রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরাকে ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা, সতর্ক করলেন কুদস কমান্ডার

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনার নতুন দফার শঙ্কা জোরালো হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের প্রধান ইসমাইল ক্বানি সম্প্রতি ইরাকের মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সম্ভাব্য ইসরায়েলি বিমান হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘লং ওয়ার জার্নাল’ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বাগদাদে ইরানপন্থি মিলিশিয়া নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন ক্বানি। এই বৈঠককে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ, ইরাকের ভেতরে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন তেহরান সরাসরি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

ইরানঘেঁষা যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী এ আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তাদের মধ্যে আসায়েব আহল আল-হাক, হারাকাত হেজবুল্লাহ আল-নুজাবা, কাতায়িব হেজবুল্লাহ ও কাতায়িব সাইয়্যিদ আল-শুহাদা অন্যতম। যদিও এসব গোষ্ঠী ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত তারা ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, এসব গোষ্ঠীর সংযত ভূমিকার পেছনে রয়েছে ইরানের নিজস্ব স্বার্থরক্ষা। ইরাকে তেহরানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে। দেশটি প্রতিবছর এক বিলিয়ন ডলারের মতো অবৈধ তেল রাজস্বের অন্যতম উৎস এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ইরাকের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রীয় খাতে এসব গোষ্ঠীর দখলদারি রয়েছে।

সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১২ দিনের লড়াইয়ের সময় ইরাকের ভেতরে খুব কম হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আন-আল-আসাদ সামরিক ঘাঁটি ও এরবিলের মার্কিন কনস্যুলেটের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা উল্লেখযোগ্য। তবে এসব হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি।

যদিও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বারবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে, তবুও বাস্তব অঙ্গীকার সীমাবদ্ধ থেকেছে কেবল বিবৃতি ও ঘোষণার মধ্যেই।

সূত্র: শাফাক নিউজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইরাকে ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা, সতর্ক করলেন কুদস কমান্ডার

প্রকাশিত সময় : ০৬:২২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনার নতুন দফার শঙ্কা জোরালো হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের প্রধান ইসমাইল ক্বানি সম্প্রতি ইরাকের মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সম্ভাব্য ইসরায়েলি বিমান হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘লং ওয়ার জার্নাল’ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বাগদাদে ইরানপন্থি মিলিশিয়া নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন ক্বানি। এই বৈঠককে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ, ইরাকের ভেতরে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন তেহরান সরাসরি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

ইরানঘেঁষা যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী এ আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তাদের মধ্যে আসায়েব আহল আল-হাক, হারাকাত হেজবুল্লাহ আল-নুজাবা, কাতায়িব হেজবুল্লাহ ও কাতায়িব সাইয়্যিদ আল-শুহাদা অন্যতম। যদিও এসব গোষ্ঠী ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত তারা ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, এসব গোষ্ঠীর সংযত ভূমিকার পেছনে রয়েছে ইরানের নিজস্ব স্বার্থরক্ষা। ইরাকে তেহরানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে। দেশটি প্রতিবছর এক বিলিয়ন ডলারের মতো অবৈধ তেল রাজস্বের অন্যতম উৎস এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ইরাকের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রীয় খাতে এসব গোষ্ঠীর দখলদারি রয়েছে।

সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১২ দিনের লড়াইয়ের সময় ইরাকের ভেতরে খুব কম হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আন-আল-আসাদ সামরিক ঘাঁটি ও এরবিলের মার্কিন কনস্যুলেটের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা উল্লেখযোগ্য। তবে এসব হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি।

যদিও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বারবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে, তবুও বাস্তব অঙ্গীকার সীমাবদ্ধ থেকেছে কেবল বিবৃতি ও ঘোষণার মধ্যেই।

সূত্র: শাফাক নিউজ