সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানকে মোকাবিলায় দেশীয় ড্রোন তৈরিতে বিপুল প্রণোদনা ভারতের

প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের চীন ও তুরস্কের সহায়তায় নির্মিত কর্মসূচির মোকাবেলায় ভারত বেসামরিক ও সামরিক ড্রোন নির্মাতাদের জন্য ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে ভারত। শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় ইসলামাবাদকে দায়ী করে ৬-৭ মে রাতে নয়াদিল্লি পাকিস্তানে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুই দেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে রাজী হয় ভারত ও পাকিস্তান।

পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশ এরপর থেকে ড্রোন অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সরকারি এবং একজন শিল্প সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি তিন বছরের জন্য ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের একটি কর্মসূচি চালু করবে যা ড্রোন, যন্ত্রাংশ, সফটওয়্যার, কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম এবং পরিষেবা তৈরি করবে। এই কর্মসূচির ব্যয় ২০২১ সালে নয়াদিল্লির চালু করা ১২০ কোটি রুপির ড্রোন উৎপাদন-সংযুক্ত প্রণোদনা প্রকল্পের চেয়ে বেশি।

ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এই প্রণোদনা কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ ব্যাপারে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য ই-মেইলের জবাব দেয়নি।

রয়টার্স এর আগে জানিয়েছিল, ভারত স্থানীয় শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে এবং আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে মনুষ্যবিহীন বিমানবাহী যানবাহনে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে পারে।

অতীতে ভারত মূলত তার তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী ইসরায়েলের কাছ থেকে সামরিক ড্রোন আমদানি করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের নতুন ড্রোন শিল্প সামরিক বাহিনীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের ড্রোন সরবরাহের প্রস্তাব বাড়িয়েছে। তবে মোটর, সেন্সর এবং ইমেজিং সিস্টেমের মতো কিছু উপাদানের জন্য চীনের উপর নির্ভরতা অব্যাহত রয়েছে ভারতের। এই প্রণোদনার মাধ্যমে ভারত ২০২৮ অর্থবছরের (এপ্রিল-মার্চ) শেষ নাগাদ (এপ্রিল-মার্চ) ড্রোনের অন্তত ৪০ শতাংশ মূল যন্ত্রাংশ দেশে তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছে।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং গত সপ্তাহে বলেছিলেন, “(ভারত-পাকিস্তান) সংঘাতের সময় উভয় পক্ষই ড্রোন, যুদ্ধাস্ত্র এবং কামিকাজ ড্রোনের প্রচুর ব্যবহার ছিল। আমরা যে শিক্ষা পেয়েছি তা হল, একটি বৃহৎ, কার্যকর, সামরিক ড্রোন উৎপাদন বাস্তুতন্ত্র তৈরি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের দেশীয়করণ প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পাকিস্তানকে মোকাবিলায় দেশীয় ড্রোন তৈরিতে বিপুল প্রণোদনা ভারতের

প্রকাশিত সময় : ১০:৪১:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের চীন ও তুরস্কের সহায়তায় নির্মিত কর্মসূচির মোকাবেলায় ভারত বেসামরিক ও সামরিক ড্রোন নির্মাতাদের জন্য ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে ভারত। শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় ইসলামাবাদকে দায়ী করে ৬-৭ মে রাতে নয়াদিল্লি পাকিস্তানে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুই দেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে রাজী হয় ভারত ও পাকিস্তান।

পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশ এরপর থেকে ড্রোন অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সরকারি এবং একজন শিল্প সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি তিন বছরের জন্য ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের একটি কর্মসূচি চালু করবে যা ড্রোন, যন্ত্রাংশ, সফটওয়্যার, কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম এবং পরিষেবা তৈরি করবে। এই কর্মসূচির ব্যয় ২০২১ সালে নয়াদিল্লির চালু করা ১২০ কোটি রুপির ড্রোন উৎপাদন-সংযুক্ত প্রণোদনা প্রকল্পের চেয়ে বেশি।

ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এই প্রণোদনা কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ ব্যাপারে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য ই-মেইলের জবাব দেয়নি।

রয়টার্স এর আগে জানিয়েছিল, ভারত স্থানীয় শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে এবং আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে মনুষ্যবিহীন বিমানবাহী যানবাহনে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে পারে।

অতীতে ভারত মূলত তার তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী ইসরায়েলের কাছ থেকে সামরিক ড্রোন আমদানি করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের নতুন ড্রোন শিল্প সামরিক বাহিনীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের ড্রোন সরবরাহের প্রস্তাব বাড়িয়েছে। তবে মোটর, সেন্সর এবং ইমেজিং সিস্টেমের মতো কিছু উপাদানের জন্য চীনের উপর নির্ভরতা অব্যাহত রয়েছে ভারতের। এই প্রণোদনার মাধ্যমে ভারত ২০২৮ অর্থবছরের (এপ্রিল-মার্চ) শেষ নাগাদ (এপ্রিল-মার্চ) ড্রোনের অন্তত ৪০ শতাংশ মূল যন্ত্রাংশ দেশে তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছে।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং গত সপ্তাহে বলেছিলেন, “(ভারত-পাকিস্তান) সংঘাতের সময় উভয় পক্ষই ড্রোন, যুদ্ধাস্ত্র এবং কামিকাজ ড্রোনের প্রচুর ব্যবহার ছিল। আমরা যে শিক্ষা পেয়েছি তা হল, একটি বৃহৎ, কার্যকর, সামরিক ড্রোন উৎপাদন বাস্তুতন্ত্র তৈরি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের দেশীয়করণ প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।”