বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার পতনের পর কাজ হারিয়েছেন বাঁধন

দেশের শিল্পী সমাজের একটি বড় অংশ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। বিশেষ করে বিগত সরকারের (আওয়ামী লীগ) হয়ে অনেকেই সরব ছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা অনেকেই আছেন চাপের মুখে। কেউ কেউ আবার গা ঢাকাও দিয়েছেন। এসব দেখে রাজনীতিতে সরাসরি ‍যুক্ত হতে চান না জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। আর ফেসবুকে একথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী নিজেই।

তিনি আরও জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অনেক কাজও হারিয়েছেন।

বাঁধন বলেন, ‘আমার তিনটি কাজ বাতিল হয়েছে। কারণ আমার সব প্রযোজক আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। তারা আর আমার সঙ্গে কাজ করতে চান না। ভারতীয় একটা পণ্যের বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে কথা হয়েছিল, তারাও “না” করে দিয়েছে।’

কেন? জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছি, তাই ভারতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন থেকে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও তারা আমাকে অন্য যুক্তি দেখিয়েছেন। তারা বলেছেন, জরিপে নাকি এসেছে আমাকে কেউ চেনে না। আর আমার সব প্রযোজক আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। তারা এখন আর আমাকে নিতে চান না। তাই আমার হাতে কোনো কাজ নেই। সাদও (আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ) তার নতুন কাজে আমাকে নেয়নি। সে তার মতো কাজ করছে, আমি আমার মতো। আমার হাতে এখন তাই কোনো কাজ নেই।’

নতুন কাজের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অনেক জায়গা থেকে অনেক রকম অফার পেয়েছি, কিন্তু আমি সেসব গ্রহণ করিনি। ছোটবেলা থেকে বড়দের মুখে শুনেছি, আমি মানুষের জন্য কাজ করি, আমাকে দিয়ে রাজনীতি হবে। আমি মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। সব সময় বাংলাদেশের পক্ষে ছিলাম, আছি ভবিষ্যতেও থাকব। দেশের নাগরিক হিসেবে দেশের মানুষের জন্য যেখানে দাঁড়াতে হয় দাঁড়াব, কথা বলতে হলে বলব। কিন্তু সক্রিয় রাজনীতি করব না। “রেহানা” করার আগপর্যন্ত ভেবেছিলাম রাজনীতি করব। কিন্তু “রেহেনা” আমার মনটা বদলে দিয়েছে।’

একই প্রসঙ্গে ফেসবুকে বাঁধন লিখেছেন, ‘আনিসুল হকের নির্বাচনী প্রচারণায় আমি কাজ করেছি, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণায়ও যুক্ত ছিলাম। এমনকি ২০১৭ সালে ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। তখন সত্যিই বিশ্বাস করতাম, রাজনীতিই সমাজ পরিবর্তনের পথ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পেরেছি, রাজনীতি আমার কাজ নয়। আমি স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি, আর একবার স্বাধীনতার স্বাদ পেলে অন্ধভাবে নির্দেশ মেনে চলা কারও পক্ষে সম্ভব না। রাজনীতি কঠিন কাজ। কাছ থেকে বহু রাজনীতিককে দেখেছি। কেউ কেউ আমাকে মুগ্ধও করেছেন। কিন্তু আমি সে পথে পা বাড়াব না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সরকার পতনের পর কাজ হারিয়েছেন বাঁধন

প্রকাশিত সময় : ০৬:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

দেশের শিল্পী সমাজের একটি বড় অংশ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। বিশেষ করে বিগত সরকারের (আওয়ামী লীগ) হয়ে অনেকেই সরব ছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা অনেকেই আছেন চাপের মুখে। কেউ কেউ আবার গা ঢাকাও দিয়েছেন। এসব দেখে রাজনীতিতে সরাসরি ‍যুক্ত হতে চান না জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। আর ফেসবুকে একথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী নিজেই।

তিনি আরও জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অনেক কাজও হারিয়েছেন।

বাঁধন বলেন, ‘আমার তিনটি কাজ বাতিল হয়েছে। কারণ আমার সব প্রযোজক আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। তারা আর আমার সঙ্গে কাজ করতে চান না। ভারতীয় একটা পণ্যের বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে কথা হয়েছিল, তারাও “না” করে দিয়েছে।’

কেন? জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছি, তাই ভারতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন থেকে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও তারা আমাকে অন্য যুক্তি দেখিয়েছেন। তারা বলেছেন, জরিপে নাকি এসেছে আমাকে কেউ চেনে না। আর আমার সব প্রযোজক আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। তারা এখন আর আমাকে নিতে চান না। তাই আমার হাতে কোনো কাজ নেই। সাদও (আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ) তার নতুন কাজে আমাকে নেয়নি। সে তার মতো কাজ করছে, আমি আমার মতো। আমার হাতে এখন তাই কোনো কাজ নেই।’

নতুন কাজের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অনেক জায়গা থেকে অনেক রকম অফার পেয়েছি, কিন্তু আমি সেসব গ্রহণ করিনি। ছোটবেলা থেকে বড়দের মুখে শুনেছি, আমি মানুষের জন্য কাজ করি, আমাকে দিয়ে রাজনীতি হবে। আমি মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। সব সময় বাংলাদেশের পক্ষে ছিলাম, আছি ভবিষ্যতেও থাকব। দেশের নাগরিক হিসেবে দেশের মানুষের জন্য যেখানে দাঁড়াতে হয় দাঁড়াব, কথা বলতে হলে বলব। কিন্তু সক্রিয় রাজনীতি করব না। “রেহানা” করার আগপর্যন্ত ভেবেছিলাম রাজনীতি করব। কিন্তু “রেহেনা” আমার মনটা বদলে দিয়েছে।’

একই প্রসঙ্গে ফেসবুকে বাঁধন লিখেছেন, ‘আনিসুল হকের নির্বাচনী প্রচারণায় আমি কাজ করেছি, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণায়ও যুক্ত ছিলাম। এমনকি ২০১৭ সালে ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। তখন সত্যিই বিশ্বাস করতাম, রাজনীতিই সমাজ পরিবর্তনের পথ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পেরেছি, রাজনীতি আমার কাজ নয়। আমি স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি, আর একবার স্বাধীনতার স্বাদ পেলে অন্ধভাবে নির্দেশ মেনে চলা কারও পক্ষে সম্ভব না। রাজনীতি কঠিন কাজ। কাছ থেকে বহু রাজনীতিককে দেখেছি। কেউ কেউ আমাকে মুগ্ধও করেছেন। কিন্তু আমি সে পথে পা বাড়াব না।’