শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল্টিমেটাম দিয়ে ঢাকায় ৮ দলের মহাসমাবেশ ১১ নভেম্বর

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দাবিতে আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতসহ ৮ রাজনৈতিক দল। দাবি মানা না হলে ওই দিন ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে ঢাকা মৎস্য ভবন মোড়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দলগু‌লোর পক্ষ থে‌কে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন গোলাম পরওয়ার।

সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “১১ তারিখ ঢাকায় লাখ লাখ জনতার উপস্থিতির আগে আমাদের ৫ দাবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। নতুবা ঢাকার অবস্থা ভিন্ন হবে।”

মিয়া গোলাম পরওয়ার ব‌লেন, “যমুনায় যাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক স্মারকলিপি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন, তবে আমাদের দাবি ছিল আমরা মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেব না। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছেই স্মারকলিপি দিতে চেয়েছি। পরে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন।”

“আমরা ৮ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আদিলুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছি, স্মারকলিপি পড়ে শুনিয়েছি। শিল্প উপদেষ্টা আমাদের দাবির সঙ্গে দ্বিমত করেননি। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের ৫ দাবি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন” যোগ ক‌রেন পরওয়ার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে ৫ দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান।

আট দ‌লের প্রতিনিধি হি‌সে‌বে ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান যমুনায় যান।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পল্টন থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে তাদের পদযাত্রাটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে সেখানে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়।

দুপুর ১২টায় ঢাকার পুরানা পল্টন মোড় থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। এর আগে দলগু‌লো পল্টন‌ মো‌ড়ে পৃথক মি‌ছিল নি‌য়ে জ‌ড়ো হয়। শাপলা চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন জামায়াত নেতাকর্মীরা। ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজ‌লি‌সের দুই অংশসহ অন‌্যদলগু‌লোর নেতাকর্মীরা আগ থে‌কেই পল্টন‌ মো‌ড়ে অবস্থান নেন।

পদযাত্রা শুরুর আগে পল্টন‌ মো‌ড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলগুলোর শীর্ষ নেতারা গণভোট, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সারা দেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তথা নির্বাচনি পরিবেশ তৈরিসহ নানা বিষয়ে জোরা‌লো বক্তব‌্য রা‌খেন।

দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

আটটি দলের মধ্যে রয়েছে—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

আল্টিমেটাম দিয়ে ঢাকায় ৮ দলের মহাসমাবেশ ১১ নভেম্বর

প্রকাশিত সময় : ০৪:৪২:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দাবিতে আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতসহ ৮ রাজনৈতিক দল। দাবি মানা না হলে ওই দিন ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে ঢাকা মৎস্য ভবন মোড়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দলগু‌লোর পক্ষ থে‌কে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন গোলাম পরওয়ার।

সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “১১ তারিখ ঢাকায় লাখ লাখ জনতার উপস্থিতির আগে আমাদের ৫ দাবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। নতুবা ঢাকার অবস্থা ভিন্ন হবে।”

মিয়া গোলাম পরওয়ার ব‌লেন, “যমুনায় যাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক স্মারকলিপি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন, তবে আমাদের দাবি ছিল আমরা মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেব না। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছেই স্মারকলিপি দিতে চেয়েছি। পরে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন।”

“আমরা ৮ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আদিলুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছি, স্মারকলিপি পড়ে শুনিয়েছি। শিল্প উপদেষ্টা আমাদের দাবির সঙ্গে দ্বিমত করেননি। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের ৫ দাবি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন” যোগ ক‌রেন পরওয়ার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে ৫ দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান।

আট দ‌লের প্রতিনিধি হি‌সে‌বে ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান যমুনায় যান।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পল্টন থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে তাদের পদযাত্রাটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে সেখানে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়।

দুপুর ১২টায় ঢাকার পুরানা পল্টন মোড় থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। এর আগে দলগু‌লো পল্টন‌ মো‌ড়ে পৃথক মি‌ছিল নি‌য়ে জ‌ড়ো হয়। শাপলা চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন জামায়াত নেতাকর্মীরা। ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজ‌লি‌সের দুই অংশসহ অন‌্যদলগু‌লোর নেতাকর্মীরা আগ থে‌কেই পল্টন‌ মো‌ড়ে অবস্থান নেন।

পদযাত্রা শুরুর আগে পল্টন‌ মো‌ড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলগুলোর শীর্ষ নেতারা গণভোট, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সারা দেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তথা নির্বাচনি পরিবেশ তৈরিসহ নানা বিষয়ে জোরা‌লো বক্তব‌্য রা‌খেন।

দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

আটটি দলের মধ্যে রয়েছে—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।