মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘোর সংকটে ইউক্রেন

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন তার ইতিহাসে অন্যতম কঠিন মুহূর্তের মুখোমুখি, কারণ ট্রাম্প তাঁর প্রস্তাবিত ‘শান্তি পরিকল্পনা’ মেনে নিতে কিয়েভের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। এর অর্থ হবে রাশিয়ার কাছে ভূখণ্ড সমর্পণ করা এবং অন্যান্য বেদনাদায়ক ছাড় দেওয়া। দ্য গার্ডিয়ান।

ট্রাম্প বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার এই চুক্তিতে স্বাক্ষরে জেলেনস্কির জন্য ‘গ্রহণযোগ্য’ সময়সীমা। ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এটিকে ‘আত্মসমর্পণ’ বলে অভিহিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট প্যালেসের বাইরে দেওয়া ১০ মিনিটের গম্ভীর এক বক্তৃতায় জেলেনস্কি বলেন, তাঁর দেশের সামনে একটি অসম্ভব পছন্দ রয়েছে। হয় তাঁরা তাঁদের জাতীয় মর্যাদা বজায় রাখবেন, নয়তো মস্কোর নৃশংস শর্তে সংঘাত শেষ করতে বদ্ধপরিকর মার্কিন প্রশাসনের মতো একটি প্রধান অংশীদারকে হারানোর ঝুঁঁকি নেবেন।

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর চাপ এখন সবচেয়ে বেশি।’ বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রাম্পের ২৮ দফা প্রস্তাবে সম্মত হওয়া অথবা ‘অত্যন্ত কঠিন শীতকালের’ সম্মুখীন হওয়া। রাশিয়া এরই মধ্যে দেশের বেশিরভাগ জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ গরম ও অন্ধকারে রয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন-রাশিয়ান চুক্তিতে সম্মত হলে ইউক্রেন ‘স্বাধীনতা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচার’ হারাতে পারে। ২৮ দফা পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে। ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার এবং দূরপাল্লার অস্ত্র না রাখার শর্তও রয়েছে এতে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে রুশ বাহিনী। এই যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। তবে, পুতিনের দাবি, ইউক্রেনের মাটি ব্যবহার করে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে উঠছিল, এই অভিযোগে ওই বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ঘোর সংকটে ইউক্রেন

প্রকাশিত সময় : ০৪:৪৯:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন তার ইতিহাসে অন্যতম কঠিন মুহূর্তের মুখোমুখি, কারণ ট্রাম্প তাঁর প্রস্তাবিত ‘শান্তি পরিকল্পনা’ মেনে নিতে কিয়েভের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। এর অর্থ হবে রাশিয়ার কাছে ভূখণ্ড সমর্পণ করা এবং অন্যান্য বেদনাদায়ক ছাড় দেওয়া। দ্য গার্ডিয়ান।

ট্রাম্প বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার এই চুক্তিতে স্বাক্ষরে জেলেনস্কির জন্য ‘গ্রহণযোগ্য’ সময়সীমা। ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এটিকে ‘আত্মসমর্পণ’ বলে অভিহিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট প্যালেসের বাইরে দেওয়া ১০ মিনিটের গম্ভীর এক বক্তৃতায় জেলেনস্কি বলেন, তাঁর দেশের সামনে একটি অসম্ভব পছন্দ রয়েছে। হয় তাঁরা তাঁদের জাতীয় মর্যাদা বজায় রাখবেন, নয়তো মস্কোর নৃশংস শর্তে সংঘাত শেষ করতে বদ্ধপরিকর মার্কিন প্রশাসনের মতো একটি প্রধান অংশীদারকে হারানোর ঝুঁঁকি নেবেন।

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর চাপ এখন সবচেয়ে বেশি।’ বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রাম্পের ২৮ দফা প্রস্তাবে সম্মত হওয়া অথবা ‘অত্যন্ত কঠিন শীতকালের’ সম্মুখীন হওয়া। রাশিয়া এরই মধ্যে দেশের বেশিরভাগ জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ গরম ও অন্ধকারে রয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন-রাশিয়ান চুক্তিতে সম্মত হলে ইউক্রেন ‘স্বাধীনতা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচার’ হারাতে পারে। ২৮ দফা পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে। ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার এবং দূরপাল্লার অস্ত্র না রাখার শর্তও রয়েছে এতে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে রুশ বাহিনী। এই যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। তবে, পুতিনের দাবি, ইউক্রেনের মাটি ব্যবহার করে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে উঠছিল, এই অভিযোগে ওই বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন তিনি।