পশ্চিমাদের প্রবল চাপ, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করতে চলমান আলোচনা- কোনো কিছুই যে রাশিয়া-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিন্দুমাত্র প্রভাবিত করতে পারেনি সে প্রমাণ বিশ্বের সামনে দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছেন ভøাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদি। এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এ কথা লিখেছে আল জাজিরা।
৩০ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে বৃহস্পতিবার রাতে ভারত সফরে গিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। নয়াদিল্লিতে রাশিয়া-ভারত বার্ষিক দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনে উভয় নেতা তাঁদের সম্পর্ককে স্থিতিশীলতার একটি শক্তিশালী উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে ‘শুকতারার মতো অবিচল’ বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে পুতিন ‘বাহ্যিক চাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ’ গড়ে রাশিয়ার সঙ্গে ‘দ্বিপক্ষীয় বন্ধন আরও দৃঢ়’ করার জন্য মোদির প্রশংসা করেছেন।
ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি পৌঁছেন পুতিন। তাঁকে স্বাগত জানাতে প্রটোকল ভেঙে বিমানবন্দরে নিজে উপস্থিত ছিলেন মোদি, এমনটা সাধারণত দেখা যায় না। রাতের খাবারের জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যাওয়ার সময় দুই নেতা একই গাড়িতে ছিলেন, এটি ‘লিমো কূটনীতি’ নামে পরিচিত। পুতিন প্রায়ই তাঁর লিমোজিন ‘অরাস সেনাট’-এ বসে আলোচনা সারেন। জ্বালানি, কৃষি এবং ওষুধশিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বাণিজ্য ও সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে দুই পক্ষের একাধিক মন্ত্রীদের মধ্যে সমঝোতা স্মারকও বিনিময় হয়েছে।
মোদি বলেন, এসব সমঝোতা দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, যা ভারত-রাশিয়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকল্পের অধীন ২০৩০ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। দুই দেশ ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের উচ্চাকাক্সক্ষী বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এদিন পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া ভারতকে অব্যাহতভাবে জ্বালানি সরবরাহ করতে প্রস্তুত।’ পশ্চিমাদের কাছে এটা নিশ্চিতভাবেই একটি বড় বার্তা। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি ভারতের জন্য ভূরাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। এর জেরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, তেল কেনার মাধ্যমে ভারত ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অর্থায়ন করছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা অব্যাহত রাখায় শাস্তি হিসেবে দেশটির পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভারতীয় পণ্যের ওপর আগে থেকে আরোপ করা ২৫ শতাংশ বাণিজ্য শুল্কের সঙ্গে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্য আমদানিতে মোট শুল্ক এখন ৫০ শতাংশ।

রিপোর্টারের নাম 

























