মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেগম খালেদা জিয়া আর নেই

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

এদিন সকাল ৭টার দিকে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ খবর জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বেগম জিয়ার রূহের মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে তার বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে।

মৃত্যুর সময় বেগম খালেদা জিয়ার শয্যাপাশে ছিলেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় হাসপাতালে আরো উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শার্মিলী রহমান সিঁথি। স্বজনদের মধ্যে ছোট ভাই শামীম এসকান্দার ও তার স্ত্রী, বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮১ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ১৯৮৪ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

খালেদা জিয়া মোট তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বল্পমেয়াদে এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও বহুদলীয় রাজনীতির বিকাশে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

২০০৭ সালের পর থেকে তিনি বিভিন্ন দুর্নীতি মামলার মুখোমুখি হন। ২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি হন। পরবর্তীতে গুরুতর অসুস্থতার কারণে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বেগম খালেদা জিয়া আর নেই

প্রকাশিত সময় : ১১:১৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

এদিন সকাল ৭টার দিকে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ খবর জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বেগম জিয়ার রূহের মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে তার বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে।

মৃত্যুর সময় বেগম খালেদা জিয়ার শয্যাপাশে ছিলেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় হাসপাতালে আরো উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শার্মিলী রহমান সিঁথি। স্বজনদের মধ্যে ছোট ভাই শামীম এসকান্দার ও তার স্ত্রী, বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮১ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ১৯৮৪ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

খালেদা জিয়া মোট তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বল্পমেয়াদে এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও বহুদলীয় রাজনীতির বিকাশে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

২০০৭ সালের পর থেকে তিনি বিভিন্ন দুর্নীতি মামলার মুখোমুখি হন। ২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি হন। পরবর্তীতে গুরুতর অসুস্থতার কারণে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকেন।