি সতর্কবার্তা ছিল যে, তিনি দেশের কোথাও নিরাপদ নন।

সূত্রটি আরও জানায়, ইসরায়েল প্রথম রাতেই খামেনিকে হত্যা করতে পারত, কিন্তু তাকে শেষ একটি সুযোগ দিতে তারা তা করেনি। ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করতে খামেনিকে দুই মাসের সময় দিয়েছিলেন। তবে ইসরায়েল ও মার্কিন সতর্কতা উপেক্ষা করেছেন খামেনি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা মূল্যায়ন করে এখনই সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার জন্যই এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।