রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আমরা এই ভূমিতেই থাকছি’

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ওপর থেকে ফেলছে বোমা আর নিচ থেকে ছুঁড়ছে গুলি। এমনকি যেসব ফিলিস্তিনি ত্রাণ নিতে ত্রাণকেন্দ্রে যাচ্ছে সেখানেও গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এরপরেও গাজাবাসীকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজার বাসিন্দা আল-খাইর বলেন, “এটা আমাদের ভূমি। আমরা এটা কার কাছে রেখে যাব, কোথায় যাব?”

সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আতিথ্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প উপকূলীয় ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিতর্কিত উদ্যোগের অগ্রগতির ইঙ্গিত দেন।

মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে এক নৈশভোজের শুরুতে সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করছে যারা ফিলিস্তিনিদের ‘উন্নত ভবিষ্যৎ’ দেবে, যা ইঙ্গিত দেয় যে গাজার বাসিন্দারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে যেতে পারবে।

ট্রাম্পের সাথে এক মতবিনিময় সভায় নেতানিয়াহু বলেন, “আপনি জানেন যদি মানুষ থাকতে চায়, তাহলে তারা থাকতে পারে। কিন্তু যদি তারা চলে যেতে চায় তবে তাদের চলে যেতে হবে। এটি কারাগার হওয়া উচিত নয়। এটি একটি উন্মুক্ত জায়গা হওয়া উচিত এবং মানুষকে স্বাধীনভাবে পছন্দ করার সুযোগ দেওয়া উচিত।”

ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরিত করার এবং উপত্যকাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরিয়া’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই সময় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে সাময়িকভাবে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

২৭ বছর বয়সী গাজার বাসিন্দা সাঈদ ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ এবং বারবার অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির পরেও গাজার সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত রয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব ইচ্ছায় অন্য দেশ ভ্রমণের সুযোগ ও অধিকার আছে, কিন্তু ফিলিস্তিনি হিসেবে আমরা বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করি।”

গাজার ফিলিস্তিনি আবু সামির এল-ফাকাওয়ি বলেন, “আমি গাজা ছেড়ে যাব না। এটি আমার দেশ।”

তিনি আরো বলেন, “যুদ্ধে শহীদ হওয়া আমাদের সন্তানদের এখানে সমাহিত করা হয়েছে। আমাদের পরিবার, আমাদের বন্ধু, আমাদের চাচাতো ভাইবোন- সবাই এখানে সমাহিত। ট্রাম্প, নেতানিয়াহু বা অন্য কেউ পছন্দ করুক বা না করুক, আমরা এই ভূমিতেই থাকছি।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

২০ ডিসেম্বর: ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ কত দামে বিক্রি হচ্ছে

‘আমরা এই ভূমিতেই থাকছি’

প্রকাশিত সময় : ১১:১৩:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ওপর থেকে ফেলছে বোমা আর নিচ থেকে ছুঁড়ছে গুলি। এমনকি যেসব ফিলিস্তিনি ত্রাণ নিতে ত্রাণকেন্দ্রে যাচ্ছে সেখানেও গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এরপরেও গাজাবাসীকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজার বাসিন্দা আল-খাইর বলেন, “এটা আমাদের ভূমি। আমরা এটা কার কাছে রেখে যাব, কোথায় যাব?”

সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আতিথ্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প উপকূলীয় ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিতর্কিত উদ্যোগের অগ্রগতির ইঙ্গিত দেন।

মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে এক নৈশভোজের শুরুতে সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করছে যারা ফিলিস্তিনিদের ‘উন্নত ভবিষ্যৎ’ দেবে, যা ইঙ্গিত দেয় যে গাজার বাসিন্দারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে যেতে পারবে।

ট্রাম্পের সাথে এক মতবিনিময় সভায় নেতানিয়াহু বলেন, “আপনি জানেন যদি মানুষ থাকতে চায়, তাহলে তারা থাকতে পারে। কিন্তু যদি তারা চলে যেতে চায় তবে তাদের চলে যেতে হবে। এটি কারাগার হওয়া উচিত নয়। এটি একটি উন্মুক্ত জায়গা হওয়া উচিত এবং মানুষকে স্বাধীনভাবে পছন্দ করার সুযোগ দেওয়া উচিত।”

ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরিত করার এবং উপত্যকাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরিয়া’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই সময় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে সাময়িকভাবে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

২৭ বছর বয়সী গাজার বাসিন্দা সাঈদ ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ এবং বারবার অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির পরেও গাজার সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত রয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব ইচ্ছায় অন্য দেশ ভ্রমণের সুযোগ ও অধিকার আছে, কিন্তু ফিলিস্তিনি হিসেবে আমরা বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করি।”

গাজার ফিলিস্তিনি আবু সামির এল-ফাকাওয়ি বলেন, “আমি গাজা ছেড়ে যাব না। এটি আমার দেশ।”

তিনি আরো বলেন, “যুদ্ধে শহীদ হওয়া আমাদের সন্তানদের এখানে সমাহিত করা হয়েছে। আমাদের পরিবার, আমাদের বন্ধু, আমাদের চাচাতো ভাইবোন- সবাই এখানে সমাহিত। ট্রাম্প, নেতানিয়াহু বা অন্য কেউ পছন্দ করুক বা না করুক, আমরা এই ভূমিতেই থাকছি।”