মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন করতে বাধা নেই মান্নার

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) ঋণ খেলাপির যে তালিকা প্রদর্শন করেছে, তা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

মান্নার এ সংক্রান্ত আবেদনে শুনানির পর আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালত আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন। খেলাপি হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম সিআইবির তালিকায় প্রদর্শন না করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তার আইনজীবী।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সৈয়দ মামুন মাহবুব ও জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম লিটন।
আদেশের পর আইনজীবী আহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলাটি করা হয়েছিল ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার কারণে। খেরাপি হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নার কম্পানির নাম সিআইবির তালিকায় ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশক্রমে ইসলামী ব্যাংক গত ১০ ডিসেম্বর ঋণ পুনঃতফসিল করে এবং পুনঃতফসিল করার পরও সিআইবির তালিকায় খেলাপি ঋণগ্রহিতা হিসেবে নাম থাকায় আবেদনটি করতে হয়েছিল।

আহসানুল করিম আরো বলেন, ‘আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়ে বলেছেন, যেন মান্না সাহেবকে খেলাপি হিসেবে সিআইবির তালিকায় প্রদর্শন না করা হয়। সুতরাং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রতিদন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নাই। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।’

২০১০ সালে মাহমুদুর রহমান মান্না ও নাজমুল কাদির যৌথভাবে আফাকু কোল্ড স্টোরেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

২০১৩ সাল থেকে রাজনৈতিক বিরোধ ও মান্নার কারাবরণের সুযোগে নাজমুল কাদির এককভাবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং ঋণের টাকা পরিশোধ না করে নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তোলেন। গত জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মান্না পুনরায় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ফিরে পান। ততদিনে সুদে-আসলে কম্পানিটির মোট ঋণের পরিমাণ ৩৬ কোটি ৯ লাখ টাকা। এতে ক্ষতির মুখে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নীতিমালার আওতায় সুদ মওকুফের আবেদন করেন মান্না। গত ৮ অক্টোবর ওই আবেদন মঞ্জুর হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী মোট ঋণের ২ শতাংশ (৭২ লক্ষ টাকা) জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকা জমা দেন মান্না। পর্যাপ্ত টাকা জমা দেওয়ার পরও খেলাপি হিসেবে সিআইবি তালিকায় নাম থাকায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে দিলে তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন। সেই আবেদনে শুনানির পর সিআইবির তালিকা স্থগিত করে আদেশ দেন চেম্বার আদালত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন: জয়া আহসান

নির্বাচন করতে বাধা নেই মান্নার

প্রকাশিত সময় : ০৫:৫৪:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) ঋণ খেলাপির যে তালিকা প্রদর্শন করেছে, তা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

মান্নার এ সংক্রান্ত আবেদনে শুনানির পর আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালত আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন। খেলাপি হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম সিআইবির তালিকায় প্রদর্শন না করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তার আইনজীবী।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সৈয়দ মামুন মাহবুব ও জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম লিটন।
আদেশের পর আইনজীবী আহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলাটি করা হয়েছিল ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার কারণে। খেরাপি হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নার কম্পানির নাম সিআইবির তালিকায় ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশক্রমে ইসলামী ব্যাংক গত ১০ ডিসেম্বর ঋণ পুনঃতফসিল করে এবং পুনঃতফসিল করার পরও সিআইবির তালিকায় খেলাপি ঋণগ্রহিতা হিসেবে নাম থাকায় আবেদনটি করতে হয়েছিল।

আহসানুল করিম আরো বলেন, ‘আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়ে বলেছেন, যেন মান্না সাহেবকে খেলাপি হিসেবে সিআইবির তালিকায় প্রদর্শন না করা হয়। সুতরাং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রতিদন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নাই। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।’

২০১০ সালে মাহমুদুর রহমান মান্না ও নাজমুল কাদির যৌথভাবে আফাকু কোল্ড স্টোরেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

২০১৩ সাল থেকে রাজনৈতিক বিরোধ ও মান্নার কারাবরণের সুযোগে নাজমুল কাদির এককভাবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং ঋণের টাকা পরিশোধ না করে নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তোলেন। গত জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মান্না পুনরায় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ফিরে পান। ততদিনে সুদে-আসলে কম্পানিটির মোট ঋণের পরিমাণ ৩৬ কোটি ৯ লাখ টাকা। এতে ক্ষতির মুখে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নীতিমালার আওতায় সুদ মওকুফের আবেদন করেন মান্না। গত ৮ অক্টোবর ওই আবেদন মঞ্জুর হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী মোট ঋণের ২ শতাংশ (৭২ লক্ষ টাকা) জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকা জমা দেন মান্না। পর্যাপ্ত টাকা জমা দেওয়ার পরও খেলাপি হিসেবে সিআইবি তালিকায় নাম থাকায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে দিলে তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন। সেই আবেদনে শুনানির পর সিআইবির তালিকা স্থগিত করে আদেশ দেন চেম্বার আদালত।