শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে অংশীদার হয়ে’

প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে তার অংশীদার হয়ে, বাধা হয়ে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শূন্য বুলি দিই না-আমরা বলি বিশ্বাস থেকে, ঐতিহ্য ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে।’

আজ শনিবার আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে আসুন, আমরা প্রতিটি মেয়ের স্বপ্ন দেখার, শেখার, নেতৃত্ব দেওয়ার, মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার উদযাপন করি। একজন কন্যার বাবা হিসেবে আমি জানি যে, মেয়েদের ক্ষমতায়ন কেবল নীতি নয়, এটি ব্যক্তিগত। বাংলাদেশের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন, যেখানে প্রতিটি মেয়ের একই স্বাধীনতা, সুযোগ এবং সুরক্ষা থাকবে। যা যেকোনো পিতামাতা তাদের নিজের সন্তানের জন্য কামনা করেন।’

‘বিএনপি সরকার সবসময় মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ঐতিহ্য গড়ে তুলেছে, আর আমরা সুযোগ পেলে সেই কাজ আরও এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর’, যোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় আমরা দেখেছি, তিনি কীভাবে তৈরি পোশাক শিল্পকে শুধু একটি শিল্প হিসেবে নয়, একে আশার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। লক্ষ লক্ষ নারী আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ পান-আয়, সম্মান ও স্বাধীনতা অর্জন করেন। তার নেতৃত্বেই নারীর কল্যাণ ও উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মেয়েদের শিক্ষা একটি অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, কোনো বিশেষ সুবিধা নয়। নবম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের জন্য শিক্ষা বিনামূল্যে ঘোষণা করা হয় এবং ‘‘খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা’’ ও ‘‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা’’ কর্মসূচি লক্ষ লক্ষ মেয়েকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখে-যার ফলে বদলে যায় অসংখ্য পরিবারের ভাগ্য, গড়ে ওঠে শক্তিশালী সমাজ, এবং তৈরি হয় ক্ষমতায়িত নারীর এক প্রজন্ম।’

তার উদ্ভাবনী ‘Female Secondary School Assistance Project’ বা ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহায়তা প্রকল্প’ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মেয়েদের বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণের হার ছেলেদের সমান করে তোলে। এটি বাল্যবিবাহ কমায় এবং মেয়েদের শিক্ষার এক বৈপ্লবিক মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পায়, যা পরে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশও অনুসরণ করে। এই উদ্যোগগুলো দেখিয়েছে-যখন শাসনব্যবস্থা কন্যাশিশুর মর্যাদা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন অসম্ভবও সম্ভব হয়ে ওঠে।

বিএনপির ভবিষ্যৎ নীতিমালায় সেই ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতি ধরে রাখবে, এর মাধ্যমে-

১. ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হবে পরিবারের নারী প্রধানের নামে-যাতে সহায়তা সরাসরি পরিবারের মূল স্তম্ভের হাতে পৌঁছে যায়।

২. এসএমই ঋণ, ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে নারী উদ্যোক্তাদের-কারণ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আপস করা যায় না।

৩. শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ আরও বাড়ানো হবে-যাতে শহর বা গ্রাম, প্রত্যেক মেয়েই দক্ষতা অর্জন করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।

৪. নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে স্থান নিশ্চিত করা হবে-রাজনীতি, শাসন ও নীতিনির্ধারণে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। একটি নিরাপদ দেশ গড়তে এর বিকল্প নেই।

৫. মর্যাদা ও স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে-যাতে মেয়েরা ভয়হীনভাবে চলাফেরা করতে, মত প্রকাশ করতে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।

৬. পরিবার ও সামাজিক কল্যাণকে কেন্দ্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হবে-স্বাস্থ্য, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে নারী ও কন্যাশিশুর জন্য।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

‘প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে অংশীদার হয়ে’

প্রকাশিত সময় : ০৫:২৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে তার অংশীদার হয়ে, বাধা হয়ে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শূন্য বুলি দিই না-আমরা বলি বিশ্বাস থেকে, ঐতিহ্য ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে।’

আজ শনিবার আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে আসুন, আমরা প্রতিটি মেয়ের স্বপ্ন দেখার, শেখার, নেতৃত্ব দেওয়ার, মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার উদযাপন করি। একজন কন্যার বাবা হিসেবে আমি জানি যে, মেয়েদের ক্ষমতায়ন কেবল নীতি নয়, এটি ব্যক্তিগত। বাংলাদেশের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন, যেখানে প্রতিটি মেয়ের একই স্বাধীনতা, সুযোগ এবং সুরক্ষা থাকবে। যা যেকোনো পিতামাতা তাদের নিজের সন্তানের জন্য কামনা করেন।’

‘বিএনপি সরকার সবসময় মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ঐতিহ্য গড়ে তুলেছে, আর আমরা সুযোগ পেলে সেই কাজ আরও এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর’, যোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় আমরা দেখেছি, তিনি কীভাবে তৈরি পোশাক শিল্পকে শুধু একটি শিল্প হিসেবে নয়, একে আশার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। লক্ষ লক্ষ নারী আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ পান-আয়, সম্মান ও স্বাধীনতা অর্জন করেন। তার নেতৃত্বেই নারীর কল্যাণ ও উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মেয়েদের শিক্ষা একটি অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, কোনো বিশেষ সুবিধা নয়। নবম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের জন্য শিক্ষা বিনামূল্যে ঘোষণা করা হয় এবং ‘‘খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা’’ ও ‘‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা’’ কর্মসূচি লক্ষ লক্ষ মেয়েকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখে-যার ফলে বদলে যায় অসংখ্য পরিবারের ভাগ্য, গড়ে ওঠে শক্তিশালী সমাজ, এবং তৈরি হয় ক্ষমতায়িত নারীর এক প্রজন্ম।’

তার উদ্ভাবনী ‘Female Secondary School Assistance Project’ বা ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহায়তা প্রকল্প’ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মেয়েদের বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণের হার ছেলেদের সমান করে তোলে। এটি বাল্যবিবাহ কমায় এবং মেয়েদের শিক্ষার এক বৈপ্লবিক মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পায়, যা পরে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশও অনুসরণ করে। এই উদ্যোগগুলো দেখিয়েছে-যখন শাসনব্যবস্থা কন্যাশিশুর মর্যাদা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন অসম্ভবও সম্ভব হয়ে ওঠে।

বিএনপির ভবিষ্যৎ নীতিমালায় সেই ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতি ধরে রাখবে, এর মাধ্যমে-

১. ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হবে পরিবারের নারী প্রধানের নামে-যাতে সহায়তা সরাসরি পরিবারের মূল স্তম্ভের হাতে পৌঁছে যায়।

২. এসএমই ঋণ, ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে নারী উদ্যোক্তাদের-কারণ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আপস করা যায় না।

৩. শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ আরও বাড়ানো হবে-যাতে শহর বা গ্রাম, প্রত্যেক মেয়েই দক্ষতা অর্জন করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।

৪. নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে স্থান নিশ্চিত করা হবে-রাজনীতি, শাসন ও নীতিনির্ধারণে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। একটি নিরাপদ দেশ গড়তে এর বিকল্প নেই।

৫. মর্যাদা ও স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে-যাতে মেয়েরা ভয়হীনভাবে চলাফেরা করতে, মত প্রকাশ করতে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।

৬. পরিবার ও সামাজিক কল্যাণকে কেন্দ্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হবে-স্বাস্থ্য, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে নারী ও কন্যাশিশুর জন্য।